CPIM: সুবক্তা রাজ্য সম্পাদক সেলিমের পিছনে ভাইজানের লম্বা ছায়া

বিধানসভা ভোটের সেই বিপুল জনসমাগমের ব্রিগেড থেকে সংযুক্ত মোর্চার আনুষ্ঠানিক জন্ম ও ভোটের পর নীরবে মৃত্যুর মাঝে আরও একটি ঘটনা ঘটেছিল। হেরে যাওয়ার পর টিভি…

বিধানসভা ভোটের সেই বিপুল জনসমাগমের ব্রিগেড থেকে সংযুক্ত মোর্চার আনুষ্ঠানিক জন্ম ও ভোটের পর নীরবে মৃত্যুর মাঝে আরও একটি ঘটনা ঘটেছিল। হেরে যাওয়ার পর টিভি চ্যানেল ও সংবাদ মাধ্যমে মোর্চা নিয়ে বিস্ফোরক ছিলেন ডাকাবুকো সিপিআইএম (CPIM) নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য। তিনি একরকম ‘জিহাদ’ ঘোষণা করেন।

তন্ময়বাবুর নিশানায় ছিলেন সংযুক্ত মোর্চার কারিগর বলে পরিচিত মহম্মদ সেলিম। নাম না করে কলকাতা ও আগরতলার দুটি প্রথম সারির টিভি চ্যানেলে তন্ময়বাবুর শানিত যুক্তি ছিল মহম্মদ সেলিমের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ছিল, চটজলদি রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর (ভাইজান) সঙ্গে সিপিআইএম শীর্ষ নেতা মহম্মদ সেলিমের আঁতাত ডুবিয়েছে দলকে।

তবে বামফ্রন্ট শূন্য হলেও মোর্চা একটি আসন পায়। ভাইজানের ভাই নৌশাদ সিদ্দিকী বিধায়ক হন। ভোটের পর নিজেকে ফের ধর্মীয় সভায় বেঁধে নিয়েছেন পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী।

রাজনৈতিক মহলে এমন আলোচনা, আব্বাস এত সহজে গুটোবার লোক নন। কংগ্রেস ও আইএসএফের সঙ্গে বামফ্রন্টের জোট করার কারিগর বলে চিহ্নিত মহম্মদ সেলিমের পিছনে মুচকি হাসছেন ভাইজান।

১৯৬৪ সালে সিপিআই ভেঙে সিপিআইএম তৈরির পর সত্তরের দশকের শেষ থেকে টানা সাড়ে তিন দশক রাজ্যের ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট ও তার মূল চালক সিপিআইএম। সেই দল গত বিধানসভার ভোটে সংযুক্ত মোর্চা গঠন করে ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ভাইজানের গোষ্ঠী ও কংগ্রেসের সঙ্গে। ফলাফলে শূন্য হয়ে যায় বামফ্রন্ট। আর গত কয়েকটি নির্বাচনে রাজ্যে বিরোধী দল বিজেপিকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে বামফ্রন্ট। দলীয় বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, বামফ্রন্ট হয়েই ভোটে লড়াই হবে।

অর্থাৎ সিপিআইএমের বৃহত্তম অংশ কোনও তৃতীয় শক্তির সঙ্গে ভোটের জোটে রাজি নয়। পুরনো বামফ্রন্ট জোটই পছন্দের। পুরনিগম ও পুরসভা ভোটের ফল বলছে বিধানসভায় শূন্য হলেও বামফ্রন্ট জোটই টিএমসির মূল প্রতিপক্ষ। সংখ্যালঘু ভোটের বড় অংশ টিএমসির দিকে আছে। বাকি অংশ বামেদের দিকে।

মহম্মদ সেলিমকে রাজ্য সম্পাদকের ভার দিয়ে সিপিআইএম রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে বার্তা দিল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, সেলিম ভাইজান সখ্যতা একেবারে ছায়ার মতো। সিপিআইএম রাজ্য দফতর মুজফ্ফর আহমদ ভবনে ভাইজানের ছায়া আরও দীর্ঘ হলো।