এজলাসেই অজ্ঞান জ্যোতিপ্রিয় হাসপাতালে ভর্তি

রেশন দুর্নীতিতে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে হেফাজতে নিতে ব্যাঙ্কশাল আদালতে আবেদন জানাল ইডি। আর মন্ত্রীর কাতর আর্জি ‘হাই সুগার, পা ফুলছে, স্মার্টওয়াচ পাচ্ছি না’। নিজের…

রেশন দুর্নীতিতে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে হেফাজতে নিতে ব্যাঙ্কশাল আদালতে আবেদন জানাল ইডি। আর মন্ত্রীর কাতর আর্জি ‘হাই সুগার, পা ফুলছে, স্মার্টওয়াচ পাচ্ছি না’। নিজের অসুস্থতা তুলে ধরেন তিনি বিচারকের কাছে কাতর আর্জি জানিয়ে আদালতেই বসে পড়েন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়। বিচারক জামিনের আবেদনে তাতে কর্ণপাত করেননি। তিনি আগামী ৬ নভেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রীকে ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এরপর অসুস্থ মন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় বেসরকারি হাসপাতালে।

আদালত থেকে গন্তব্যস্থল হল হাসপাতাল। এজলাসে জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন সময়ে অসুস্থ জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। রাজ্যের মন্ত্রীকে এসি অ্যাম্বুল্যান্সে শুইয়ে নিয়ে ছোটা হল হাসপাতালে। এজলাস থেকে সোজা স্ট্রেচারে শুইয়ে বাইপাসের ধারে একরি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা দেখেই তাঁকে কমান্ড হাসপাতালে স্থানান্তর করে পরবর্তী চিকিৎসার বিষয়টি দেখা হবে বলেই নির্দেশ আদালতের।

এদিকে মন্ত্রী অসুস্থ হওয়ায় আজই তাঁর সাথে বাকিবুরের মুখোমুখি জেরার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করা হচ্ছে। রেশন দুর্নীতিতে ধৃত বাকিবুরের বিপুল সম্পত্তির হদিস মিলেছে। তার সাথে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়র ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ মিলেছে। শনিবার বাকিবুরকে আদালতে আনবে ইডি। তার আগে জ্যোতিপ্রিয় ও বাকিবুরের মুখোমুখি জেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ইডি।

বৃহস্পতিবার যখন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে তল্লাশি চলছিল তখন সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেছিলেন বালু সুগারের রোগী। ”বালুর (জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক) শরীর খুব খারাপ। আজ যদি ও মরে যায়, তাহলে আমি কিন্তু ইডি ও বিজেপির বিরুদ্ধে এফ‌আইআর করব। এর আগে সুলতান আহমেদের সঙ্গে হয়েছে, প্রসূন মুখার্জির সঙ্গে হয়েছিল, সেই কারণেই প্রসূন মূখার্জির ব‌উ মারা গিয়েছিল।”

শুক্রবার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জামিন আবেদন খারিজ হতেই তিনি আরও অসুস্থতা বোধ করেন। অ্যাম্বুলেন্সেই মন্ত্রীর সঙ্গে যান এক ইডি অফিসার। তাদের পিছনে ইডি আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের গাড়ি যায়। ব্যাঙ্কশাল আদালতে প্রায় ৪৫ মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ চলার মাঝে একাধিক নির্দেশ দেন বিচারক। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করবে কমান্ড হাসপাতাল, নির্দেশ আদালতের। এরসঙ্গে বাড়ির খাবার পাবেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, নির্দেশ দেন বিচারক।

এর পাশাপাশি বিচারক নির্দেশ দেন যে, দিনে এক ঘণ্টা করে নিজের আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। অবশেষে ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। মুহূর্তের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জেরা থেকে শুরু করে গ্রেফতার পর্বের মাঝে ইনসুলিন নিতে না পারার কথা জানান প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর আইনজীবী। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পা ফুলে থাকা সহ অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জামিনের দাবি করেন আইনজীবী।

ব্যাঙ্কশাল আদালতে জেরা চলাকালীন সময়ে শুনানি পর্বে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে প্রশ্ন করেন বিচারপতি। জানতে চান, তাঁকে কি শারীরিকভাবে কেউ অত্যাচার করেছে ? বিচারকের এই প্রশ্নের উত্তরে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, না। পাশাপাশি তিনি বলেন, ইডি-র আধিকারিকরা এখনও পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে ভাল ব্যবহারই করেছেন। যদিও কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে গ্রেফতারি প্রসঙ্গে অবশ্য জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, তাঁর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেন।