এক দু বছর নয় টানা ৮৬ বছরের জেলের সাজাপ্রাপ্ত পাকিস্তানি স্নায়ুবিজ্ঞানী ডা. আফিয়া সিদ্দিকীকে মুক্তির দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের (US) টেক্সাসের কোলিভিল শহরের একটি ইহুদি উপাসনালয়ে বেশ কয়েকজনকে পণবন্দি করে রেখেছিল এক ব্যক্তি। মার্কিন পুলিশের বিশেষ জঙ্গি দমন শাখার অভিযানের পর টানটান ঘটনার অবসান।পণবন্দিরা মুক্তি পেয়েছেন। সবাই অক্ষত ও নিরাপদে আছেন।
বিবিসি জানাচ্ছে, ওই ইহুদি উপাসনালয় সিনাগগে প্রার্থনা চলাচল। সেটি ফেসবুকে সরাসরি লাইভ স্ট্রিম করা হচ্ছিল। তাতে এক ক্ষুব্ধ ব্যক্তিকে বলতে দেখা যাচ্ছে যে তিনি কারও ক্ষতি করতে চান না। তবে আফিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। উপসনালয়ের চার ব্যক্তিকে পণবন্দি করা হয়। সিনাগগ থেকে পুলিশের কাছে ফোন করে সাহায্য চাওয়া হয়।অভিযান শুরু করে টেক্সাস পুলিশ।
গোটা ঘটনায় নতুন করে জেলবন্দি আফিয়া সিদ্দিকী (Afia Siddiqui) শিরোনামে। কারণ তার মুক্তির দাবি করে হামলাকারী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৮৬ বছরের জেলের সাজা ভোগ করছেন এই পাকিস্তানি বংশজাত স্নায়ুবিজ্ঞানী আফিয়া।
অভিযোগ গুরুতর। পাক বংশজাত আফিয়া সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে জঙ্গি সংযোগ রয়েছে বলে তদন্তের পর তাকে জেলে পাঠায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। আফিয়ার বিরুদ্ধে আফগানিস্তানে গিয়ে জঙ্গি তৎপরতা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। ওয়াশিংটনের দাবি, আফগান জেলে থাকার সময় মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের বন্দুক কেড়ে খুনের চেষ্টা করে আফিয়া।২০১০ সালে সাতটি অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
আফিয়া সিদ্দিকীর আইনজীবী মাওয়া ইলবিয়াল্লি বলেছেন, যে হামলাকারী সিনাগগে ঢুকেছে তার সঙ্গে আফিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। সে আফিয়ার ভাই নয়। আফিয়া মানুষের বিরুদ্ধে কোনও হিংসত্ব চান না। তার পরিবার এই পণবন্দির ঘটনার নিন্দা করছে।
আফিয়া সিদ্দিকী বিজ্ঞানী থেকে সন্দেহভাজন চরিত্র
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে স্নাতক ও ব্র্যান্ডিয়াস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেছেন আফিয়া সিদ্দিকী। ২০০৮ সালে তাঁকে আফগান পুলিশ গ্রেফতার করে। কী কীরণে আফিয়া আফগানিস্তানে গেছিলেন তা সন্দেহজনক। তৎকালীন আফগান সরকারের দাবি, পাকিস্তানি বংশজাত আফিয়ার কাছে বড় ধরনের হামলার একটি সূত্র মিলেছিল।
গ্রেফতার করার পর মার্কিন সেনারা যখন তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন, তখন এক সেনার রাইফেল কেড়ে নিয়ে আফিয়া গুলি ছোড়েন।
বিজ্ঞানী আফিয়া সিদ্দিকীকে কারাদণ্ড দেওয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই বিক্ষোভ হয়েছে। বিভিন্ন দেশেও বিক্ষোভ হয়। আফিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ।
এর পর ২০১৩ সালে আলজেরিয়ায় পণবন্দি করা হয় বহুজনকে। সেই হামলাকারীরাও আফিয়া সিদ্দিকীর মুক্তির বিনিময়ে আটকদের ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল।