দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ ব্লক ফের একবার শিরোনামে। এবার অভিযোগ—বাংলাদেশি নাগরিকরা (Bangladeshi Infiltrators) অবৈধভাবে ভোটার কার্ড, আধার, প্যান কার্ড তৈরি করে শুধুমাত্র বসবাস করছেন না, তাঁরা সরকারি চাকরিতেও প্রবেশ করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন! এমনই বিস্ফোরক দাবি তুলে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালেন কাকদ্বীপের বাসিন্দা শিবশঙ্কর দাস।
সূত্রের খবর, গত শুক্রবার তিনি পোস্ট ও কুরিয়ারের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে এই বিষয়ে বিস্তারিত অভিযোগপত্র পাঠিয়েছেন। তাঁর দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই কাকদ্বীপ এবং সংলগ্ন এলাকায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। তারা স্থানীয় বাসিন্দা সেজে পাকা পরিচয়পত্র তৈরি করেছে। শুধু তাই নয়, অনেকেই জমি কিনছেন, বসতি গড়ে তুলেছেন। অভিযোগ, নদীর ধারে থাকা ম্যানগ্রোভ বনও কেটে ফেলা হয়েছে বেআইনি বসবাসের জন্য।
সবচেয়ে বড় অভিযোগ, ওই বাংলাদেশিরা সরকারি চাকরিতেও ঢুকে পড়েছেন। বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও পরিষেবায় যুক্ত হয়ে তাঁরা নাগরিক সুবিধা ভোগ করছেন, যার ফলে প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের সুযোগ কমে যাচ্ছে। শিবশঙ্করবাবুর দাবি, অবিলম্বে এই ভুয়ো ভোটারদের চিহ্নিত করে ভোটার তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে আধার এবং প্যান কার্ডও বাতিলের আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
এই অভিযোগ নতুন নয়। কিছুদিন আগেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি তালিকায় দেখা যায়—ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে নিউটন দাস নামে এক ব্যক্তির, যিনি বর্তমানে বাংলাদেশে রয়েছেন। শুধু তাই নয়, গত বছর পদ্মাপাড়ের জুলাই আন্দোলনের একটি সভায় নিউটনের উপস্থিতির ছবি ভাইরাল হলে তা নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়। অভিযোগ ওঠে, কিভাবে এক বাংলাদেশি ভোটার তালিকায় নাম পেতে পারে? পরে তদন্ত করে নির্বাচন কমিশন সেই নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেয়।
এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সেই কারণেই শিবশঙ্করবাবুর আবেদন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক স্তরে বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। যদিও এখনও নির্বাচন কমিশনের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রের মতে, কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা অঞ্চলে বহু বাংলাদেশি বহু বছর ধরে অবৈধভাবে বসবাস করছেন। কিন্তু এবার বিষয়টি সরাসরি সরকারি চাকরির নিরাপত্তা এবং দেশের নাগরিকত্ব প্রশ্নে পৌঁছে যাওয়ায় প্রশাসন অনেক বেশি গুরুত্ব সহকারে দেখতে বাধ্য হচ্ছে।