২ আগস্ট থেকে শুরু ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’, জোরকদমে প্রস্তুতি রাজ্যজুড়ে

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণামতো ২ আগস্ট থেকে গোটা রাজ্যে শুরু হচ্ছে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্মসূচি (Amader Para Amader Samadhan)। ইতিমধ্যেই নবান্নের তরফ থেকে প্রকাশিত…

WB Govt Begins Collecting Data on Employees Eligible for Pending DA Payments

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণামতো ২ আগস্ট থেকে গোটা রাজ্যে শুরু হচ্ছে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্মসূচি (Amader Para Amader Samadhan)। ইতিমধ্যেই নবান্নের তরফ থেকে প্রকাশিত হয়েছে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি)। এই কর্মসূচি চলবে আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। লক্ষ্য একটাই—স্বল্প খরচে, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়, দ্রুত সমস্যার সমাধান করে মানুষের মধ্যে আস্থা বাড়ানো।

নবান্ন জানিয়েছে, পুজোর দিন ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিটি ব্লক, গ্রাম ও শহরাঞ্চলে সমস্যা শোনার জন্য শিবির অনুষ্ঠিত হবে। তিনটি বুথ মিলে একটি সেন্টার হবে, যেখানে স্থানীয়দের সমস্যার খতিয়ান তোলা হবে। মানুষের অভাব-অভিযোগ সরাসরি শোনা হবে এবং অনলাইন মাধ্যমে তা রেজিস্টার করে দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

   

প্রশাসনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এই প্রকল্পে বড় বাজেটের কোনও কাজ করা যাবে না। যেমন: নতুন স্কুল ভবন, আইসিডিএস সেন্টার, সরকারি অফিস নির্মাণের কাজ নিষিদ্ধ। প্রকল্পে ব্যবহৃত জমি হতে হবে সরকারি অথবা নির্দ্বিধায় ব্যবহারের উপযোগী।

নির্ধারিত কাজের তালিকা
এসওপি অনুযায়ী, মোট ১৫ ধরনের কাজ অনুমোদিত হয়েছে, যা তুলনামূলকভাবে কম খরচে ও দ্রুত সময়ে সম্পন্ন করা সম্ভব। তার মধ্যে রয়েছে—

নিকাশি নালা নির্মাণ ও সংস্কার

পানীয় জলের টিউবওয়েল বা পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ

কমিউনিটি টয়লেট নির্মাণ

খেলার মাঠ ও বাউন্ডারি ওয়াল তৈরি

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রং, শৌচাগার মেরামত

Advertisements

পুকুর সংস্কার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

কমিউনিটি শেড ও বাজারে ছাউনি বসানো

রাস্তার আলো বসানো এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ছাদ মেরামত

এই প্রকল্পে বরাদ্দ কাজগুলি মূলত এমনই, যা প্রতিদিনের জীবনযাত্রার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত এবং এলাকাবাসীর সরাসরি উপকারে আসে।

এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে গঠিত হয়েছে একাধিক স্তরের কমিটি ও টাস্ক ফোর্স। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে স্টেট লেভেল অ্যাপেক্স কমিটি, যেখানে রয়েছেন সব দপ্তরের সচিব ও কলকাতা পুরসভার কমিশনার। পাশাপাশি, রাজ্যস্তরের টাস্ক ফোর্সে রয়েছেন ১৩ জন আইএএস ও বিসিএস আধিকারিক। প্রত্যেক জেলার জন্য জেলাশাসকের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে জেলা টাস্ক ফোর্স।

নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যে প্রায় ৮০ হাজারের বেশি বুথ থাকায়, পরিকল্পনা করা হয়েছে মোট ২৭ হাজার ক্যাম্পের। প্রতিটি ক্যাম্প বুথভিত্তিক কমিটির আওতায় থাকবে। কমিটির প্রধান হবেন কোনও সমাজে পরিচিত ও জনপ্রিয় ব্যক্তি। কলকাতা পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিটি বুথ কমিটির জন্য থাকবে নির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, যার মাধ্যমে সরাসরি নোডাল অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যাবে।

সমস্ত সমস্যা চিহ্নিত করে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সেইসব কাজ শেষ করার নির্দেশ জারি হয়েছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্য সরকার যেমন প্রশাসনের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সংযোগ আরও গভীর করতে চায়, তেমনি এলাকাভিত্তিক সমস্যার বাস্তবসম্মত সমাধানের মডেল গড়ে তুলতে চাইছে।