আগের মরসুমে দাপুটে ফুটবল খেললে ও চূড়ান্ত সাফল্য পায়নি জামশেদপুর এফসি (Jamshedpur FC)। গতবারের কলিঙ্গ সুপার কাপে শক্তিশালী নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে পরাজিত করার পর ট্রফি নির্ণায়ক ম্যাচে জয় পাওয়ার লক্ষ্য থাকলেও খুব একটা সুবিধা করা সম্ভব হয়নি। বিরাট বড় ব্যবধানে পরাজিত হতে হয়েছিল মানোলো মার্কুয়েজের এফসি গোয়ার কাছে। সেই হতাশা কাটিয়ে নতুন সিজনে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া ইস্পাত নগরীর এই ফুটবল ক্লাব। সেজন্য অনেক আগে থেকেই ঘর গোছাতে শুরু করে দিয়েছিল ম্যানেজমেন্ট। বিদেশিদের পাশাপাশি সমান নজর দেওয়া হয়েছিল ভারতীয় ফুটবলারদের ক্ষেত্রে। শেষ কিছু সপ্তাহ ধরে সেইমতো একাধিক দেশীয় ফুটবলারদের যুক্ত করতে শুরু করেছিল ম্যানেজমেন্ট।
তবে শুধুমাত্র ফুটবলার নয়। এবারের এই সিজনে হেড কোচের দায়িত্বে আদৌও খালিদ জামিল থাকবেন কিনা সেই নিয়ে ও দেখা দিয়েছিল ঝোঁয়াশা। আসলে গত কয়েক মাস ধরেই শোনা যাচ্ছিল যে ভারতীয় ফুটবল দলের দায়িত্বে হয়তো দেখা যেতে পারে জামশেদপুর এফসির কোচ খালিদ জামিল। শেষ পর্যন্ত সমস্ত জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এই ভারতীয় কোচের হাতেই দায়িত্ব তুলে দিয়েছে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। যারফলে ভারতীয় ক্লাব ফুটবলের ক্ষেত্রে জামশেদপুরের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না খালিদ। এই কোচের তত্ত্বাবধানে দলের যে অগ্রগতি ঘটেছে সেই নিয়ে প্রশংসা করার পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে তাঁর সহকারীর হাতে।
ক্লাবের তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে “জামশেদপুর ফুটবল ক্লাব প্রধান কোচ খালিদ জামিলের সাথে পারস্পরিক সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।খালিদকে ভারতীয় জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান কোচ হিসেবে নির্বাচিত করার বিষয়টি ক্লাব খেলোয়াড়, কর্মী, সমর্থক এবং ভারতীয় ফুটবল সম্প্রদায়ের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত। কারণ একজন ভারতীয় কোচ এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জনের দিকে পরিচালিত করার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, আমরা বিশ্বাস করি যে এই চ্যালেঞ্জ পূরনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন। জেএফসিতে যোগদানের পর থেকে, খালিদ দুবার ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে এআইএফএফ পুরুষদের বর্ষসেরা কোচ নির্বাচিত হয়েছেন।”
তাঁদের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “খালিদের অসাধারণ দুই বছরের যাত্রা শুরু হয়েছিল যখন ক্লাব তাকে সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে, একটি চ্যালেঞ্জিং পর্যায়ে নিজেকে প্রমাণের জন্য প্ল্যাটফর্ম দিয়েছিল। মাত্র এক সপ্তাহের প্রস্তুতির মাধ্যমে, তিনি জেএফসিকে ২০২৪ সালের এআইএফএফ সুপার কাপের সেমিফাইনালে নিয়ে যান এবং ইতিবাচক লক্ষণ সহ মোটামুটি সফল আইএসএল অভিযানে নেতৃত্ব দেন। এর পরে, ক্লাব তাঁকে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে আস্থাশীল করে। মরসুমের উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে লড়াই করে, তিনি ক্লাবকে ২০২৪-২৫ সালে আইএসএল সেমিফাইনালে পৌঁছাতে সাহায্য করেছিলেন, ২০২৫ সালে কলিঙ্গ সুপার কাপে রানার-আপ হয়েছিলেন এবং বর্তমানে ২০২৫ সালের ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছেন। খালিদ কঠোর পরিশ্রম এবং ভারতের জন্য একটি ঐতিহ্যবাহী বার্তার মাধ্যমে দায়িত্ব ছাড়ছেন। জামশেদপুর ফুটবল ক্লাব খালিদ এবং অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনকে এই প্রচেষ্টার দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।”
বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে দলের দায়িত্বে আসছেন স্টিভেন ডায়াস। গত মরসুমে খালিদের সহকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। এবারের ঐতিহ্যবাহী ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে তাঁর উপরেই ভরসা রাখছে একবারের শিল্ড জয়ীরা।