মমতাকে টক্কর দিয়ে বিসর্জনের শোভাযাত্রায় সেরা পুজোকে ৩ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণা

বালুরঘাট: বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলো দুর্গাপুজোর মঞ্চকে ভোট প্রভাব বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের দুর্গাপুজো এবার সাধারণ উৎসবের চেয়ে রাজনৈতিক…

বালুরঘাট: বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলো দুর্গাপুজোর মঞ্চকে ভোট প্রভাব বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের দুর্গাপুজো এবার সাধারণ উৎসবের চেয়ে রাজনৈতিক মঞ্চে রূপ নিয়েছে। প্রধান দুই দল—তৃণমূল ও বিজেপি—জনমনের কাছে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা প্রমাণের জন্য পুজো কমিটিগুলির মধ্যে আর্থিক পুরস্কারের প্রতিযোগিতা শুরু করেছে।

Advertisements

জেলায় ইতিমধ্যেই পুজো কমিটিগুলিকে অনুদান দেওয়া শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ও শুভেচ্ছা বার্তা যুক্ত ফ্লেক্স শহরের বিভিন্ন স্থানে টাঙানো হয়েছে। তদুপরি, জেলা প্রশাসন “বিশ্ব বাংলা” ব্যানারে জেলার সেরা পুজোগুলিকে পুরস্কৃত করবে। দশমীর পর প্রশাসনিক উদ্যোগে বালুরঘাটে অনুষ্ঠিত হবে কার্নিভাল। মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের উদ্যোগে প্রায় ২৫০টি ক্লাবকে ক্রেতা সুরক্ষা দফতের বিজ্ঞাপন বাবদ চার কোটি টাকার অনুদান দেওয়া হবে।

   

এদিকে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও বালুরঘাট সাংসদ সুকান্ত মজুমদার (Balurghat MP Sukanta Majumdar) দুর্গাপুজোর দশমীর বিসর্জনের শোভাযাত্রায় সেরা পুজো কমিটিকে ৩ লক্ষ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা করেছেন। দ্বিতীয় পুরস্কার ২ লক্ষ এবং তৃতীয় ১ লক্ষ টাকা। এছাড়া আরও দশটি পুজো কমিটিকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।

বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত দক্ষিণ দিনাজপুরের আটটি ব্লক ও উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার ব্লকসহ মোট নয়টি ব্লকে সাংসদ শারদ সম্মান হিসেবে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার যথাক্রমে ৩০ হাজার, ২০ হাজার ও ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।

সুকান্ত মজুমদার বলেন, “যে পুজো কমিটি বাঙালি ও ভারতীয় সংস্কৃতির সঠিক প্রদর্শন ঘটাবে, তাদের পুরস্কৃত করা হবে। আর্থিক সাহায্যের মাধ্যমে পুজো কমিটিগুলি উৎসাহিত হবে এবং সংস্কৃতি পুনরুজ্জীবিত হবে।”

তৃণমূল জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল মন্তব্য করেন, “দেরিতে হলেও সুকান্তবাবু আর্থিক সাহায্যের গুরুত্ব বুঝেছেন। এতদিনে পুজো কমিটিগুলিকে সরকারি সহায়তা দিতে বিজেপি নেতারা বিরোধিতা করতেন। এবার তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পথ অনুসরণ করছেন।”

জেলায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। একপক্ষ মনে করছে, ক্লাবগুলির আর্থিক সাহায্যের বদলে অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়নে অর্থ খরচ করলে সামগ্রিক উন্নয়ন হতো। অন্যদিকে অনেকেই মনে করছেন, আর্থিকভাবে দুর্বল ক্লাব ও কমিটিগুলির জন্য এই সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রতিযোগিতার ফলে আরও সুন্দর ও শিল্পসমৃদ্ধ পুজো সাধারণ মানুষ উপভোগ করবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অনুদান ও পুরস্কারের এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তৃণমূল ও বিজেপি—উভয়েই দক্ষিণ দিনাজপুরে নিজের প্রাসঙ্গিকতা বাড়াতে চাইছে। প্রশাসনিক কার্নিভাল এবং সাংসদের শোভাযাত্রা কতটা সফল হয়, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে স্থানীয় জনতা।