স্নান ছাড়াই ১৮ দিন, ফেরার আগে মহাকাশে চুল কেটে নজির গড়লেন শুভাংশু

কলকাতা: ইতিহাস গড়লেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ১৮ দিনের মিশন শেষে মঙ্গলবার তিনি সফলভাবে পৃথিবীতে ফিরে এলেন Axiom-4 অভিযানের বাকি তিন মহাকাশচারীর…

Shubhanshu Shukla Space Haircut

কলকাতা: ইতিহাস গড়লেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ১৮ দিনের মিশন শেষে মঙ্গলবার তিনি সফলভাবে পৃথিবীতে ফিরে এলেন Axiom-4 অভিযানের বাকি তিন মহাকাশচারীর সঙ্গে। কিন্তু এই প্রত্যাবর্তনের ঠিক আগেই মহাকাশেই এক ব্যতিক্রমী কাজ করে ফেললেন শুভাংশু, হয়ে উঠলেন প্রথম ভারতীয়, যিনি মহাকাশে চুল কাটালেন (Shubhanshu Shukla Space Haircut)।

যখন ISS-এ চুল কাটাই ইতিহাস

পৃথিবীতে এ ঘটনা সাধারণ হলেও, মহাকাশে তা বিরল এবং প্রযুক্তিনির্ভর। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে চুল কাটার কোনও ছাঁট-চেয়ার বা শ্যাম্পু ভাসছে না বাতাসে। এখানে কাজ হয় অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে। নাসার তৈরি বিশেষ ভ্যাকুয়াম ক্লিপার দিয়ে চুল কাটা হয়, যাতে কাটা চুল ভেসে না বেড়ায় এবং সেগুলি সাথে সাথে টেনে নেয় যন্ত্রটি।

   

এই ভ্যাকুয়াম ক্লিপার দিয়েই শুভাংশুর চুল কেটেছেন আমেরিকান মহাকাশচারী নিকোল আয়ার্স। মজা করে শুভাংশু বলেও ফেলেন, “পৃথিবীতে ফিরে গিয়ে চুল কাটার দোকান খুললেও চলে!” যদিও, নিজে কেমন কেটেছেন সেটা জানতে এখনও বাকিরা কিছু বলেননি বলেই তাঁর রসিকতা।

দাড়িও কামিয়েছেন মহাকাশে

প্রথম দিকে শুভাংশুর মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি দেখা গেলেও পরে Earth Observation জানলা দিয়ে ছবি শেয়ার করার সময় দেখা যায়, নিখুঁতভাবে শেভ করে নিয়েছেন তিনি। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির এই ধাপটিও মহাকাশ অভিযানের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দেখা হয়।

১৮ দিন স্নান ছাড়া জীবন

ISS-এ কোনও শাওয়ার নেই, নেই বাথটাবও। জলের পরিমাণ সীমিত হওয়ায় নভোচারীরা স্নানের বদলে ব্যবহার করেন ভেজা তোয়ালে, ওয়েট ও ড্রাই ওয়াইপস। ইউরোপীয় মহাকাশচারী থমাস পেসকেটের ভাষায়, “সাবান ও অল্প জল মিশিয়ে তোয়ালে দিয়ে গা হাত পা মুছে নেওয়াই আমাদের স্নান।”

Advertisements

তবে চুল কাটা, দাড়ি কামানো বা পরিষ্কার থাকা কেবল সৌন্দর্যের খাতিরে নয়— ISS থেকে পৃথিবীতে ফিরে আসার আগে, স্প্ল্যাশডাউনের আগে, মহাকাশচারীদের মানসিক ও শারীরিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই এই স্বাস্থ্যবিধিগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ভবিষ্যতের প্রস্তুতি আজ থেকেই

মহাকাশে শুভাংশুর এই সাফল্য ভারতের ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানের মাইলফলক। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে জৈব গবেষণা, প্রতিটি পদক্ষেপই আজ আমাদের নিয়ে যাচ্ছে আরও বড় অভিযানের দিকে।