বর্তমানে সন্দীপ ঘোষ নামটা শুনলে প্রথমেই মনে আসে তিনি সেই আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ যাকে সিবিআই দীর্ঘদিন ধরে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে জেরা করেছেন। তবে অবশেষে সেই ঘটনায় না হলেও আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় বর্তমানে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন এই সন্দীপ ঘোষ। কিন্তু এবার তাঁর নাম নিয়ে দেখা গিয়েছে বিপত্তি। এই একই নামের এবং একই পেশায় হওয়ায় এবার সমস্যায় পড়েছেন এক যুবক। তাহলে এবার ব্যাপারটা একটু খোলসা করে বলা যাক।
আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষের সঙ্গে নাম ও পেশা সম্পূর্ণ মিলে গিয়েছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের স্ত্রীরোগ এবং প্রসূতি বিভাগের জুনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার সন্দীপ ঘোষের (Another Sandip Ghosh)। আর তাই এই ঘটনার পর বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয়েছে সন্দীপ ঘোষকে। ঠিক কীরকম সমস্যার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। মুর্শিদাবাদের সন্দীপ জানিয়েছেন, “আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে অনেকের মতো আমিও ফেসবুকের ডিপি থেকে নিজের ছবি সরিয়ে ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ লেখা পোস্টার দিয়েছিলাম।
তার নীচে এসে অনেকেই আমায় ওই সন্দীপ ঘোষ ভেবে নানাবিধ কটু কথা বলে গিয়েছেন। মেসেজেও নানান মন্তব্য করেছেন।” কিন্তু তারপরেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ফেসবুকে নিজের প্রোফাইলে তিনি ডাক্তার সন্দীপ ঘোষের পাশে বন্ধনী দিয়ে ইংরেজিতে লেখেন ‘নট দ্য প্রিন্সিপাল’। এখন ফেসবুকে এই নামেই পরিচিত মুর্শিদাবাদের সন্দীপ ঘোষ। সন্দীপের কথায়, অনেকে মজা করে তাঁর বাবা-মাকেও বলেন, “কী নাম রেখেছ ছেলের!” তবে নাম নিয়ে এই বিড়ম্বনার জন্য তাঁর কোন আক্ষেপ নেই।
সন্দীপ ঘোষ আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রসঙ্গে বলেন, “উনি একটা কলঙ্ক। তার জন্য আমার নিজের নাম নিয়ে মোটেই আমার আক্ষেপ নেই। আমার নাম আমার বাবা-মা রেখেছিলেন। আমি কাজ দিয়ে তা প্রমাণ করব।” সেইসঙ্গে মুর্শিদাবাদের এই ডাক্তার বলেছেন, “মেরুদণ্ড কখনও কারও কাছে বন্ধক দেব না।” তবে নিজের ফেসবুকের নাম বদলেই তিনি ক্ষান্ত হননি। এর পাশাপাশি মিছিলেও সামিল হয়েছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ও পড়ুয়ারা বহরমপুর শহরে মিছিল করেছিলেন। কলকাতার মতো সেই মিছিলেও ছিল প্রতীকী মেরুদণ্ড। সন্দীপ সেখানে গলায় স্টেথোস্কোপে নিয়ে হাতে নিয়ে গেছিলেন প্রতীকী মেরুদণ্ডও। আর তাতে লেখা ‘নট ফর সেল’। মুর্শিদাবাদের সন্দীপের কথায়, এই ঘটনার পর প্রথমে অনেকেই তাঁর নাম, পদবি ও পেশা মিলে যাওয়ায় কটু কথা বলেছিন। কিন্তু এখন এসব অনেকটাই কমেছে। এখন তাঁর মুখে শুধু শেক্সপিয়রের কথা, ‘নামে কী আসে-যায়!’