world war 3: সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠক ভেস্তে যেতেই তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সম্ভাবনা

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে পাঁচ দিন ধরে যুদ্ধ চলছে। পরিণতিতে দুই দেশেরই ক্ষয়ক্ষতি ক্রমশই বাড়ছে। এই যুদ্ধের আবহেই সোমবার দুপুরে বেলারুশে বৈঠকে বসে রাশিয়া ও…

world war 3: সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠক ভেস্তে যেতেই তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সম্ভাবনা

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে পাঁচ দিন ধরে যুদ্ধ চলছে। পরিণতিতে দুই দেশেরই ক্ষয়ক্ষতি ক্রমশই বাড়ছে। এই যুদ্ধের আবহেই সোমবার দুপুরে বেলারুশে বৈঠকে বসে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে এই বৈঠক চলে। কিন্তু ২১০ মিনিট ধরে চলা বৈঠকর পরও আদৌ কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি দুই দেশ। 

এদিনের বৈঠকে কিয়েভের মূল দাবি ছিল, রাশিয়াকে অবিলম্বে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। বন্ধ করতে হবে আগ্রাসন। কিন্তু রাশিয়া পত্রপাঠ ইউক্রেনের এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। এ ঘটনার জেরে বলা যেতেই পারে, বেলারুশে হওয়া এই বৈঠক এদিন কার্যত নিষ্ফলাই রইল। দু’ দেশের তিনজন করে প্রতিনিধি এদিনের বৈঠকে যোগ দেন। ইউক্রেনের প্রতিনিধিত্ব করেন সে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওলেস্কি রেজনিকভ। ছিলেন শাসক দলের প্রধান ডেভিড আরাখামিও। ইউক্রেনের মূল লক্ষ্য ছিল অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করা। এদিনের বৈঠকে রাশিয়াকে অবিলম্বে সেনা প্রত্যাহার করার আর্জি জানায় কিয়েভ। 

রাশিয়া চাইছে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটে ইউক্রেন যেন যোগ না দেয়। এদিনের বৈঠকে রাশিয়া অবশ্য ইউক্রেনের সেনা প্রত্যাহারের প্রস্তাব সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে। ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে এক বিবৃতিতে রাশিয়ার এই অবস্থানের কথা জানানো হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই রাশিয়ার এই অনড় অবস্থানে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠল বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। এরই মধ্যে আমেরিকার জারি করা আর্থিক নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রবল সঙ্কটে পড়েছে রাশিয়া। বিশেষ করে ‘সুইফট’ ব্যবস্থা থেকে বাদ পড়ে রাশিয়া তীব্র আর্থিক সমস্যায় পড়েছে। প্রত্যাঘাত করতে রাশিয়া এদিন ৩৬টি দেশের জন্য তাদের আকাশসীমা নিষিদ্ধ করেছে।

world war 3: সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠক ভেস্তে যেতেই তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সম্ভাবনা

পাশাপাশি তারা ইউক্রেনে নতুন করে অতিরিক্ত সেনা পাঠাচ্ছে। রুশ সেনার দাবি তারা ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের আরও দুটি ছোট শহর দখল করেছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইতিমধ্যেই পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র বিভাগকে তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। পুতিনের এই নির্দেশে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাশিয়া এদিন দাবি করেছে, ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিস্থিতি জটিল করছে। তারা সাধারণ মানুষকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। 

Advertisements

অন্যদিকে ন্যাটো বাহিনী এবার সরাসরি ইউক্রেনকে সাহায্য করার কথা জানিয়েছে। ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টোলেনবার্গ জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এয়ার ডিফেন্স ক্ষেপণাস্ত্র, অ্যান্টি ট্যাঙ্ক-সহ সব ধরনের অস্ত্র দেওয়া হবে। একইসঙ্গে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির ভূমিকার প্রশংসা করেন জেন্স। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়ার কথা বলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঘন্টা বাজিয়ে দিয়েছেন ন্যাটো প্রধান। 

যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে লড়াইয়ের পারদ ক্রমশই চড়ছে। ইউক্রেন এদিন দাবি করেছে, রাশিয়ার হামলায় এখনও পর্যন্ত তাদের দেশে প্রায় ৩৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ১৪টি শিশু। মৃতদের বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ। সোমবার খারকভে রাশিয়ার হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার সহকারী বিদেশ মন্ত্রী আন্দ্রেই ফেদরোভ বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন ২ মার্চের মধ্যেই ইউক্রেন অভিযান শেষ করতে চান। এব্যাপারে তিনি সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। রাশিয়ার পক্ষ থেকে কিয়েভে বসবাসকারী সাধারণ নাগরিককে অবিলম্বে অন্যত্র সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যদিকে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এক ভিডিওবার্তায় দেশবাসীকে বলেছেন, আগামী ২৪ ঘন্টা তাঁদের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় রাশিয়ায় বসবাসকারী মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে দেশে ফেরার নির্দেশ জারি করল জো বাইডেন সরকার। পাশাপাশি রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশ বেলারুশে মার্কিন দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোয়াইট হাউস। বেলারুশে রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র মজুত রাখতে পারে, এই আশঙ্কায় সে দেশের রাজধানী মিনস্কে মার্কিন দূতাবাস বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাইডেন সরকার। চলতি পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াচ্ছে ভারত। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে ত্রাণ সামগ্রী ও ওষুধ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার।