রুশ সেনার এবার লক্ষ্য ইউক্রেনের তৃতীয় পারমাণবিক কেন্দ্র। আশঙ্কাজনক এই খবর সম্প্রতি প্রকাশ করেছে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। মার্কিন সিনেটরদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দখল করেছে রাশিয়া। এবার তৃতীয়টির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তিনি।
রুশ সেনা শনিবার মিকোলাইভ দখলের চেষ্টা করছিল। ইউঝনউক্রেনস্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এর ১২০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। প্রসঙ্গত, রাশিয়া ইতিমধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব শহর এনেরহোদারের জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্রে নিজেদের ঝান্ডা তুলেছে। এটি ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। অন্যটি হল চেরনোবিল। এটি এখন সক্রিয় নয়। কিন্তু এখনও একে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
শুক্রবার সকালে ইউক্রেনের জাপোরিঝজিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রাশিয়ার হামলা চালায়। ফলে দেখা দেয় পারমাণবিক বিপর্যয়। আক্রমণের পরপরই দাউদাউ করে জ্বলছিল পরমাণবিক কেন্দ্র। তবে কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি আয়ত্তে আসে। বড় কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানায় দেশের জরুরি পরিষেবা। কিয়েভ অগ্নিকাণ্ডের জন্য রাশিয়ার সামরিক গোলাবর্ষণকে দায়ী করে তারা।
তার আগে চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্র দখল করে রুশ সেনা। পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়নের সময় এই চেরনোবিল ছিল বিশ্বের অন্যতম পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র।চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট পারমাণবিক চুল্লীর সংখ্যা ছিল ৪টি। ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল ইউক্রেন ও বেলারুশ সীমান্তে অবস্থিত পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে বিস্ফোরণ হয়। ভয়াবহ সেই পারমাণবিক বিপর্যয়ের পর আগুন ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। পারমাণবিক বিক্রিয়া প্রায় ১ কিলোমিটার উঁচু অবধি ছড়িয়ে পড়েছিল এবং প্রচুর পারমাণবিক ধুলো পরিবেশের ব্যাপক দূষণ ঘটিয়েছিল। গবেষণায় উঠে আসে সে সময় পরিবেশে যে পরিমাণে পারমাণবিক পদার্থ নিক্ষিপ্ত হয়েছিল তা ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিক্ষিপ্ত প্রায় ৫০০টি পরমাণু বোমার সমান।