ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (ISL) জামশেদপুর এফসি (Jamshedpur FC) বনাম মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের (Mohun Bagan SG) নজর কাড়া ম্যাচের ফলাফল ছিল অমীমাংসিত। শুক্রবার জামশেদপুরের জেআরডি টাটা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচ শেষ হয় ১-১ স্কোর লাইনের মধ্যে দিয়ে। তাই এদিন পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে দুই দলকে। তবুও দলের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন জামশেদপুরের কোচ খালিদ জামিল (Khalid Jamil)।
ম্যাচের প্রথমার্ধের ২৫ মিনিটে অধিনায়কের গোলে এগিয়ে যায় বাগান ব্রিগেড। এই গোলের পর ব্যবধান বাড়ানোর একাধিকবার সুযোগ পেয়েছিল মোলিনার ছাত্ররা। কিন্তু জালে বল জড়াতে ব্যৰ্থ হয় তারা। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই বেশ আক্রমণাত্মক ভূমিকায় ছিল জামশেদপুর এফসি। স্টিফেন এজের দুর্দান্ত গোলের মাধ্যমে স্কোর লাইনের সমতা ফেরায় ইস্পাত নগরীর এই দল। তিনি বাগানের রক্ষণকে সহজেই পরাস্ত করে গোলটি করেন। যদিও এই গোলটি ছিল তার আইএসএলে ষষ্ঠ গোল এবং এই মরসুমের দ্বিতীয় গোল।
এদিন ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ম্যাকলারেন-কামিংসরা একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও, জামশেদপুরের গোলকিপার আলবিনো গোমেসের চমৎকার সেভ তাদের বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কোচ খালিদ জামিল ম্যাচ শেষে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, “হ্যাঁ আমি ম্যাচ নিয়ে খুশি। আমরা এক পয়েন্ট পেয়েছি। যা ভালো কারণ আমরা একটি ভালো দলের বিরুদ্ধে খেলেছি, যারা আক্রমণাত্মকভাবে খুব শক্তিশালী। তারা প্রতিটি বিভাগে মানসম্পন্ন খেলোয়াড় নিয়ে গঠিত, তাই তাদের বিরুদ্ধে পয়েন্ট নেওয়া একটি ভালো ফল।”
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে জামশেদপুর এফসি কয়েকটি পরিবর্তন করে, যার ফলে ম্যাচের গতিপথ কিছুটা বদলে যায়। খালিদ জামিল সিদ্ধান্ত নেন সৌরভ দাস, ইমরান খান এবং লাজার সিরকোভিচকে সরিয়ে জাভিয়ের সিভেরিও, সেমিনলেন ডৌংগেল, এবং মোবাশির রহমানকে মাঠে নামান। এই পরিবর্তনগুলি দলের জন্য কার্যকরী হয় এবং শেষ পর্যন্ত তারা সমতা ফেরাতে সক্ষম হয়।
খালিদ জামিল ম্যাচের পরিবর্তন প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিবর্তন করেছি কারণ আমরা প্রথমার্ধে গোল খেয়েছিলাম এবং এটি আমাদের হোম গ্রাউন্ড ছিল। আমরা দুটি স্ট্রাইকার ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি, সিভেরিওকে খেলিয়েছি এবং ইমরান খান চোট পেয়েছিলেন, তাই সেমিনলেন ডৌংগেলকে এনেছি। মোবাশির রহমানকে খেলিয়েছি কারণ তার লম্বা বল ভালো এবং মূলত আমরা চেয়েছিলাম যে দল খেলায় ফিরে আসুক এবং সমতা ফিরিয়ে আনা উচিত।”
এছাড়াও খালিদ জামিল জানিয়েছেন, ম্যাচের শেষের দিকে তারা জয়ী হতে পারতো যদি তারা আরও একটি গোল করতে পারত। তিনি বলেন, “আমরা দ্বিতীয়ার্ধে দ্রুত সমতায় ফিরে আসি, তাই আমি ভাবছিলাম আরও যদি এক গোল করতে পারি, তাতে হয়তো তিনটি পয়েন্ট পেতে পারব। তবে কখনও কখনও এমন হয়, কিন্তু আমি খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স নিয়ে খুব খুশি। তারা খুব কঠোর পরিশ্রম করছে এবং তাদের আত্মবিশ্বাস বজায় রাখতে হবে।”
তবে, খালিদ জামিল তার দলের সাফল্যে খুশি এবং মনে করেন, তারা এক শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ভালো লড়াই করেছে। জামশেদপুরের হয়ে স্টিফেন এজের পারফরম্যান্সও প্রশংসনীয় ছিল, যিনি তার গোল ছাড়াও রক্ষণের দিকেও অবদান রেখেছেন। শেষপর্যন্ত, খালিদ জামিল দলের মনোবল এবং কাজের প্রতি তার সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি আরও বলেন, “খেলোয়াড়দের প্রতি আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে। তারা কঠোর পরিশ্রম করছে এবং তাদের উচিত এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।”
ম্যাচের এই ফলাফলে জামশেদপুর এফসি এক পয়েন্ট নিয়ে সন্তুষ্ট এবং খালিদ জামীল বিশ্বাস করেন যে তাদের দল আরও উন্নতি করতে পারবে যদি তারা এই ধরনের পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারে।