INC: লোকসভায় শূন্য ধরে বাংলা নিয়ে চিন্তিত নয় কংগ্রেস

বিধানসভা নির্বাচনে প্রচারে দেখা মেলেনি দিল্লির কোনও নেতাদের। তার ওপর রাজ্য নেতৃত্বের পারস্পরিক মন কষাকষি নীচুতলার কর্মীদের মনোবল নষ্ট করেছিল৷ যার প্রভাব সরাসরি ফল ঘোষণার…

বিধানসভা নির্বাচনে প্রচারে দেখা মেলেনি দিল্লির কোনও নেতাদের। তার ওপর রাজ্য নেতৃত্বের পারস্পরিক মন কষাকষি নীচুতলার কর্মীদের মনোবল নষ্ট করেছিল৷ যার প্রভাব সরাসরি ফল ঘোষণার দিন পড়ল৷ বিধানসভায় শূন্য হয়ে গেল কংগ্রেস। এরপর একটি বছর ধরে দল যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই। রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি হেলদোল নেই কেন্দ্রিয় নেতৃত্বের৷

লোকসভায়? এ রাজ্য থেকে একমাত্র কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর পক্ষে আগামী লোকসভা ভোট রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণ হতে চলেছে। বহরমপুরের পুরসভায় যেভাবে অধীর ম্যাজিক উবে গেছে তার পর থেকেই গুঞ্জন অধীর চৌধুরীর পক্ষে কঠিন লড়াই। তিনি নিজে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। আর প্রদেশ কংগ্রেসেই আলোচনা দল পশ্চিমবঙ্গ থেকে সাংসদ শূন্য হয়ে যেতে পারে। বগরমপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের পাল্লা ভারি বলেই মনে করা হচ্ছে।

গত বিধানসভা নির্বাচনে বাম এবং আইএসএফের সঙ্গে জোট করেছিল কংগ্রেস। তাতেই কি হার? কিন্তু নির্বাচনের পরেও জোট থেকে সরে এসে একা নির্বাচনে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিলে একই ফলাফল৷ উপনির্বাচন এবং পুর নির্বাচনেও কংগ্রেসের ফলাফল নজর কাড়তে পারেনি৷ বরং কংগ্রেস এবং আইএসএফের হাত ছেড়ে একা লড়াই করে শাসক দলকে কড়া টক্কর দিয়েছে বামফ্রন্ট৷ তাহেরপুর পুরসভাও দখল করেছে তারা। বাংলা নিয়ে কেন গা ছাড়া মনোভাব? প্রশ্ন দলের নীচু তলার কর্মীদেরই।

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, দেশের অন্যান্য রাজ্যে বিজেপিকে টক্কর দেওয়ার জন্য যে প্রস্তুতি কংগ্রেস নিচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে কেন্দ্রের শাসক দলকে চাপে ফেলার মতোই। শুধুমাত্র বিজেপি কেন, তেলেঙ্গানার প্রচারে নেমে বিপুল সংখ্যক কর্মী নিয়ে জনসভা করে তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন রাহুল গান্ধী। পরবর্তীতে দলের ফলাফল যাই-ই হোক না কেন, কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করেছেন ৷ কিন্তু বাংলায় কেন নয়? এ রাজ্যে বিজেপি বিরোধিতা করতে গিয়ে মমতার থেকে পিছিয়ে পড়ছে কংগ্রেস এটাই প্রতিষ্ঠিত।

কারণ, রাজ্যের প্রতিটি হিংসার ঘটনায় বিরোধী দল বিজেপি এবং সিপিআইএম একেবারে সুর সপ্তমে চড়িয়েছে। নিয়ম করে রাজপথে নেমে আন্দোলন করতে দেখা যাচ্ছে তাদেরকে৷ কিন্তু একা অধীর চৌধুরী ছাড়া সেভাবে আর কংগ্রেসের কাউকে দেখা যায়নি। এমনকি কাউন্সিলর তপন কান্দুর খুনেতেও সেভাবে সোচ্চার হয়নি প্রদেশ কংগ্রেস। অথচ বারবার কংগ্রেস হাইকম্যান্ডকে রাজ্যে আসার জন্য অনুরোধ করেছেন রাজ্যের প্রথম সারির নেতারা। এখনও করে চলেছেন অপেক্ষা৷

এরই মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে মেট্রো ডায়েরি মামলায় রাজ্য সরকারের পক্ষে এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর বিপক্ষে সওয়াল করতে দেখা গেল পি চিদম্বরমকে৷ হাই কোর্টের ভিতরেই প্রাক্তন কেন্দ্রিয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের দালাল স্লোগান উঠতে দেখা গেল। তাতেই বেজায় মুষড়ে পড়েছেন কংগ্রেসের তৃণমূল স্তরের কর্মীরা৷ তাঁরাও বুঝতে পারছেন, বাংলা নিয়ে বিশেষ চিন্তিত নয় কংগ্রেস৷