পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের ঝড় তুলেছে বিজেপি নেতা অর্জুন সিংয়ের (Arjun Singh) একটি বিস্ফোরক মন্তব্য। ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং অভিযোগ করেছেন যে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর কাছ থেকে অর্থ উপার্জনের কৌশল শিখেছেন।
তিনি দাবি করেছেন, (Arjun Singh) প্রাক্তন হরিয়ানা মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা তাঁকে বলেছিলেন যে, প্রতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে সোনিয়া গান্ধীর কাছে ৫০০ কোটি টাকা না পাঠালে তিনি তাঁর মুখ্যমন্ত্রী পদ ধরে রাখতে পারবেন না।
অর্জুনের (Arjun Singh) এই বিস্ফোরক মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। অর্জুন সিং, যিনি তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, এই অভিযোগের মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল সররকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন।
তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোনিয়া গান্ধীর কাছ থেকে শিখেছেন কীভাবে অর্থ উপার্জন করতে হয়। অর্জুন সিং আরও বলেন একদিন আমি ভূপিন্দর সিং হুডার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম, তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘যদি আমি প্রতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে সোনিয়া গান্ধীর কাছে ৫০০ কোটি টাকা না পাঠাই, তবে আমি আমার চাকরি ধরে রাখতে পারব না।’”
এই দাবি কংগ্রেস (Arjun Singh) এবং তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অভিযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।এই মন্তব্যের পর তৃণমূল কংগ্রেস তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলেছে “অর্জুন সিংয়ের এই বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।
এটি বিজেপির রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হাস্যকর।” তিনি আরও বলেন, “অর্জুন সিং (Arjun Singh) নিজেই দুর্নীতির অভিযোগে জড়িত। ভাটপাড়া পৌরসভায় তাঁর বিরুদ্ধে ৪ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের তদন্ত চলছে।”
কংগ্রেস পক্ষ থেকেও এই অভিযোগের তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা এই দাবিকে “অপমানজনক এবং মিথ্যা” বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, “আমি কখনো অর্জুন সিংয়ের (Arjun Singh) সঙ্গে এমন কোনো কথা বলিনি। এটি আমার এবং কংগ্রেস পার্টির বিরুদ্ধে মানহানিকর প্রচার। আমরা এই বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেব।”
কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, “বিজেপি সবসময় মিথ্যা অভিযোগ ছড়িয়ে রাজনৈতিক লাভের চেষ্টা করে। সোনিয়া গান্ধী এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ কোনো প্রমাণ ছাড়াই করা হচ্ছে।”এই ঘটনা রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
তবে, এটি বিজেপির তৃণমূল এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ শানানোর কৌশলের অংশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। অর্জুন সিং (Arjun Singh) আগেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। ২০২০ সালে তিনি দাবি করেছিলেন, মমতার নির্দেশে পুলিশ তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। ২০২৪ সালে তিনি অভিযোগ করেন, তাঁকে ধীরে ধীরে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যমে এই মন্তব্য নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একদল ব্যবহারকারী অর্জুন সিংয়ের (Arjun Singh)দাবিকে সমর্থন করে বলেছেন, “এটি দুর্নীতির গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেয়।” অন্যদিকে, তৃণমূল সমর্থকরা এটিকে বিজেপির “নোংরা রাজনীতি” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। একজন নেটিজেন এক্স-এ লিখেছেন, “অর্জুন সিংয়ের মতো বিতর্কিত নেতার কথায় কেউ ভরসা করবে না।
উত্তরবঙ্গের চা শিল্পে ধ্বস, ২৫টি বিক্রির পথে, বন্ধ ১৪টি
তিনি নিজেই দুর্নীতির অভিযোগে জড়িত।”রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই অভিযোগ ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলার রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়ে তুলবে। (Arjun Singh)বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আসছে, এবং এই মন্তব্য তাদের সেই প্রচারের অংশ হতে পারে। তবে, কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া এই অভিযোগ কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এই ঘটনা বাংলা এবং হরিয়ানার রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের সূচনা করেছে।