জন্ম সার্টিফিকেটে জালিয়াতি, পৌরসভার বিরুদ্ধে উঠল গুরুতর অভিযোগ

বনগাঁ পৌরসভার নাম আবারও উঠে এল বিতর্কে। এবার অভিযোগ উঠেছে নকল জন্ম সার্টিফিকেট (Birth Certificate) তৈরি করার। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নকল জন্ম সার্টিফিকেট (Birth Certificate)…

Birth Certificate Fraud: Municipality Linked to Passport Scams

বনগাঁ পৌরসভার নাম আবারও উঠে এল বিতর্কে। এবার অভিযোগ উঠেছে নকল জন্ম সার্টিফিকেট (Birth Certificate) তৈরি করার। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নকল জন্ম সার্টিফিকেট (Birth Certificate) বানানোর খবর পাওয়া গেলেও, এবার এই বিতর্কে নাম জড়িয়েছে বনগাঁ পৌরসভার। জন্ম সার্টিফিকেট (Birth Certificate) হল এক গুরুত্বপূর্ণ নথি যা পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য প্রয়োজন। কিন্তু সেই নথি জাল করার অভিযোগেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, কদম্বগাছি পঞ্চায়েত এই নকল জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি করার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে। এর পাশাপাশি বারাসত পৌরসভার নামও উঠে এসেছে। এবার দেখা গেল, বনগাঁ পৌরসভা থেকেও এই ধরনের জালিয়াতি ঘটছে।

সম্প্রতি নকল পাসপোর্ট নিয়ে রাজ্য জুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। পুলিশ এখন এই বিষয়ে বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় ধরপাকড় চালিয়ে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। জাল পাসপোর্টের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

   

পাসপোর্ট (Birth Certificate) ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে নতুন নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। স্টেট ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ থেকে এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে জেলা এবং কমিশনারেটগুলিতে। পুলিশ এখন আরও কড়া নজরদারি চালাচ্ছে এবং পাসপোর্ট তৈরি প্রক্রিয়ায় যে কোনও ধরনের জালিয়াতি রোধ করতে নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে।

বনগাঁ পৌরসভার পৌর প্রধান গোপাল শেঠ এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা হাসপাতাল এবং নার্সিংহোম থেকে যে তালিকা পাই, সেই তালিকা অনুযায়ীই জন্ম সার্টিফিকেট ইস্যু করি। আমাদের মাধ্যমে কোনও নকল জন্ম সার্টিফিকেট (Birth Certificate)  ইস্যু হয় না। তাই ওই সার্টিফিকেটগুলো জাল।”

এছাড়াও, গোপাল শেঠ জানান, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আরও বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। তবে, বিরোধী দলনেতা দেবদাস মণ্ডলও একই দাবি করেন। তিনি বলেন, “বনগাঁ পৌরসভা নির্দোষ। কিন্তু এটি প্রমাণ করা জরুরি।”জন্ম সার্টিফিকেট (Birth Certificate) এক গুরুত্বপূর্ণ নথি, যা বহু ক্ষেত্রে পরিচয় প্রমাণের জন্য ব্যবহার করা হয়। পাসপোর্ট তৈরি থেকে স্কুলে ভর্তি, এমনকি বিভিন্ন সরকারি সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও এটি অপরিহার্য। এই কারণেই নকল জন্ম সার্টিফিকেট (Birth Certificate) তৈরি একটি লাভজনক ব্যবসা হয়ে উঠেছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সতর্কতার উপর এই ধরনের জালিয়াতি রোধ করা অনেকাংশে নির্ভর করে। বিশেষত জন্ম সার্টিফিকেটের (Birth Certificate) মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি তৈরির ক্ষেত্রে আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। নতুন নির্দেশিকার মাধ্যমে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে পুলিশ এবং প্রশাসনকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে বলা হয়েছে।

কীভাবে প্রতিরোধ সম্ভব?
১. ডিজিটালাইজেশন: জন্ম সার্টিফিকেট (Birth Certificate) ডিজিটালাইজ করার মাধ্যমে জালিয়াতি রোধ করা সম্ভব। অনলাইনে যাচাই ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা উচিত।
২. কড়া শাস্তি: যারা এই ধরনের জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তি আরোপ করতে হবে।
৩. প্রশাসনিক নজরদারি: প্রতিটি পৌরসভা এবং পঞ্চায়েতে প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।
৪. সচেতনতা বৃদ্ধি: সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে, যাতে তারা নকল সার্টিফিকেট থেকে দূরে থাকে এবং বৈধ উপায়ে নথি সংগ্রহ করে।

বনগাঁ পৌরসভার বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় এক বড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিয়েছে। যদিও পৌর প্রধান এবং বিরোধী নেতারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তবুও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভূমিকা এবং প্রশাসনিক নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নকল জন্ম সার্টিফিকেট তৈরির এই চক্র রোধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। রাজ্য প্রশাসন এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর যৌথ প্রচেষ্টাই এই সমস্যার সমাধান আনতে পারে।