গণহত্যায় জড়িত অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জারি গ্রেফতারি পরোয়ানা, দিল্লি যাবে ইন্টারপোল?

গণবিক্ষোভে বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) বিরুদ্ধে তার নিজের দেশেই জারি হলো গ্রেফতারি পরোয়ানা। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই পরোয়ানা…

The International Criminal Tribunal has issued an arrest warrant against Bangladesh's former Prime Minister Sheikh Hasina on charges of genocide

গণবিক্ষোভে বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) বিরুদ্ধে তার নিজের দেশেই জারি হলো গ্রেফতারি পরোয়ানা। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই পরোয়ানা জারি করেছে। গত ৫ আগস্ট থেকে ভারতে আশ্রিত হাসিনা। তাকে ফিরিয়ে এনে বিচার ও মৃত্যুদণ্ডের দাবি উঠেছে বাংলাদেশে।

অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সরকার বিরোধী আন্দোলন দমনে গণহত্যা চালিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে টানা ১৫ বছরের হাসিনা জমানা শেষ হয় চলতি (২০২৪) বছরের ৫ আগস্ট। বিক্ষোভের মুখে ওই দিন তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তাঁকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার তৎপর।

   

জানা যাচ্ছে, হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য ইন্টারপোলের সাহায্য নেবে ইউনূসের সরকার। ইন্টারপোল হলো আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা। বাংলাদেশের অন্যতম সংবাদপত্র ‘সমকাল’ জানাচ্ছে,”সাবেক (প্রাক্তন) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে ট্রাইবুনালে হাজিরের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।” ‘ইত্তেফাক’ জানাচ্ছে, জুলাই-আগস্ট গণবিক্ষোভে কমপক্ষে দেড় হাজার নিহত। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দমনে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মহম্মদ গোলাম মর্তূজা মজুমদার। বাকি সদস্যরা হলেন- বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মহম্মদ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন আমলের সব হত্যা, গণহত্যা, বিচার বহির্ভূত হত্যা, পিলখানা হত্যার (বিডিআর বিদ্রোহ) বর্ণনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন।

সেইসঙ্গে শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চায় ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিম। সরকারপক্ষের আবেদনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক (প্রাত্তন) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গত জুলাই আগস্ট মাসে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ম সংস্কার করার দাবিতে বাংলাদেশে হয় ছাত্র আন্দোলন।

সেই আন্দোলন ক্রমে সরকার বিরোধী গণবিক্ষোভে পরিণত হয়েছিল। অভিযোগ, বিক্ষোভ দমনে গণহত্যা চালিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। কমপক্ষে দেড় হাজার নিহত বলে তথ্য মিলেছে। তেমনই কয়েকশো মৃত্যুর ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করে শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত সরকারের কয়েক ডজন নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা পড়েছে। বাংলাদেশে টানা তিন দফায় ভোটে জিতে সরকার গড়েছিলেন শেখ হাসিনা।

তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জোট সরকারের আমলে ২০১০ সালে গঠিত হয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিগত সরকার জানিয়েছিল, এই ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম বিরোধীদের বিচার করা হবে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ’ করার পর পাকিস্তান কেটে বাংলাদেশ গঠিত হয়। সেই সংঘর্ষে পাকিস্তানপন্থী একাধিক গণহত্যাকারীদের পরে চিহ্নিত করে ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। শেখ হাসিনার শাসনে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে’ ফাঁসির সাজা হয় জামাত ইসলামি ও বিএনপি দলের বেশ কয়েকজন নেতার।