কলকাতার (Rooftop) মেছুয়া হোটেলে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের পরই রাজ্য জুড়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন—শহরের কোথাও ছাদ (Rooftop) আটকে ব্যবসা চলবে না। তাঁর নির্দেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কলকাতা পুরসভা ও পুলিশ যৌথভাবে শহরের (Rooftop) একাধিক বহুতলে অভিযান চালিয়ে ৮৩টি রুফটপ রেস্তরাঁ (Rooftop) ও বারের অস্তিত্ব চিহ্নিত করে। এবং এবার একই পথে হাঁটছে বিধাননগর পুরনিগমও।
বিধাননগর (Rooftop) পুরসভার মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, শহরের ৪১টি ওয়ার্ডের প্রতিটি কাউন্সিলরকে জানানো হয়েছে, তাঁদের ওয়ার্ডে কোথায় কোথায় ছাদে রেস্তরাঁ, (Rooftop) বার বা ক্যাফে চালানো হচ্ছে, তার একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করতে। সেই তালিকা পুলিশ প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এরপর পুলিশ সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করবে এবং আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
মেয়রের কথায়, “রুফটপ (Rooftop) রেস্তরাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে আলোচনার পরই ঠিক করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনেই পুরনিগম ব্যবস্থা নিচ্ছে।”
এতদিন ধরে শহরের ছাদে (Rooftop) অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে একের পর এক রেস্তরাঁ, বার, ক্যাফে। টিনের শেড বা থার্মোকলের ছাউনির নিচে চলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন। রীতিমতো চলেছে ব্যবসা। এমনকি ছাদে ওঠার সিঁড়িতেও গ্যাস সিলিন্ডার, জলের জার কিংবা আবর্জনার স্তূপ রাখা হয়, যা বড়সড় বিপদের কারণ হতে পারে। আগুন লাগলে এই পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলেই মনে করছে প্রশাসন।
অগ্নিকাণ্ডের (Rooftop) পর যে চিত্র উঠে এসেছে, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। অনেক বহুতলের ছাদে (Rooftop) নেই আগুন নেভানোর কোনও সঠিক ব্যবস্থা। নেই ফায়ার এক্সিট, নেই কোনও প্রাথমিক সতর্কতা। অথচ সেখানে প্রতিদিন শতাধিক মানুষ জড়ো হচ্ছেন, খাওয়া-দাওয়া করছেন, অনুষ্ঠান করছেন। একবার যদি আগুন লাগে, তাহলে প্রাণহানির আশঙ্কা অত্যন্ত বেশি।
কলকাতা পুরসভা (Rooftop) ইতিমধ্যেই একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, বহুতলের ছাদ, সিঁড়ি, করিডর কোনও ভাবেই বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যাবে না। সেইসঙ্গে ভবিষ্যতে কোনও রকম অনুমতিহীন নির্মাণ হলেও সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবার বিধাননগরেও (Rooftop) একই রকম নির্দেশিকা জারি করতে চলেছে পুরনিগম। মূলত নাগরিক সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত। পুরসভার এক আধিকারিকের কথায়, “এই ধরনের রেস্তরাঁ বা বার শুধুমাত্র বেআইনি নয়, নাগরিক জীবনের জন্য বিপজ্জনক। আগুন লাগলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই ঝুঁকি আমরা নিতে পারি না।”
তবে প্রশ্ন উঠছে, এতদিন এই অবৈধ রেস্তরাঁগুলো (Rooftop) কীভাবে চালু ছিল? প্রশাসনের নজর এড়িয়ে তারা ব্যবসা চালাচ্ছিল কীভাবে? অনেকে মনে করছেন, প্রশাসনের মদতেই এতদিন এই ব্যবসা নির্বিঘ্নে চলেছে। এখন যেহেতু দুর্ঘটনা ঘটেছে, তাই দায় এড়াতে তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
যাই হোক, প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন বহু নাগরিক। তাঁদের মতে, “জীবনের নিরাপত্তা সবার আগে। বিনোদনের আড়ালে যদি প্রাণহানি ঘটে, তাহলে তার কোনও অর্থ থাকে না।”
সেই অর্থে বলা যায়, রুফটপ (Rooftop) ব্যবসার বিরুদ্ধে সরকারের এই পদক্ষেপ দৃষ্টান্তমূলক। যদি সঠিকভাবে এই অভিযান পরিচালিত হয়, তাহলে শহরের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা অবৈধ কাঠামো ও ব্যবসার রাশ টেনে ধরা সম্ভব হবে। তবে এও নিশ্চিত করতে হবে, ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা আবার না ঘটে, আর কোনও মেছুয়া যেন না হয় শহরের এক নতুন ট্র্যাজেডির নাম।