ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জেরে রাষ্ট্রসঙ্ঘের চার কমিটিতে লজ্জাজনক হার রাশিয়ার

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাশিয়া (Russia) ক্রমশই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। এই মুহূর্তে রাশিয়া এতটাই একঘরে হয়ে পড়েছে যে, বুধবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের চার কমিটির…

United Nation committees

short-samachar

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাশিয়া (Russia) ক্রমশই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। এই মুহূর্তে রাশিয়া এতটাই একঘরে হয়ে পড়েছে যে, বুধবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের চার কমিটির ভোটাভুটিতে একটিতেও জিততে পারল না মস্কো। অর্থাৎ চার কমিটির কোনটিতেই রাশিয়ার প্রতিনিধি থাকছে না।

   

একটি কমিটির ভোটাভুটিতে ইউক্রেনের কাছে হারতে হয়েছে তাদের। ওই কমিটির ভোটাভুটিতে ইউক্রেন যে পরিমাণ ভোট পেয়েছে তার অর্ধেকও পায়নি মস্কো। শেষ কবে রাষ্ট্রসঙ্ঘে এভাবে রাশিয়ার মুখ পুড়েছে তা অনেকেই মনে করতে পারছেন না।

বুধবার রাষ্ট্রসংঘের নন গভর্নমেন্টাল অর্গানাইজেশন, ইউএন উওমেন এক্সিকিউটিভ বোর্ড, ইউনিসেফ এক্সিকিউটিভ বোর্ড ও পারমানেন্ট ফোরাম অন ইন্ডেজেনিয়াস ইস্যু কমিটির সদস্যপদের জন্য ভোটাভুটি ছিল। ভোটাভুটিতে অংশ নেন রাষ্ট্রসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদে (ইকোসোক) থাকা ৫৪টি দেশের প্রতিনিধিরা।

চার কমিটিতেই লজ্জার হার হয়েছে রাশিয়ার। ওই চার কমিটিতে রাশিয়া যথাক্রমে ভোট পেয়েছে ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮টি। তার মধ্যে পারমানেন্ট ফোরাম অন ইন্ডেজেনিয়াস ইস্যু কমিটির সদস্যপদের জন্য লড়েছিল ইউক্রেন। ভলোদিমির জেলেনস্কির দেশ পেয়েছে ৩৪টি ভোট। অর্থা‍ৎ ওই কমিটির ভোটে ইউক্রেনের কাছে হারতে হয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশকে। রাষ্ট্রসংঘের চার গুরুত্বপূর্ণ কমিটির ভোটে রাশিয়ার মুখ থুবড়ে পড়ার ঘটনায় যথেষ্টই উল্লসিত আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ একাধিক দেশ।

অন্যদিকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আক্রমণ আরও জোরালো করছে রাশিয়া। ইতিমধ্যেই তারা মারিউপোল শহরকে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। রাশিয়ার মত বৃহৎ শক্তির বিরুদ্ধে একটানা প্রায় ৫০ দিন লড়তে গিয়ে ইউক্রেনের অস্ত্রভাণ্ডার নিঃশেষ। সেনাবাহিনী রসদের অভাবে ভুগছে। এই অবস্থায় ইউক্রেনের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিয়েভের জন্য ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মঞ্জুর করেছেন। এই সাহায্যের মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক, সাবমেরিনের মত অত্যাধুনিক অস্ত্র।

রুশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে যে ধরনের যুদ্ধাস্ত্র থাকা দরকার তার প্রায় সবকিছুই দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন বাইডেন। পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি জন কিরবি বলেছেন, খুব শীঘ্রই ইউক্রেন এইসব অস্ত্রশস্ত্র পাবে। তবে কত দিনের মধ্যে তারা এই অস্ত্র পাবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কোনও দিনের কথা বলেননি কিরবি।

অন্যদিকে এদিন রাশিয়া স্বীকার করে নিয়েছে, ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তাদের একটি যুদ্ধ জাহাজ ধ্বংস হয়েছে। মস্কোর দাবি কৃষ্ণ সাগরের বুকে তাদের যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ওই যুদ্ধজাহাজের কর্মীদের ইতিমধ্যেই সরিয়ে আনা হয়েছে।

মস্কোর পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, এই হামলার জবাব দিতে তারা ইউক্রেন সেনার সদর দফতরে হামলা চালাবে। ইউক্রেন অবশ্য আগেই জানিয়েছে, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাতেইএই যুদ্ধজাহাজটি ধ্বংস হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ইউক্রেনে গুরুতর অপরাধ ঘটে চলেছে। যারা এর জন্য দায়ী তাদের একদিন আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে