কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর সন্ধ্যেবেলা কাঁথির শান্তিকুঞ্জের বাড়িতে উপস্থিত হলেন রাজ্য বিজেপির (BJP ) সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)৷ দেখা করলেন অধিকারী পরিবারের বর্ষীয়ান সদস্য শিশির অধিকারী ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে। শান্তিকুঞ্জে সুকান্তর পা পড়তেই মমতাকে তীব্র আক্রমণে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
এদিন তিনি বলেন, সুকান্ত মজুমদারের শান্তিকুঞ্জ আসার পিছনে রাজনীতি খোঁজার কোন প্রয়োজন নেই। উনি আমার পিতৃদেবকে এবং আমার মাতৃদেবীকে সৌজন্য বিনিময় করতে এসেছেন। উনি ওনাদের পুত্রের মতো। মমতা ব্যানার্জী যে বাড়ি থেকে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, এই বাড়িতে ছিলেন উনি। ২০০৮ এর ১৪ই মার্চ এই বাড়ির ছাদে ছিলেন। নন্দীগ্রাম না হলে দিদি থেকে দিদিমা হতেন মুখ্যমন্ত্রী হতেন না। সেই মমতা ব্যানার্জি এই বাড়িতে সিআইডি, পুলিশ, সামনে সিসিটিভি, পিছনে সিসিটিভি।
একইসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, ভাইপোর কোম্পানির ভাটাংশুরা বয়স্ক মানুষগুলোর সামনে মিছিল করেছে৷ ১ বছরের বেশী সময় ধরে বিব্রত করেছে৷ সুকান্তবাবুর ইচ্ছে ছিল আসবেন, তাই এসেছেন। একইসঙ্গে সৌমেন্দু অধিকারীকে দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যা করছেন এর দণ্ডসুদ সহ ফেরত পাবেন।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগদান করেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপর অমিত শাহের সভায় দেখা গিয়েছিল শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারীকে। তখন থেকেই শিশির অধিকারীর বিজেপিতে যোগদান ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছিল। শোনা যাচ্ছিল, এবার শিশির অধিকারীর বিজেপিতে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু এরপর বহুবার বিজেপির হয়ে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন শিশির অধিকারী। কখনও পুরসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে প্রচার করেছেন, আবার তৃণমূলের রীতি ভেঙে রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন দিল্লিতে গিয়ে।
তবে শিশির অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে বারবার সরব হয়েছে তৃণমূল। বারবার স্পিকারের দ্বারস্থ হয়েছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়রা। রাজনৈতিক কাদা ছোঁড়াছুঁড়িতেও বারবার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকেও। বারবার তৃণমূলের থেকেও দূরত্ব রেখেছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবীদ শিশির অধিকারী।
যদিও বিজেপি নেতাদের শান্তিকুঞ্জ ভ্রমণ নতুন কিছু নয়। এর আগে শিশির অধিকারীর সঙ্গে দেখা করতে উপস্থিত হয়েছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায় ও দিলীপ ঘোষ। বঙ্গ রাজনীতিতে বর্ষীয়ান শিশির অধিকারীর সঙ্গে বিজেপির প্রথম সারীর সাক্ষাত শুধুমাত্র সৌজন্য বিনিময়? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।