চাপের মুখে গোল করে এগিয়ে দিয়েছিলেন দলকে। খাতায় কলমে হেভিওয়েট ভবানীপুর স্পোর্টিং ক্লাবের বিরুদ্ধে কলকাতা ফুটবল লীগের ম্যাচে এগিয়ে গিয়েছিল এরিয়ান (Aryan FC)। শেষ পর্যন্ত দল জিততে না পারলেও এরিয়ানের গোলদাতা অচিন্ত্য ঘোষের (Achintya Ghosh) কৃত্বকে খাটো করা যায় না কোনো না ভাবেই।
এবারের কলকাতা লীগ বিদেশি ফুটবলার বিহীন। জাতীয় দলের কথা মাথায় রেখে তৃণমূল স্তর থেকে ভালো মানের ফুটবলার তুলে আনা লক্ষ্য ফেডারেশনের। প্রাক্তন ফুটবলাররাও বিদেশিদের না খেলার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। ভারতের জাতীয় দলের খেলা দানা বাঁধলেও গোল করার লোকের অভাব বারবার টের পাওয়া গিয়েছে। তাই কলকাতা ফুটবল লীগে যারা চাপের ম্যাচে গোল করছেন তাদের দিকে যে নজর রাখতেই হবে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
কলকাতা ময়দানে মিনি মোহনবাগান নামের পরিচিত ভবানীপুর স্পোর্টিং ক্লাব। শংকর রায়, কিংশুক দেবনাথ, শুভ ঘোষ, অভিনব বাগ সহ একাধিক নামকরা তারকারা রয়েছে দলে। তাদের উত্থানের গল্প অনেকেই জানেন। কিন্তু এরিয়ানের গোল স্কোরার অচিন্ত্য ঘোষের কথা অনেকের কাছেই হয়তো অজানা। কলকাতা মাঠে খেলার স্বপ্ন দেখেন বহু বাঙালি। বল পায়ে অনুশীলন শুরু করার পর অনেকেই আর ময়দান পর্যন্ত আসতে পারেন না ফুটবলার হিসেবে। অচিন্ত্য এসেছেন এবং কলকাতার ক্লাবের হয়ে খেলছেন কলকাতা ফুটবল লীগে।
হুগলী জেলার কোন্নগরের ছেলে অচিন্ত্য ঘোষ। তরুণ বয়স থেকে ফুটবলের প্রতি তার ভালোবাসা। স্থানীয় মাঠে অনুশীলন করতেন। সুযোগ পেয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলের অনূর্ধ্ব ১৯ দলে। তবে কেরিয়ারে মোড় উত্তরপাড়া নেতাজী সুভাষ ব্রিগেড। অতিমারি, লকডাউনের কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল অচিন্ত্যর ফুটবল কেরিয়ার। ফুটবল ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভাবতে হয়েছিল চাপে পড়ে। উত্তরপাড়া নেতাজী ব্রিগেডের সৌজন্যে শেষ পর্যন্ত অবশ্য খেলা ছাড়তে হয়নি। বরং নতুন করে আত্মবিশ্বাস সঞ্চয় করে নেমে পড়েছেন মাঠে। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য অচিন্ত্য। ফুটবল খেলেই যতটুকু আয়। কলকাতা ফুটবল লীগ বড় মঞ্চ। টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পর মাথায় দানা বাঁধে পরিবারে আর্থিক ভাবনা। তবুও ফুটবলটাই অচিন্ত্য ঘোষের প্যাশন। চাকরি না করে পেশাদার ভাবে এই মাঠ আশ্রয় দিয়েছে তাকে।
আপাতত তার ভাবনায় এরিয়ান ক্লাব। পরের ম্যাচ কাস্টমসের বিরুদ্ধে। দলকে জয়ের সরণিতে ফেরাতে তিনি বদ্ধপরিকর। এবারের কলকাতা লীগ দীর্ঘ। ম্যারাথন টুর্নামেন্টে প্রতিটা পয়েন্ট জরুরি। সে কথা নিজের মুখে আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন অচিন্ত্য।