TMC: ঘাসফুলে ‘কানন’, ফুটছে মুকুল, মমতার ভরসা পুরনোরা

পঞ্চায়েত ভোট সেমিফাইনাল হলেও লোকসভা নির্বাচন ফাইনাল স্টেজ৷ একাধিক দুর্নীতিতে দল যেভাবে ডুবেছে, তাতে ইমেজ ফেরাতে একমাত্র ভরসা লোকসভা নির্বাচনে দলের জয়লাভ। সেটা করাটা বেশ…

Sovan Chatterjee Mamata Banerjee

পঞ্চায়েত ভোট সেমিফাইনাল হলেও লোকসভা নির্বাচন ফাইনাল স্টেজ৷ একাধিক দুর্নীতিতে দল যেভাবে ডুবেছে, তাতে ইমেজ ফেরাতে একমাত্র ভরসা লোকসভা নির্বাচনে দলের জয়লাভ। সেটা করাটা বেশ কষ্টসাধ্য কাজ। এমত অবস্থায় মমতার ভরসা পুরাতনরাই। মূলত দুই নাম নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতিতে চর্চা শুরু হয়েছে। তা হল একসময় তৃণমূলের (TMC) সেকেণ্ড ইন কম্যান্ড মুকুল রায় (Mukul Roy) এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) পছন্দের কানন ওরফে শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee)৷

লক্ষ্মীপুজোর দিনে বিজেপি রাজ্য সভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বললেন শান্তিকুঞ্জ না থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হতেন না। এরপরেই পাল্টা যুক্তি দিতে মাঠে নামলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বললেন, রাজনৈতিক স্বার্থে শুভেন্দু ইতিহাস বিকৃত করছেন। সত্যের সমর্থনে চুপ থাকতে পারবেন না। একইসঙ্গে শুভেন্দুকে মনে করালেন তার উত্থান মমতার হাত ধরেই।

তৃণমূলের সঙ্গে গোঁসা করেই বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। রাজনীতিতে তার বদলের সিদ্ধান্ত নিয়ে হৈ হৈ পড়ে গিয়েছিল। কলকাতার প্রাক্তনকে নিয়ে বহু পরিকল্পনা করেছিলেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু সব জল্পনাতেই জল ঢেলে দিয়েছিলেন শোভন। বরং রাজনীতির আঙিনা থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলেন৷ কিন্তু রাজনৈতিকভাবে অচেতন হয়ে পড়েননি। সোমবার সকালে তাকে নিয়ে যখন জোর চর্চা, তখন তৃণমূলের অন্দরে জোর চর্চা শুরু হল মুকুল রায়কে নিয়েও।

সূত্রের খবর, দ্বাদশীর দিনে বিজয়া দশমী করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘন্টাখানেক সময় কাটালেন মুকল। একসময়ের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড মুকুল রায় বিজেপিতে গিয়ে তৃণমূলের ঘুম উড়িয়েছিলেন৷ কিন্তু শুভেন্দুকে বিরোধী দলনেতার তকমা দিতেই দলবদলের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তৃণমূলে ফিরে দীর্ঘ সময় মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন৷ দল যখন দুর্নীতিতে সুরা পান করে নেশাগ্রস্ত তখন মমতার ভরসা সেই মুকুল।

শোনা যাচ্ছে, দীর্ঘ সময় ধরে বিদেশে রয়েছেন তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার অনুপস্থিতিতে দল পরিচালনা ও মুকুলকে নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা-মুকুল বৈঠকের পরেই তার সঙ্গে দেখা করেছেন উত্তর ২৪ পরগণার দুই মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মমতার নির্দেশে জেলায় খানিকটা হাওয়া বদল হয়েছে তা বোঝাই যাচ্ছে। তার ওপর বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারী সিবিআইয়ের স্ক্যানারে যেতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিকল্প পথ বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমনটাই তৃণমূল সূত্রে খবর।

তবে পুরাতনের ওপর বরাবর ভরসা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম দুর্নীতিতে জড়াতেই বড় সিদ্ধান্তের পথে হাঁটলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আগামী দিনে পুরাতন ধাঁচেই ফিরবে তৃণমূল, প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে।