SIR-এর পর ভবানীপুরের ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডের লিডও হারাবে তৃণমূল, দাবি শুভেন্দুর

Bhabanipur Political Tension

কলকাতা: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন৷ তার আগেই ফের রাজ্যের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে ভবানীপুর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের আসনকে ঘিরে এখন জোর রাজনৈতিক টানাপোড়েন। একদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ‘আউটসাইডার’ মন্তব্য, অন্যদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর চ্যালেঞ্জ৷ দুই শিবিরের পারস্পরিক পাল্টাপাল্টিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দক্ষিণ কলকাতা।

Advertisements

মমতার বিতর্কিত মন্তব্য

সম্প্রতি SIR (Statewide Inclusion-Revision) প্রক্রিয়া ঘিরে ভোটার তালিকার বিতর্কের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ তোলেন, “ভবানীপুরটা পুরো আউটসাইডারদের দিয়ে ভরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা হঠাৎ বাইরে থেকে এসে টাকা খরচ করে বড় বাড়ি তৈরি করছেন, তাঁদের জন্যই জায়গা হারাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ।” একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, “ভবানীপুর আমার নিজের বিধানসভা কেন্দ্র। সারা বাংলার মতোই ভবানীপুর আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।”

মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় তুলেছ। বিশ্লেষকদের মতে, SIR আবহে ভোটার তালিকা পুনর্বিবেচনার সময় এই মন্তব্যের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে, বিশেষ করে কার নাম বাদ যাচ্ছে আর কারা যুক্ত হচ্ছেন, সেই ইঙ্গিত নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য।

শুভেন্দুর বোমা Bhabanipur Political Tension

অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারী ফের ভবানীপুরকে নিশানা করে বলেন, “ভবানীপুর কোনওদিনই তৃণমূলের জন্য নিরাপদ ছিল না, আজও নয়। সংখ্যালঘুর সংখ্যা মাত্র ২০ শতাংশ। তাও চেতলার ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডের ১৭ হাজার ভোটের লিড নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী জিতেছিলেন মাত্র ৭ হাজার ৮০০ ভোটে। SIR-এ নাম বাদ পড়ার পরে সেই লিডও থাকবে না।” শুভেন্দুর কথায়, ভবানীপুর তৃণমূলের সেফ সিট নয়। 

শুভেন্দু আরও দাবি করেন, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণ কলকাতার প্রার্থী হিসাবে বিজেপির তথাগত রায় ওই এলাকায় লিড পেয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “স্বাভাবিকভাবেই এই আসন বিজেপির। এবারও ভবানীপুরে তৃণমূলের মাটি শক্ত নয়।”

Advertisements

বিজেপির এই আক্রমণের জবাবে পাল্টা দিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ভবানীপুর নন্দীগ্রাম নয় যে কারচুপি করে জেতা যাবে। এখানে মানুষ সচেতনভাবে ভোট দেন, নিজের মতেই ভোট দেন।”

তৃণমূল মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদারের কটাক্ষ, “শুভেন্দু অনেক ভবিষ্যতের কথা বলছেন। স্বপ্নের বিরিয়ানিতে ঘি ঢালছেন। কিন্তু এই তথ্য দিয়ে নির্বাচন জেতা যায় না।”

রাজনৈতিক মহলে এখন প্রশ্ন, ভবানীপুর কি আদৌ মুখ্যমন্ত্রীর ‘সেফ সিট’? নাকি SIR বিতর্কের আবহে তৃণমূলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসনেও তৈরি হচ্ছে নতুন অঙ্ক? আপাতত ভবানীপুরের মাটি গরম, রাজ্যের নির্বাচনী তাপমাত্রা তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্রমশই বাড়ছে।