Rishi Sunak: ইংল্যান্ডের মসনদের দখলের অপেক্ষায় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী

চাঞ্চল্যকর মোড় নিতে চলেছে ইংল্যান্ডের রাজনীতি। চেয়ার হারাতে পারেন খোদ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তারপর? সে আরও এক আলোচিত মুহূর্ত হবে। কারণ, ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর তালিকায় রয়েছেন…

Rishi Sunak: British Prime Minister in waiting

চাঞ্চল্যকর মোড় নিতে চলেছে ইংল্যান্ডের রাজনীতি। চেয়ার হারাতে পারেন খোদ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তারপর? সে আরও এক আলোচিত মুহূর্ত হবে। কারণ, ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর তালিকায় রয়েছেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত। দেশটির ইতিহাসে প্রথম রক্তসূত্রে অ-ব্রিটিশ হিসেবে চেয়ারের খুব কাছাকাছি আছেন ঋষি শৌনক (Rishi Sunak)।

করোনাভাইরাস লকডাউন পরিস্থিতি এমন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। অবশ্য এর জন্য দায়ি বরিস জনসন নিজেই। তিনি লকডাউন নিয়ম ভেঙে মদের আসর বসানোয় তীব্র সমালোচিত হয়েছেন। পার্লামেন্টে ক্ষমা চেয়েও নিষ্কৃতি নেই। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নীতি নির্ধারকদের মন গলেনি। এরসঙ্গে জুড়েছে বিরোধী লেবার পার্টির সমালোচনা ও বিশ্বজোড়া ছি ছি কার।

পরিস্থিতি এমনই যে ইংল্যান্ড সরকারের বিরুদ্ধেই দেশটির জনগণের বিরুপ মনোভাব প্রবল। সরকার পরিচালনা কঠিন হবে মনে করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে সরানোর বিষয়ে চিন্তা করছে কনজারভেটিভ পার্টি।

ভারতীয় বংশজাত ঋষি শৌনক কনজারভেটিভ পার্টির জবরদস্ত সংসদ সদস্য। তিনিই নাকি পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য দলের কাছে পছন্দের নাম।
ঋষি শৌনক সম্পূর্ণরূপে ভারতীয় বংশজাত। তাঁর মা উষা ও পিতা যশবীর দুজনেই ভারতীয়। ১৯৮০ সালে সাউদাম্পটনে জন্ম রিশির। পরবর্তী সময়ে বিনিযোগ ব্যবসার এক সফল ব্যক্তিত্ব হন। তাঁর স্ত্রী আকাস্থা মূর্তি হলেন বিশ্ববিখ্যাত বহুজাতিক ব্যবসায়ী এন আর নারায়ণমূর্তির কন্যা। ফলে শ্বশুরকুলের বিরাট প্রভাবে দ্রুত ইংল্যান্ডের রাজনীতিতে পাকা আসন করে নেন রিশি। কনজারভেটিভ দলের সদস্য হন। এবার ঋষির সামনে ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হবার সম্ভাবনা। তিনি ইতিমধ্যেই ওয়েটিং পিএম নামে পরিচিত হয়েছেন।

পুরো ঘটনার কেন্দ্রে, ২০২০ সালে লকডাউনের শর্ত ভেঙে বরিস জনসনের মদ্যপানের আসর। ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ও কার্যালয় ডাউনিং স্ট্রিটের ১০ নম্বর গার্ডেনে ‘ব্রিং ইউর ওউন বুজ’ বা ‘আপনার নিজের মদ আনুন’ পার্টিতে তার কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেই পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং বরিস জনসন ও তার স্ত্রী। লকডাউন নিয়ম ভেঙেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী।

চাঞ্চল্যকর এই তথ্য বৃটিশ আইটিভি নিউজ একটি ই মেইল প্রকাশ করেছে। এতে স্পষ্ট হয়েছে ওই পার্টিতে বরিস জনসনের উপস্থিতি সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই পার্টিতে অন্তত ১০০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। প্রায় ৪০ জন অংশ নেন। যাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং তার স্ত্রী ক্যারি সিমন্ডসও উপস্থিত ছিলেন। ২০২০ সালের ২০ মে আয়োজন করা হয়েছ্ল ওই পার্টির। সে সময় ইংল্যান্ডে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করা নিষিদ্ধ ছিল।প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল প্রাইভেট সেক্রেটারি মার্টিন রেনল্ডস ডাউনিং স্ট্রিটের ওই পার্টিতে অংশ নিতে ১০০ এর বেশি জনকে মেইল করেন। এসবের মধ্যে রয়েছেন বরিসের উপদেষ্টা, বক্তৃতা লেখক এবং দরজার স্টাফ। 

সেই মেইলে লেখা ছিল, এক অবিশ্বাস্য ব্যস্ত সময় পর আমরা ভাবছি এই সন্ধায় ১০ নম্বর গার্ডেনে মনোরম আবহাওয়ার সর্বাধিক ব্যবহার করে সন্ধ্যা ৬ টা থেকে যোগ দিন এবং আপনার মদ নিয়ে আসুন।  

বিবিসি জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী এবং তার স্ত্রী পার্টিতে ছিলেন। এই বিষয়ে ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর দফতর নীরব। রিপোর্টে বলা হয়েছে পার্টির আয়োজনের সময় দেশটির বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের স্কুল বন্ধ ছিল, বন্ধ ছিল বার, রেস্টুরেন্ট। একই সঙ্গে সামাজিক মেলামেশায় ছিল কড়া নিয়ন্ত্রণ। বিভিন্ন পরিবারের দুজন লোককে বাইরে দেখা করার অনুমতি ছিল। শর্ত ছিল তাদের ২ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ব্রিটেন সংসদের বিরোধীদল লেবার পার্টির অভিযোগ,  প্রধানমন্ত্রী যে  নিয়ম করেছেন তার প্রতি তাঁর নিজের কোনও সম্মান নেই।