ভারতীয় ক্রিকেট তথা বিশ্বের অন্যতম সেরা কিপার-ব্যাটারের স্মরণীয় ম্যাচ স্মরণীয় করে রেখেছিল বাংলা। ইডেনে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ইনিংস ও ১৩ রানে জয়। ঋদ্ধির বিদায়ী ম্যাচে নজর কেড়েছিলেন বালুরঘাট থেকে উঠে আসা পেসার সুমিত মোহন্ত (Sumit Mohanta)। বাড়ি ফিরতেই তাঁকে নিয়ে হই হুল্লোর।
বাংলার দিক থেকে সেটি ছিল নানা দিক থেকে স্মরণীয় ম্যাচ। রঞ্জি ট্রফিতে এ মরসুমে নকআউটের সম্ভাবনা আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ইডেন গার্ডেন্সে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ ছিল। বাংলার কিংবদন্তি ঋদ্ধিমান সাহা মরসুমের শুরুর দিকেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, রঞ্জি ট্রফি খেলেই ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন। নকআউটের সম্ভাবনা না থাকায় পঞ্জাব ম্যাচটিই ঋদ্ধির বিদায়ী ম্যাচ হয়ে দাঁড়ায়। আর সেই ম্যাচেই অভিষেক হয়েছিল পেসার সুমিত মোহন্তর। ভারতীয় ক্রিকেট তথা বিশ্বের অন্যতম সেরা কিপার-ব্যাটারের স্মরণীয় ম্যাচ স্মরণীয় করে রেখেছিল বাংলা। ইডেনে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ইনিংস ও ১৩ রানে জয়। ঋদ্ধির বিদায়ী ম্যাচে নজর কেড়েছিলেন বালুরঘাট থেকে উঠে আসা পেসার সুমিত মোহন্ত। বাড়ি ফিরতেই তাঁকে নিয়ে হই হুল্লোর।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে রঞ্জি ট্রফিতে খেলার সুযোগ সুমিত মোহন্তর। আর প্রথম ম্যাচেই জাত চিনিয়েছেন। একজন পেসারের মতো আদর্শ উচ্চতা। গতিও ভালো। সুইংও রয়েছে। সুমিত প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে ইনিংস শুরু করেছেন ৪ উইকেট দিয়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৩ উইকেট। অভিষেক ম্যাচে সব মিলিয়ে ৭ উইকেট। বাংলার ক্রিকেট প্রেমীদের অনেকেরই আক্ষেপ, আরও কয়েক ম্যাচ আগেই যদি অভিষেক হত, হয়তো এরকম বেশকিছু স্পেল দেখার সুযোগ মিলত। আগামী মরসুমের অপেক্ষা।
বাড়ি ফেরার পর বালুরঘাটের ছেলে সুমিতকে নিয়ে পরিবারের পাশাপাশি এলাকার সকলের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠাই স্বাভাবিক। বাড়ি ফিরতেই বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও তাকে সংবর্ধিত করা হয়। শুধু পরিবারই নয়, পাড়া প্রতিবেশীদের কেউ নিজে হাতে পিঠে তৈরি করে আবার কেউ মিষ্টি খাইয়ে সুমিতকে অভ্যর্থনা জানাতে ব্যস্ত। বালুরঘাটে সুমিতের বেড়ে ওঠা আর এখানেই তার ক্রিকেট শেখা। পরে অবশ্য কলকাতায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন।
সুমিত বাড়ি ফিরে বলেছেন, ‘এরকমভাবে স্বাগত জানানো হবে প্রত্যাশাই করিনি। খুবই ভালো লাগছে। প্রথম যখন কলকাতা যাই, ক্লাব ক্রিকেট খেলার সময় মহম্মদ সামি এসেছিলেন। সামিকে দেখে প্রেরণা পেয়েছিলাম। মনে হয়েছিল, আরও একটু পরিশ্রম করতে পারলে হয়তো সেই জায়গায় যেতে পারি। এতদিন পর কিছুটা হলেও ফল পেলাম। এখনও অনেক পথ যাওয়া বাকি রয়েছে। ইচ্ছে রয়েছে, যাতে আইপিএলেও সুযোগ পাই। তবে এগোতে হলে পরিশ্রম আরও বাড়াতে হবে। আরও উন্নতির প্রয়োজন ছিল।’
পাড়া ক্রিকেট খেলার সময় অবশ্য এতকিছু ভাবেননি। ধীরে ধীরে জেলা ক্রিকেটে খেলার সুযোগ। এরপর বাংলার অনূর্ধ্ব ১৯ শিবির। অনেকটা পথ পেরিয়ে এ বার বাংলা দলের হয়ে সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতায় খেলার সুযোগ। সুমিতের স্বপ্ন আরও বড়। তেমনই বালুরঘাটেরও।