শেষপর্যন্ত লোকসভার স্পিকার পদে নির্বাচন হচ্ছেই। বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা ভেস্তে গেল শাসক জোট এনডিএ-র। তারপরই এনডিএ শিবির ওম বিড়লাতেই ভরসা দেখিয়েছে। গতবারের স্পিকারকেই ফের ওই পদে বসাতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। কিন্তু কেন ওই বৈঠক ভেস্তে গেল?
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব রঞ্জন সিংয়ের দাবি, এনডিএ প্রার্থী ওম বিড়লাকে সমর্থন করার জন্য দুই বিরোধী নেতা রাজনাথ সিংয়ের সামনে পূর্ব শর্ত দিয়েছিলেন। যা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি শাসক-বিরোধী শিবির। তারপরই আলোচনা ভেঙে যায়।
রাজীব রঞ্জন সিংয়ের কথায়, কংগ্রেস নেতা বেণুগোপাল এবং টি আর বালু আশ্বাস দেন যে, সরকার পক্ষ বিরোধীদের ডেপুটি স্পিকার পদ দিলেই তারা এনডিএ প্রার্থীকে সমর্থন করবে।
ইতিহাসের দোরগোড়ায় ওম বিড়লা, জিতলেই গড়বেন নজির!
মন্ত্রী রাজীব রঞ্জন সিং বলেছেন, ‘স্পিকারের পদ সম্পর্কে কথা বলতে কে সি বেণুগোপাল এবং টিআর বালু এসেছিলেন। তাঁরা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী এনডিএ পক্ষ থেকে লোকসভার স্পিকার প্রার্থীর বিষয়ে অবহিত করেন এবং সমর্থন চান। বেণুগোপাল তখন ডেপুটি স্পিকারের নাম তোলেন। দাবি করেন স্পিকার বিরোধী শিবির সমর্থন করলে ডেপুটি স্পিকার বিরোধীদেরই পাওয়া উচিত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জবাবে বলেছিলেন যে, যখন সেই নির্বাচন আসবে তখন আমরা ফের আলোচনা করব। কিন্তু ওঁরা নিজেদের শর্তে অনড় ছিলেন।’
রাজীব রঞ্জন সিং বিরোধীদের শর্ত এবং চাপের রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন। বলেন, ‘গণতন্ত্রে এ ধরণের বিষয় কাজ করে না’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ পীযূষ গোয়েলের দাবি, কে সি বেণুগোপাল এবং টি আর বালু শর্তাদি নির্দেশ করতে চেয়েছিলেন।
সুকান্তর জায়গায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি হচ্ছেন দিলীপ? মুখ খুললেন খোদ দিলীপ
পীযূষ গোয়েলের কথায়, ‘সকালে রাজনাথ সিং মল্লিকার্জুন খার্গের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন। তিনি ব্যস্ত ছিলেন তাই তিনি বলেছিলেন যে কে সি বেণুগোপাল কথা বলবেন। কিন্তু টি আর বালু এবং কে সি বেণুগোপালের সঙ্গে কথা বলার পরে মনে হয়েছে যে, শর্তাবলী নির্ধারণের সেই পুরানো মানসিকতা ওঁদের বজায় ছিল। তাদের শর্ত ছিল, প্রথমে লোকসভার ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করতে হবে, তারপরই স্পিকারের পক্ষে সমর্থন দেওয়া হবে।’
গোয়েলের সংযোজন, ‘স্পিকার কোনও দল বা বিরোধী দলের নয়। সর্বসম্মতভাবে স্পিকার নির্বাচন করার ঐতিহ্য ছিল। একইভাবে, ডেপুটি স্পিকারও কোনও দল বা গোষ্ঠীর অন্তর্গত নয়। তিনি সংসদের অন্তর্ভুক্ত। তাই এমন শর্ত থাকা উচিত নয় যে শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট দলের একজন ব্যক্তিকেই ডেপুটি স্পিকার করতে হবে, এসব লোকসভার ঐতিহ্যের সঙ্গে খাপ খায় না।’
এদিকে, ‘ইন্ডিয়া’ জোটের মনোনীত কে সুরেশ বলেছেন যে, কংগ্রেস সরকারের প্রতিক্রিয়ার জন্য সকাল ১১.৫০ পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিল। তাঁর কথায়,’আমি মনোনয়ন দাখিল করেছি। এটা দলের সিদ্ধান্ত, আমার নয়। লোকসভায় এটাই রেওয়াজ যে, স্পিকার হবেন ক্ষমতাসীন দলের আর ডেপুটি স্পিকার হবেন বিরোধী দলের। ডেপুটি স্পিকার আমাদের অধিকার। কিন্তু ওঁরা আমাদের ওই পদ দিতে রাজি নয়। সকাল ১১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত আমরা সরকারের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় ছিলাম, কিন্তু তারা কোনও সাড়া দেয়নি, তাই আমরা মনোনয়ন জমা দিয়েছি।’