দেশজুড়ে সোনার দামে লেগেছে নতুন রেকর্ডের ছোঁয়া। প্রতিদিন বাড়তে থাকা এই ধাতুর মূল্যে বিনিয়োগকারীরা নতুন করে ভাবছেন—সোনা কেনা কি এখনো আগের মতোই সুরক্ষিত বিনিয়োগের পথ? অনেকে আবার শারীরিক সোনার নিরাপত্তা, সংরক্ষণ এবং বিশুদ্ধতার ঝামেলায় না গিয়ে বিকল্প বিনিয়োগপথের দিকে ঝুঁকছেন। আজকাল এমন অনেক উপায় রয়েছে, যেখানে আপনি সোনা না কিনেও তাতে বিনিয়োগ করতে পারেন।
নিচে রইল সেই জনপ্রিয় ও লাভজনক কিছু বিকল্প বিনিয়োগের মাধ্যম—
১. গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ড (Gold Mutual Funds):
এই ফান্ডগুলো সরাসরি সোনা বা সোনা উত্তোলনকারী কোম্পানিগুলিতে বিনিয়োগ করে। যেহেতু এগুলি পেশাদারভাবে পরিচালিত হয়, তাই বিনিয়োগকারীরা সোনার বাজারে সরাসরি এক্সপোজার পান এবং তাঁদের পোর্টফোলিওতে বৈচিত্র্য আনতে পারেন। যারা নিয়মিত বিনিয়োগ (SIP) পদ্ধতিতে বিনিয়োগ করতে চান, তাঁদের জন্য এটি একটি সহজ উপায়।
২. সার্বভৌম সোনা বন্ড (Sovereign Gold Bonds – SGBs):
এগুলি সরকার কর্তৃক জারি করা বন্ড, যার মূল্য সোনার দামের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিনিয়োগকারীরা সোনার বাজারমূল্যের পাশাপাশি একটি নির্দিষ্ট হারে সুদও পান। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে SGB স্কিমের মাধ্যমে বিনিয়োগে নির্দিষ্ট সুদ ও বাজার-নির্ভর মুনাফা—দুটিই মেলে। তবে বর্তমানে সরকার এই স্কিমটি সাময়িকভাবে স্থগিত রেখেছে।
৩. গোল্ড ইটিএফ (Gold Exchange-Traded Funds):
স্টক এক্সচেঞ্জে ট্রেড করা এই ফান্ডগুলো সোনার দামের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। এগুলোর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা সহজে ও তুলনামূলকভাবে কম খরচে সোনায় বিনিয়োগ করতে পারেন, কোনও শারীরিক সংরক্ষণের প্রয়োজন হয় না। অনলাইন ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে কেনা-বেচাও করা যায়।
৪. গোল্ড মাইনিং স্টকস (Gold Mining Stocks):
যাঁরা সরাসরি সোনা কিনতে চান না, তাঁরা সোনা উত্তোলনকারী সংস্থার শেয়ারে বিনিয়োগ করতে পারেন। কোম্পানির উৎপাদন দক্ষতা এবং সোনার বাজারমূল্য—দুইয়ের ওপরই এই শেয়ারগুলির পারফরম্যান্স নির্ভর করে।
৫. গোল্ড ফিউচারস ও অপশনস (Gold Futures and Options):
এটি তুলনামূলকভাবে অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের জন্য। নির্দিষ্ট ভবিষ্যত তারিখে নির্ধারিত দামে সোনা কেনা বা বিক্রির চুক্তি করা যায়। বাজারের ওঠানামা সম্পর্কে সচেতন বিনিয়োগকারীরা এই পদ্ধতিতে ভালো মুনাফা করতে পারেন, যদিও ঝুঁকিও থাকে বেশি।
শেষ কথা:
সোনার দাম যত বাড়ছে, বিনিয়োগের নতুন পথও ততই জনপ্রিয় হচ্ছে। তবে যেকোনও বিনিয়োগের আগে নিজের ঝুঁকি গ্রহণ ক্ষমতা ও বাজার বোঝাপড়া বিচার করে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।