UK Politics: রক্ষণশীল মানেই নারী বিদ্বেষ? ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টি হেঁটেছে উল্টো পথে

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: রক্ষণশীল সমাজের অন্দরমহল আর বাহিরমহলের চৌকাঠ পার করা মানে এক গৃহবিপ্লব! সেই বিপ্লবের কথা কুন্দনন্দিনী- ‘বিষবৃক্ষ’, ‘ঘরেবাইরে’- বিমলা, ‘পথের দাবী’-ভারতী চরিত্রে মিলবে। আর…

প্রসেনজিৎ চৌধুরী:
রক্ষণশীল সমাজের অন্দরমহল আর বাহিরমহলের চৌকাঠ পার করা মানে এক গৃহবিপ্লব! সেই বিপ্লবের কথা কুন্দনন্দিনী- ‘বিষবৃক্ষ’, ‘ঘরেবাইরে’- বিমলা, ‘পথের দাবী’-ভারতী চরিত্রে মিলবে। আর বাস্তবে ছিলেন নারী শিক্ষা প্রচারক বেগম রোকেয়া। রক্ষণশীলতার আরও সুপ্রাচীন সময়ে শাসক হিসেবে নারী তলোয়ারের ঝলক, চাবুকের আওয়াজও ইতিহাসের পাতায় বেশ স্পষ্ট শোনা যায়। সে ‘ভারতেশ্বরী’ সুলতানা রিজিয়া হোন বা ‘ইংল্যান্ডশ্বরী’ প্রথম ও দ্বিতীয় এলিজাবেথ। এমন আরও বহু নাম আছে স্বদেশে, বিদেশে।

আসলে রক্ষণশীলতার সামাজিক যে রীতিগুলি এদেশে প্রচলিত তা ইউরোপেও আছে। তবে ব্রিটিশ সংসদীয় রাজনীতির সালতামামি ঘাঁটলে ‘রক্ষণশীল’ (conservative) শব্দটির কিছু ব্যতিক্রমী কথা মিলবে। যেমন ব্রিটেনের পার্লামেন্টে রক্ষণশীল দল অর্থাৎ conservative party থেকেই তিনজন নারী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। বিপরীত দিকে প্রগতিশীল বলে দাবি করা লেবার পার্টি একজন নারী প্রধানমন্ত্রীর মুখ এখনও আনতে পারেনি। তবে তাদের ভবিষ্যৎ অন্য কথা বলবে।

১৭০৭ সাল থেকে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট শুরু। আর ২০২২ সাল পর্যন্ত এই সংসদীয় রীতিনীতির ৩১৪ বছরের ইতিহাসে তিনজন নারী প্রধানমন্ত্রী ব্রিটেন শাসন করেছেন। কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টির পুরুষ প্রধানমন্ত্রীরদের ভিড়ে তিন নারী ছড়ি ঘুরিয়েছেন। আর সবার উপরে দুই রানির হাতে ব্রিটিশরা নিজেদের পৌরুষ সঁপে দিয়েছিল।

কনজারভেটিভ পার্টি বা রক্ষণশীল দলটির অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে ব্রিটেনের বিধিবদ্ধ আইন কঠোরভাবে অনুসরণ, ব্রিটিশ শাসনের রক্ষণ ও বিস্তার ঘটানো এবং জনগণের অবস্থার উন্নতি সাধন। সে অর্থে প্রচলিত রক্ষণশীল তত্ত্ব থেকে কিছুটা আলাদা। তবে নামের কারনেই যেন ব্রিটিশ রক্ষণশীল সমাজে দলটির আধিপত্য বেশি।

ব্রিটেনের গণতান্ত্রিক পথে কনজারভেটিভ পার্টির তিন নারী প্রধানমন্ত্রী হলেন, ‘লৌহমানবী’ মার্গারেট থ্যাচার, থেরেসা মে ও লিজ ট্রাস।

রক্ষণশীল দলের হয়ে সংসদীয় রাজনীতিতে যে উত্থান হয়েছিল মার্গারেট থ্যাচারের তা বিশ্ব ইতিহাসে নজির। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১৯৭৯-১৯৯০ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।

এর পর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে আসেন রক্ষণশীল দলেরই থেরেসা মে। তিনি ২০১৬-২০১৯ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন লিজ ট্রাস। তিনিও কনজারভেটিভ পার্টির নেত্রী। মাত্র ৪৫ দিনের প্রধানমন্ত্রীত্ব করে তিনিও নজির গড়ে বিদায় নিলেন।

ব্রিটেনের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতার পরিবর্তন হতে পারে এমনই ইঙ্গিত আসতে শুরু করেছে। দৌড়ে প্রগতিশীল লেবার পার্টি। তাদের নারী মুখ নিয়ে চর্চা চলছে।

এসবের মাঝে উহ্য হয়ে থাকে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে প্রথম নারী সাংসদ কনস্ট্যান্স মার্কিভিজের কথা। আইরিশ মার্কিভিজ ছিলেন সমাজতান্ত্রিক নীতিতে বিশ্বাসী ও বিপ্লবী। তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য হয়েছিলেন ১৯২১ সালে। ছিলেন লিবারেল পার্টি সরকারের শ্রমমন্ত্রী।