মুম্বইকে ১২ রানে হারাল বেঙ্গালুরু, ক্রুনাল পান্ডিয়ার হাতে চার উইকেট

RCB vs MI: ক্রুনাল পান্ডিয়ার দুর্দান্ত বোলিংয়ের জোরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে ১২ রানে পরাজিত করে এই মরসুমে তাদের তৃতীয় জয় নথিভুক্ত করেছে।…

RCB to 12-Run Win Over MI

RCB vs MI: ক্রুনাল পান্ডিয়ার দুর্দান্ত বোলিংয়ের জোরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে ১২ রানে পরাজিত করে এই মরসুমে তাদের তৃতীয় জয় নথিভুক্ত করেছে। সোমবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে খেলা এই ম্যাচে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে আরসিবি ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২২১ রানের বড় স্কোর গড়ে। জবাবে মুম্বই নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২০৯ রান তুলতে সমর্থ হয়। ২০১৫ সালের পর এই মাঠে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে আরসিবির এটাই প্রথম জয়। এই জয়ের মধ্য দিয়ে বেঙ্গালুরু তাদের সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে সক্ষম হয়েছে।

আরসিবির ব্যাটিংয়ে দাপট

ম্যাচের শুরু থেকেই আরসিবি ব্যাটাররা আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন। ওপেনিং জুটি দলকে শক্ত ভিত্তি দিয়ে শুরু করে। অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি এবং বিরাট কোহলি শুরুতে দ্রুত রান তুলে মুম্বইয়ের বোলারদের চাপে ফেলে দেন। কোহলি তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত, এবং আজও তিনি দলের প্রধান ভরসা ছিলেন। মিডল অর্ডারে রজত পতিদার এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ক্যামিও ইনিংস দলের স্কোরকে ২২০-এর উপরে নিয়ে যায়। শেষ ওভারগুলিতে দিনেশ কার্তিকের ফিনিশিং টাচ আরসিবির স্কোরকে আরও শক্তিশালী করে। মুম্বইয়ের বোলারদের মধ্যে জসপ্রীত বুমরাহ এবং আকাশ মাধওয়াল কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও, আরসিবির ব্যাটিং লাইনআপের সামনে তাদের প্রচেষ্টা বিফলে যায়।

ক্রুনাল পান্ডিয়ার বোলিং ম্যাজিক

ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব যায় ক্রুনাল পান্ডিয়ার হাতে। তার ঘাতক বোলিং মুম্বইয়ের ব্যাটিং লাইনআপকে ধ্বসিয়ে দেয়। ৪ ওভারে মাত্র ২৮ রান দিয়ে ৪টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন তিনি। মুম্বইয়ের শীর্ষস্থানীয় ব্যাটারদের মধ্যে রোহিত শর্মা এবং ঈশান কিষাণের উইকেট তার শিকারে পরিণত হয়। ক্রুনালের স্পিনের সামনে মুম্বইয়ের ব্যাটাররা দিশেহারা হয়ে পড়ে। তার নিয়ন্ত্রিত বোলিং এবং সঠিক লাইন-লেঙ্থ ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আরসিবির অন্যান্য বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ সিরাজ এবং যশ দয়ালও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, যারা মুম্বইয়ের মিডল অর্ডারকে ধরাশায়ী করে দেয়।

মুম্বইয়ের ব্যাটিং ধস

২২২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মুম্বই শুরু থেকেই চাপে পড়ে। রোহিত শর্মা এবং ঈশান কিষাণ দ্রুত রান তুলতে শুরু করলেও, ক্রুনালের স্পিনের সামনে তাদের ইনিংস বেশিদূর এগোয়নি। মিডল অর্ডারে হার্দিক পান্ডিয়া এবং তিলক বর্মা কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করেন, কিন্তু আরসিবির বোলারদের নিয়ন্ত্রিত আক্রমণের সামনে তারা ব্যর্থ হন। শেষ দিকে টিম ডেভিড এবং রোমারিও শেফার্ডের ক্যামিও ইনিংস মুম্বইকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গেলেও, শেষ পর্যন্ত তারা ১২ রানে পিছিয়ে পড়ে। মুম্বইয়ের ব্যাটিং লাইনআপের এই ব্যর্থতা তাদের সমর্থকদের হতাশ করেছে।

Advertisements

ম্যাচের তাৎপর্য

এই জয় আরসিবির জন্য একটি বড় মাইলফলক। ২০১৫ সালের পর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে এটি তাদের প্রথম জয়। এই মাঠে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স সবসময়ই শক্তিশালী দল হিসেবে পরিচিত, তাই এই জয় আরসিবির আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। মরসুমের শুরুতে কিছুটা হোঁচট খাওয়ার পর বেঙ্গালুরু এখন জয়ের ধারায় ফিরেছে। অন্যদিকে, মুম্বইয়ের জন্য এই হার তাদের প্লে-অফের পথে একটি ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

খেলোয়াড়দের প্রতিক্রিয়া

ম্যাচ শেষে ক্রুনাল পান্ডিয়া বলেন, “আমি আমার ভূমিকা পালন করতে পেরে খুশি। দলের জয়ে অবদান রাখা সবসময়ই ভালো লাগে। মুম্বইয়ের ব্যাটারদের চাপে রাখাই আমার লক্ষ্য ছিল।” আরসিবি অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি বলেন, “এই জয় আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ক্রুনালের বোলিং এবং ব্যাটারদের দায়িত্বশীল ইনিংস আমাদের জয় এনে দিয়েছে।” মুম্বইয়ের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “আমরা ভালো শুরু করেছিলাম, কিন্তু মিডল ওভারে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাই। আমাদের আরও ভালো করতে হবে।”

এই ম্যাচে আরসিবি তাদের দলগত শক্তি এবং কৌশলের প্রমাণ দিয়েছে। ক্রুনাল পান্ডিয়ার বোলিং এবং ব্যাটারদের দাপটে তারা মুম্বইকে হারিয়ে মরসুমে নিজেদের অবস্থান শক্ত করেছে। অন্যদিকে, মুম্বইয়ের জন্য এই হার তাদের দুর্বলতা প্রকাশ করেছে। আগামী ম্যাচগুলিতে দুই দলই আরও ভালো পারফরম্যান্সের জন্য মরিয়া থাকবে।