কলকাতা: অডিও ক্লিপ ঘিরে তীব্র বিতর্ক। থানার আইসি-কে ফোনে গালিগালাজ, ব্যক্তিগত কটাক্ষ—সব মিলিয়ে ফের শিরোনামে অনুব্রত মণ্ডল। চাপ বাড়তেই তৃণমূল বলেছিল, চার ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। অনুব্রত চেয়েছেনও। কিন্তু তারপরেও থামছে না বিতর্ক। বরং আরও চড়ছে গ্রেফতারির সুর।
এই পরিস্থিতিতেই সুর নরম তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, “গালাগালি দেওয়াটা নিঃসন্দেহে খারাপ। কিন্তু সব খারাপ কাজ কি গ্রেফতারযোগ্য? আইনের একটা নিজস্ব ফ্রেমও তো আছে।”
‘বার্তা দেওয়ার জন্য কেউ ধরা পড়ে না’
সংবাদমাধ্যমে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কল্যাণ আরও বলেন, “দল ওকে (অনুব্রত) ক্ষমা চাইতে বলেছিল, ও চেয়েছে। দল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এমন কাজের পাশে নেই। এবার আইন আইনের মতো চলবে। আবেগ দিয়ে আইন চলে না।”
তিনি আরও যুক্ত করেন, “এটা কী ধরনের কেস, সেটা দেখতে হবে। কগনিজেবল না নন-কগনিজেবল? যেখানে সঙ্গে সঙ্গেই জামিন হয়ে যায়, সেখানে তো গ্রেফতারির প্রশ্নই ওঠে না। শুধু জনমানসে বার্তা দেওয়ার জন্য কাউকে ধরা যায় না।”
অভিযোগের গোড়ায় কী? Anubrata Mondal Controversy
সম্প্রতি বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন। তাতে শোনা যায়, অনুব্রত বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে ফোনে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করছেন। শুধু তাই নয়, বাড়ির মহিলা সদস্যদের নিয়েও কুকথা বলে মন্তব্য করেছেন বলেও অভিযোগ। এই ক্লিপ ভাইরাল হতেই রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়।
এরপরই তৃণমূল নেতৃত্ব দ্রুত নির্দেশ দেয়—ক্ষমা চাইতে হবে। পুলিশও অনুব্রতকে হাজিরা দেওয়ার নোটিস পাঠায়।
গ্রেফতারি বনাম আইন
তৃণমূল আপাতত বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলার হাতেই রাখতে চায়। দলের একাংশ মনে করছে, অনুব্রতের আচরণ দুর্ভাগ্যজনক হলেও সেটা ‘গ্রেফতারযোগ্য অপরাধ’ কি না, সেটা আইনি ফ্রেমওয়ার্ক দেখেই বোঝা উচিত।
বিজেপি-সহ বিরোধীরা অবশ্য বিষয়টি সহজে ছাড়ছে না। বীরভূমের চারটি থানায় অনুব্রতের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। জনমানসে ‘কঠোর বার্তা’ দিতে চাইছে বিরোধীরা। কিন্তু তৃণমূল চাইছে—আইনের বাইরে একচুলও না হাঁটতে।