বিহার বিধানসভা নির্বাচনে NDA-র প্রাবল্য জয়—মোট ২০২ আসন দখল—ঘোষণার পরেই রাজনৈতিক তরঙ্গ এসে আছড়ে পড়েছে বাংলায়। দিল্লিতে BJP সদর দফতরে বিজয়-উৎসবের মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্যে আরও উত্তপ্ত হয়েছে দুই রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণ। তাঁর দাবি, “গঙ্গা বিহার থেকেই বয়ে পৌঁছয় বাংলাতে… এবার বাংলা থেকেও জঙ্গলরাজ উৎখাত করবে BJP।”
এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই পালটা কড়া আক্রমণে নামল তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূলের কড়া ভাষায় পালটা: “বাংলা জয় BJP-র কাছে স্বপ্নাতীত”
এ রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা সোজাসাপটা ভাষায় বলেন, “কোনও ভ্রমে থাকবেন না। বাংলা জয় করা BJP-র কাছে স্বপ্নাতীত। আপনারা বাংলার মহিলাদের অসম্মান করেছেন। বকেয়া মেটাচ্ছেন না। কেন্দ্র মহিলাদের একাধিক প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে। বাংলার মেয়েদের প্রতি আপনারা সর্বদাই অসম্মানজনক আচরণ করেছেন।”
তাঁর আরও অভিযোগ, “এ রাজ্যের মানুষ আপনাদের বাংলা-বিরোধী জমিদার বলে মনে করে। এটাই BJP-র চরিত্র। মহিলারাই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে আপনাদের গণতান্ত্রিক জবাব দেবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মোদীর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের এই দ্রুত প্রতিক্রিয়া ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক-লড়াই ইতিমধ্যেই তীব্র হয়ে উঠেছে।
বিহার ভোটে ‘অস্বাভাবিক স্ট্রাইক রেট’: প্রশ্ন তুললেন কুণাল ঘোষ
এদিকে, বিহার নির্বাচনের ফলাফল নিয়েই সরাসরি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, “বিহারে যে ধরনের ফলাফল এসেছে, আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব তার বিশ্লেষণ করছে। এটা বড় কোনও পরিকল্পিত লুট নয় তো?”
কুণাল ঘোষ পরিসংখ্যান টেনে দাবি করেন, BJP লড়েছে ১০১টি আসনে, জিতেছে ৯৫টিতে। স্ট্রাইক রেট ৯৪.৫৯%। নীতিশ কুমারের দলও লড়েছে ১০১টি আসনে, জিতেছে ৮৫টিতে, স্ট্রাইক রেট ৮৪%। তাঁর প্রশ্ন, “এটা কীভাবে সম্ভব?” এই ‘অস্বাভাবিক’ সাফল্যের কারণ খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বাংলা–বিহার রাজনীতির উত্তাপ বাড়ছে
বিহারের ফল প্রকাশের মুহূর্ত থেকেই বিজেপির রাজনৈতিক বার্তা পরিষ্কার—জয় কেবল বিহারে সীমাবদ্ধ নয়, নজর এবার বাংলার দিকে। অন্যদিকে তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া ইঙ্গিত করছে যে ২০২৬-এর যুদ্ধ এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। ভোটের অঙ্ক, নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি, লাফিয়ে ওঠা স্ট্রাইক রেট—সব মিলিয়ে বিহারের রাজনৈতিক ভূমিকম্পের প্রতিটা কম্পন ঢেউ পাঠাচ্ছে বাংলা রাজনীতিতে।


