ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বাংলাদেশি শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। বাংলাদেশের (Bangladesh) যুক্তিবাদীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল জেলে বন্দি। ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
মুন্সীগঞ্জের একটি বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে অবিলম্বে এবং বিনা শর্তে কারাগার থেকে সরকারের মুক্তি দেয়া উচিৎ বলে দাবি করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এই শিক্ষকের মুক্তির দাবিতে সামাজিক মাধ্যম তোলপাড়। ঢাকা ও বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে।
স্কুলের বিজ্ঞান শিক্ষার একটি ক্লাসে একজন শিক্ষার্থীর প্রশ্নের জবাবে ধর্ম আর বিজ্ঞানের পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। সেটা গোপনে ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার পর ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। রটিয়ে দেওয়া হয়, তিনি ইসলামের অবমাননা করেছেন।
বিবিসি জানাচ্ছে, হৃদয় মণ্ডলের ঘটনার পর বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষা নিয়ে আশঙ্কিত। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলছেন, ”বিজ্ঞান শিক্ষার সঙ্গে ধর্মীয় শিক্ষার কোন সংঘর্ষ বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় নেই, কখনও ছিল না, আগামীতেও থাকবে না। সুতরাং সংঘর্ষের কোন পরিস্থিতি কারণ দেখছি না।”
তবে মন্ত্রী বলেছেন, একটা মহল দীর্ঘদিন ধরে চাইছে একটা সাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য এবং ধর্মে ধর্মে এক ধরনের সংঘাত তৈরি করার জন্য। যে রাজনৈতিক শক্তিগুলো বাংলাদেশকে পাকিস্তানে পরিণত করতে চায়, কট্টর একটা সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তাদের পক্ষ থেকে এটা একটা অপচেষ্টা। সেটার বিষয়ে আমরা অবগত আছি।
তিনি বলেন, একজন শিক্ষক বৈজ্ঞানিক জ্ঞান এবং তথ্যের ভিত্তিতে একটা বিষয়কে ব্যাখ্যা করবেন। সেখানে তাকে এমন একটা প্রশ্নের সম্মুখীন করা হয়েছে, যার সঙ্গে বিজ্ঞান শিক্ষা বা ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটা আলোচনা সৃষ্টি করে বিতর্ক করার জন্য এবং পরিস্থিতির শিকার করার জন্য আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে।
পাকিস্তানে এমন ধরণের নানা ঘটনা উল্লেখ করে বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলছেন, আমাদের দেশে যাতে এই ধরণের কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সেজন্য আমি মনে করি আমাদের পুলিশ প্রশাসন ও বিচার প্রশাসনকে একটা বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে। কে কী বললো, কে কী শুনল, সেটার ওপর ভিত্তি করে মামলা গ্রহণ করা, আবার সেটার ওপর ভিত্তি করে জামিন না দেওয়া, এগুলো সঠিক বলে আমার কাছে মনে হয় না। এটা যদি একটা উদাহরণ হিসাবে সৃষ্টি হয়ে যায়, তাহলে কিন্তু সমূহ বিপদ অপেক্ষা করছে।