রাত বাড়ছে আরও ঘোরালো পরিস্থিতি ইউক্রেনে (Ukraine War)। এবার সেই ভয়াবহ পরমাণু কেন্দ্র বিস্ফোরণ স্থল চেরনোবিল দখল নিতে রুশ সেনা তেড়েফুঁড়ে নামল। রাশিয়ার সেনা বাহিনী ইউক্রেনের জমিতে থাকা চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দখলের চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রুশ বাহিনী ও ইউক্রেনের সেনাদের মধ্যে লড়াই চলছে।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। বিশ্ব জুড়ে আলোড়ন। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ শহরের পতন আসন্ন বলেই মনে করা হচ্ছে। ইউক্রেন সেনা প্রতিরোধ করছে। তবে পরিত্যক্ত পরমাণু কেন্দ্র চেরনোবিল ফের আলোচনা। কারণ এই এলাকায় সংঘর্ষ প্রবল।
কেন চেরনোবিল আলোচিত?
পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়নের সময় এই চেরনোবিল ছিল বিশ্বের অন্যতম পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র।চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট পারমাণবিক চুল্লীর সংখ্যা ছিল ৪টি। ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল ইউক্রেন ও বেলারুশ সীমান্তে অবস্থিত পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে বিস্ফোরণ হয়।
ভয়াবহ সেই পারমাণবিক বিপর্যয়ের পর আগুন ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। পারমাণবিক বিক্রিয়া প্রায় ১ কিলোমিটার উঁচু অবধি ছড়িয়ে পড়েছিল এবং প্রচুর পারমাণবিক ধুলো পরিবেশের ব্যাপক দূষণ ঘটিয়েছিল। গবেষণায় উঠে আসে সে সময় পরিবেশে যে পরিমাণে পারমাণবিক পদার্থ নিক্ষিপ্ত হয়েছিল তা ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিক্ষিপ্ত প্রায় ৫০০টি পরমাণু বোমার সমান।
চেরনোবিল পারমাণিক দুর্ঘটনার ফলে বিষাক্ত মেঘ ততকালীন সোভিয়েতের ইউক্রেন, বেলারুশিয়া, রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে স্ক্যান্ডিনেভিয়াতে, গ্রেট ব্রিটেনে। পূর্ব আমেরিকার ওপর পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছিল। দুর্ঘটনার কারণে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ছিল ছয় লক্ষ শিশু। ক্ষতির পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন ডলারের সমান। বর্তমানে চেরনোবিল শহরটি পরিত্যক্ত এবং প্রায় ৫০ মাইল এলাকা জুড়ে বলতে গেলে কেউ বাস করে না।