ভারতের মহিলা জাতীয় ফুটবল দল অর্থাৎ ‘ব্লু টাইগ্রেস’ জন্য ছিল এক বিশেষ দিন। এদিন তাদের বেঙ্গালুরুর প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে হঠাৎ হাজির হন ভারতীয় পুরুষ ফুটবল দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri)। তার এই উপস্থিতি দলের প্রস্তুতিতে যেমন এক বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগায়, তেমনি ছেত্রী নিজেও এই তরুণ দল দেখে আনন্দিত হন।
ব্লু টাইগ্রেসরা বর্তমানে এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপ ২০২৬ বাছাইপর্বের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হবে। সুনীল ছেত্রী এদিন তাদের সঙ্গে দেখা করে শুভেচ্ছা জানান এবং অনুপ্রেরণামূলক কিছু কথা বলেন। এই উপলক্ষে নারী দলের খেলোয়াড়রা তাকে সম্মান জানিয়ে উপহার দেন একটি সই করা ভারতীয় জার্সি।
মহিলা জাতীয় দল বর্তমানে বেঙ্গালুরুর পদুকোন-দ্রাবিড় সেন্টার ফর স্পোর্টস এক্সেলেন্স ক্যাম্প করছে। তাদের কোচের দায়িত্বে রয়েছেন ক্রিসপিন ছেত্রী। এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তারা দুটি ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলবে উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে, যথাক্রমে ২৯ মে এবং ৩ জুন, বেঙ্গালুরুতেই।

সুনীল ছেত্রী আগেও দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, তবে এবার তিনি লক্ষ করেন দলে অনেক নতুন মুখ যুক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, “অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা হল। আমি যখন আগের বার এসেছিলাম, তখনকার তুলনায় এবার অনেক নতুন মুখ দেখলাম, বুঝতেই পারছি আমি অনেকটাই বয়স্ক হয়ে গেছি। কিন্তু নতুনদের মধ্যে দারুণ একটা উদ্দীপনা দেখলাম। কোচও তাদের পারফরম্যান্স নিয়ে ইতিবাচক মতামত দিয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন , “সকলেই বেশ প্রাণবন্ত ও খুশি মনে অনুশীলনে ব্যস্ত ছিল। সামনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ দুটি ম্যাচ রয়েছে উজবেকিস্তানের বিপক্ষে, তারপর শুরু হবে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব। আমি তাদের জন্য শুভকামনা জানাই। আশা করি, তারা একসঙ্গে অনুশীলন উপভোগ করবে, এবং দলীয় সংহতি বজায় রেখে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলবে।”
এই মুহূর্তে ব্লু টাইগ্রেসরা রয়েছে গ্রুপ ‘বি’তে। তাদের প্রথম ম্যাচ ২৩ জুন, মঙ্গোলিয়ার বিরুদ্ধে, থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই শহরে। এরপর তারা মুখোমুখি হবে তিমোর-লেস্তে (২৯ জুন), ইরাক (২ জুলাই) এবং শেষ ম্যাচ খেলবে স্বাগতিক থাইল্যান্ডের বিপক্ষে (৫ জুলাই)।
সুনীল ছেত্রীর মত একজন কিংবদন্তি খেলোয়াড়ের উপস্থিতি এই তরুণী ফুটবলারদের কাছে এক বিশাল উৎসাহের উৎস। ভারতের ফুটবলে তার অবদান অনস্বীকার্য এবং একজন নেতা হিসেবে তার প্রেরণামূলক কথাবার্তা নতুনদের সাহস জোগায়।
নারী ফুটবলে বর্তমানে ভারত ধীরে ধীরে উন্নতির পথে হাঁটছে। বিশেষ করে তরুণ প্রতিভাদের উৎসাহ দিতে এরকম অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের সংস্পর্শে আসা একান্ত প্রয়োজন। ব্লু টাইগ্রেসদের অনুশীলন ও আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা আরও সমৃদ্ধ করবে তাদের, যা ভবিষ্যতের বড় টুর্নামেন্টে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সামনে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নতুন মুখদের নিয়ে তৈরি এই দল কতটা সফল হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে অনুশীলন, আত্মবিশ্বাস ও অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের দিকনির্দেশনা থাকলে ব্লু টাইগ্রেসদের ভবিষ্যৎ যে উজ্জ্বল, তা বলাই যায়। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা—২৩ জুনের সেই প্রথম ধাক্কা কেমন সামলায় ভারতের মেয়েরা, তা দেখবে গোটা দেশ।