ইনভেস্টর আসলেই কি সমস্যা মিটবে ইস্টবেঙ্গলে? সমস্যা আরও গভীরে

প্রসূন বিশ্বাস: গত কয়েক বছর ধরেই ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) শিবিরে মরসুম শুরুর ঠিক আগে এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। ইনভেস্টর জোগার করার অধ্যায়। আগে জানতাম…

east-bengal

প্রসূন বিশ্বাস: গত কয়েক বছর ধরেই ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) শিবিরে মরসুম শুরুর ঠিক আগে এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। ইনভেস্টর জোগার করার অধ্যায়। আগে জানতাম সত্তরের দশকে কিংবা আসির দশকে দল বদলের টানটান উত্তেজনা থাকত ফুটবলার তোলার বিষয়ে। কিন্তু এখন দলবদলে সেই উন্মাদনা কোথায়?

prasun-biswas
প্রসূন বিশ্বাস

বরং মরশুম শুরুতেই ইদানিং নতুন একটা পর্ব চলে, ইনভেস্টর জোগার করার আর স্পোর্টিং রাইটস ফেরানোর। দেখা যাচ্ছে মরসুম শুরুর আগেই ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের ছুটতে হচ্ছে নতুন ইনভেস্টর আনতে। যদিওবা এই টালবাহানায় পুরনো ইনভেস্টর থেকে যায় (গতবছর শ্রী সিমেন্ট নাটকে সেইরকমই দেখা গিয়েছিল)তখন দলগঠনে এত দেরী হয়ে গিয়েছে ভালো ফুটবলার আর পাওয়া যায় না। আইএসএলে যার ফল দেখতে পারি আমরা। কিন্তু বিষয়টা হল মুখ্যমন্ত্রী, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বা যার সহযোগীতাতেই হোক না কেন একটা ইনভেস্টর আবার হয়ত আনবেন দেবব্রত সরকার, কল্যাণ মজুমদাররা। বলুনত তাতে কি সমস্যার সমাধান হবে? পরের বছর ফের ইনভেস্টর সমস্যা হবে না তারা কি বুকে হাত দিযে বলতে পারবেন?

কেন এই মন্দার বাজারে বড় বড় কোম্পানীকে পাশে পেয়েও হারাতে হচ্ছে ইস্টবেঙ্গলকে? কেন লালহলুদ কর্তাদের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছে না এইসব কর্পোরেট কর্তাদের? নতুন ইনভেস্টরদের সঙ্গে চুক্তি করার আগে এই বিষয়টা একবার ভাববেন না দেবব্রতবাবুরা? যদি কর্পোরেট মহলে এই বার্তা যায় কলকাতার ক্লবের সঙ্গে কাজ করা সমস্যার, তাহলে আজ হয়ত একটা ইনভেস্টর পেয়ে যাবেন। কাল নতুন লগ্নি আনতে কিন্তু পথটা আরও কঠিন হয়ে যাবে।

হয়ত লালহলুদ কর্তারা ভাবছেন বিজয় মালিযার মতন কোনও ব্যাক্তি যদি পাওয়া যায়। যিনি অর্থ দেবেন আর বাকিটা কর্তারাই চালাবেন। সিদ্ধান্ত সব কর্তারাই নেবেন। সেটা সম্ভব হত স্পন্সরের ক্ষেত্রে। আজ ২০২২ দাঁড়িযে ইনভেস্টর কনসেপ্টে সেই আশা করার আর কোনও জায়গা আছে কি? আরও একটা বিষয় যারা নতুন ইনভেস্টর আসবে তারা কিন্তু আগের সবকিছুই রেইকি করে তবেই আসবে।

লাল হলুদ কর্তাদের একটা বড় ইউএসপি ক্লাবের ‘লেগাসি।’ তারা সেকথা বুক বাজিয়ে বলেনও। এটা খারাপ কিছু নয়। এই ‘লেগাসিকে’ই আগে এগিয়ে নিয়ে যেতে গেলে অর্থের প্রয়োজন। মানসিকতা বদলের প্রয়োজন। আইএসএলে দলের পারফরমেন্স তলানিতে। এখন যেন একটা ইনভেস্টর আনতে পারলেই টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিযনের সামিল তাদের কাছ। বেশ কিছু ফ্যান ক্লাবের সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে। এই সব লালহলুদ ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা শোনা যায় ইনভেস্টরের কাছেও পৌঁছে যায় সরাসরি। সেখানে গিয়েও কর্তাদের নামে বাপবাপান্ত করে। এটাও কিন্তু বড় সমস্যা। মযদানের খবর কোয়েসের সঙ্গে লাললুদ কর্তাদের অশান্তির সময় এই ফ্যান ক্লাবের সদস্যদের পাশে পেযে গিযেছিল কোয়েস।

সেই সময দেখা গিয়েছে লালহলুদ কর্তাদের বিরুদ্ধে এই ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা ক্রমাগত স্যোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বিষাদগার উগরে দিযেছেন। দেবব্রত সরকাররা যদি ভাবেন এটা ছোট্ট সমস্যা তাহলে ভুল করবেন। এই সমস্যাটাও মিটিয়ে এই লক্ষাধিক সমর্থকদের এক ছাতার তলায় না আনলে ভুল চারিদেকেই নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে ক্লাবের জন্যই। এক একজন সমর্থকই লালহলুদের বড় শক্তি। তাই বলি শুধুই ইনভেস্টর আসলেই সমস্যা সমাধান হযে যাবে ইস্টবেঙ্গলের সেটা ভাবা একদম উচিৎ নয়। বরং সমস্যার গভীরে গিয়ে এবার বাধহয় আত্মসমালোচনার সময় এসে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের। নয়ত এবছর ইনভেস্ট এলেও আগামীবছর মরসুমের শুরুতে এই একই রোগ থেকে যাবে লালহলুদের। যে রোগ সারানো আরও কঠিন হয়ে যাবে।