বেলঘরিয়ায় গুলি চালানোর ঘটনায় এবার মুখ খুললেন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং (Arjun Singh)। একের পর এক গুলি চালানোর ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় নানা প্রশ্ন উঠছে। এক তৃণমূল কর্মীসহ দুজন আহত হয়েছেন। গুলি চালানোর পর দুষ্কৃতীরা বাইক ফেলে পালিয়ে যায় চারচাকা গাড়িতে। ঘটনাটি শনিবার বিকেলে বেলঘরিয়ার একটি জনবহুল এলাকায় ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশের তদন্ত শুরু হয়েছে, এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক জমি দখলের লড়াই কিংবা পুরনো শত্রুতার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে কিনা, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, বাইকে করে আসা দুষ্কৃতীরা প্রথমে গুলি চালায়। পরে বাইক ফেলে তারা একটি চারচাকা গাড়িতে পালিয়ে যায়। পুরো ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক আঘাতের বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে।
বেলঘরিয়ায় এই ঘটনা ঘটানোর পর বিজেপি নেতা অর্জুন সিং এই নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘যে বীজটা পুঁতেছেন, সেটাই তো উঠবে।’ তার দাবি, তৃণমূল নেতারা ক্রিমিনালদের পুলিশ প্রটেকশন দিয়ে রেখেছে। তিনি আরও বলেন, ‘এখানে ৪০০ ক্রিমিনালকে সিকিউরিটি দেওয়া হয়েছে। যারা পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াত, তাদের এখন সিকিউরিটি দেওয়া হচ্ছে। পুলিশও কিছু করতে পারছে না।’ অর্জুন সিংয়ের অভিযোগ, তৃণমূলের নেতারা পুলিশকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করছেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশ এখন তৃণমূলের নেতা হয়ে গিয়েছে।’
অর্জুন সিংয়ের দাবি, রাজ্যব্যাপী ক্রিমিনালদের অবাধ চলাফেরা রয়েছে। ‘কামারহাটিতে ক্রিমিনালের ফ্যাক্টরি রয়েছে। মদন মিত্রের ডান এবং বাঁ দিকে ক্রিমিনালরা থাকে। পশ্চিমবঙ্গ ক্রিমিনালের মরুদ্যান হয়ে গিয়েছে।’ এমনকি, তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে আসা লোকজন এখানে ভোটার লিস্টে রয়েছেন। মেটিয়াবুরুজে তো পুরো বাংলাদেশ বসে গিয়েছে।’
অর্জুন সিংয়ের এই অভিযোগের পর অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে কিনা। সেই সঙ্গে ক্রিমিনালদের রাজনীতি ও পুলিশের সম্পর্কের বিষয়টিও আবার সামনে এসেছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে, বেলঘরিয়ার এই ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক জমি দখলের লড়াই বা ব্যক্তিগত শত্রুতা রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গুলির আওয়াজ শুনে লোকজন দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে, তবে এখনও দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এলাকার মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোয় স্থানীয়রা নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। তাদের দাবি, পুলিশ যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এমন ঘটনা আরও বাড়তে পারে। তবে পুলিশ বলছে, তদন্ত দ্রুত এগিয়ে চলছে এবং দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে তারা সব রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এ ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। বিজেপি এবং তৃণমূল নেতারা একে অপরকে দায়ী করছেন। বিজেপি নেতা অর্জুন সিং তৃণমূলকে আক্রমণ করে বলেছেন, ‘তৃণমূল নেতারা ক্রিমিনালদের সিকিউরিটি দিয়ে রেখেছে। পুলিশ এখন কিছুই করতে পারে না।’ অন্যদিকে, তৃণমূল নেতারা দাবি করেছেন, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও সম্পর্ক নেই।
তবে প্রশ্ন উঠছে, কিভাবে বেলঘরিয়ায় এমন ঘটনা ঘটল? সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। পুলিশের দাবি, তারা ঘটনার পেছনে সবকিছু খতিয়ে দেখছে। ঘটনাটি রাজনৈতিক জমি দখল সংক্রান্ত কিনা, কিংবা পুরনো শত্রুতা থেকেই এই হামলা করা হয়েছে, তা তদন্তের পরই পরিষ্কার হবে।
বেলঘরিয়ায় ঘটে যাওয়া এই ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক ও অপরাধী চক্রের সম্পর্ক নিয়ে আরও অনেক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে এলাকাবাসীরা আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। এখন সময়ই বলবে, পুলিশ কি দ্রুত এই দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে পারবে, নাকি আরও কিছু রহস্য সামনে আসবে।