Bijemool: ‘সর্বহারা’ অর্জুন-তাপসের নজর তৃণমূলে, হেরো বিজেমুলীরা বিধানসভায় যেতে ‘ম্যানেজ করছেন’

বিজেমূল! পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে একটি অতি পরিচিত শব্দ। অর্থাৎ সুযোগ মত যখন যেমন তখন তেমন তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে আনাগোনা করে সাংসদ ও বিধায়ক হয়ে যাওয়ার…

tapas_arjun

বিজেমূল! পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে একটি অতি পরিচিত শব্দ। অর্থাৎ সুযোগ মত যখন যেমন তখন তেমন তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে আনাগোনা করে সাংসদ ও বিধায়ক হয়ে যাওয়ার কৌশল। এই দলবদলু কুশীলবরা বঙ্গজীবনে ‘বিজেমূল’ (Bijemool) বলে চিহ্নিত। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বঙ্গ বিজেপির প্রায় পুরোটাই তৃণমূল ছেড়ে আসা নেতৃত্ব। তাদের কটাক্ষ, তৃণমূল হল বিজেপির সাপ্নাই লাইন।

সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটের পর বঙ্গ বিজেপি একডজন আসন পেলেও ভোট অঙ্কে তাদের অবস্থা আর বিরোধিতার জায়গায় নেই। নির্বাচনের আগে মোদীর নামে সাংসদ হওয়ার লোভে বিজেমুলী হওয়া কুশীলবরা পরাজিত। ঘাসফুল এবং পদ্মফুল শিবিরে এমন অনেক প্রার্থীই রয়েছেন, যারা শেষ মুহূর্তে দলবদল করে লোকসভা ভোটে পরাজিত। ভোট পরবর্তী কোণঠাসা এই বিজেমুলীরা হতাশ ও আতঙ্কিত।

   

অর্জুন সিং: বারাকপুরের বাহুবলী নেতা অর্জুন সিং। উনিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন অর্জুন। জিতে সাংসদ হন। বছর দুয়েক পর বিজেপি ছেড়ে ফিরেছিলেন তৃণমূলে। এবারের লোকসভা ভোটে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। তৃণমূলের প্রার্থী হতে না পেরে বিজেপিতে চলে যান। বিজেপিও ফের বরণ করে নেয় এবং প্রার্থী করে। এবার তিনি হেরেছেন তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিকের কাছে। আপাতত অর্জুন ফের তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন বলে খবর। তিনি বিধানসভায় তৃণমূলের বিধায়ক হতে মরিয়া।

তাপস রায়: বরানগরের প্রাক্তন বিধায়ক, বর্ষীয়ান রাজনীতিক তৃণমূলের দীর্ঘদিনের ভরসাযোগ্য সঙ্গী ছিলেন তাপস রায়। লোকসভা ভোটের আগে তার বাড়িতে ইডি তল্লাশির হয়। দলীয় সতীর্থ সুদীপ বন্দ্যেপাধ্যায় ও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখিয়ে তাপস রায় বিজেপিতে চলে যান। তাপস রায়ের অভিমান ছিল, দলের অন্য নেতাদের বাড়িতে ইডি হানা নিয়ে সরব হলেও তার বেলায় নীরব মমতা। সেই রাগ থেকেই তৃণমূল ছাড়েন তাপস। এমন নেতার উপর ভর করে কলকাতা উত্তর কেন্দ্রে জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল বিজেপি। তাপস রায়কে প্রার্থী করে বিজেপি। বিপক্ষে তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। হারলেন তাপস। সূত্রের খবর তিনি ফের তৃ়ৃণমূলে ফিরতে ‘বন্ধু’কে বলেছেন। রাজনৈতিক মহলে আলোচনা তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ হলেন তাপসের ঘনিষ্ঠ।

রানাঘাটের মুকুটমণি অধিকারী আর রায়গঞ্জের কৃষ্ণ কল্যাণীরও একই হাল। দুজনেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন। দুই বিজেমুলী পরাজিত।

কৃষ্ণ কল্যাণী: উত্তর দিনাজপুরের রাযগঞ্জ বিধানসভা থেকে বিজেপির হয়ে জিতেছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। পরে দল বদলে চলে আসেন তৃণমূলে। রায়গঞ্জ লোকসভায় তাকেই প্রার্থী করে তৃণমূল। লোকসভায় আর যাওয়া হল না কৃষ্ণ কল্যাণীর। তিনি পরাজিত।

মুকুটমণি অধিকারী: লোকসভা ভোট ঘোষণার পরেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন মুকুটমণি অধিকারী। তিনি নদিয়ার রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক ছিলেন। দলের তরফে লোকসভা ভোটের প্রার্থী না হতে পেরে মুকুটমণি চলে যান তৃণমূল। তাকে লুফে নেয় তৃণমূল। রানাঘাট থেকে হেরেছেন তিনি।

বিশ্বজিৎ দাস: উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হন বিশ্বজিৎ দাস। গত বিধানসভা ভোটে বাগদা থেকে বিজেপির বিধায়ক হয়েছিলেন। দলবদল করে আপাতত বিজেমুলী। লোকসভার লড়াইয়ে পরাস্ত তিনি। বিধায়ক পদও আর নেই। তিনিও সর্বহারা!