Sports desk: সাড়ে চার বছর পর বিগত টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ টিম ইন্ডিয়ার স্কোয়াডে এসে নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে সকলেকে তাক লাগিয়ে দেন স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। “ক্রিকেটের ভগবান” সচীন রমেশ তেন্ডুলকর বিশ্বকাপে অশ্বিনের ডেলিভারিতে নতুনত্ব’র ছোঁয়া দেখে ভূয়সী প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন।
গোটা টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অশ্বিনের নজর কাড়া পারফরম্যান্স নিয়ে ইতিমধ্যেই জোর আলোচনা শুরু হয়েছে শুধু ভারতীয় ক্রিকেট মহলেই নয়, বিশ্ব ক্রিকেট মহলেও। অশ্বিন কতদূর পৌছতে পারবে,মুত্থাইয়া মুরলিধরনের রেকর্ড ভাঙতে পারবে চর্চ্চা চলছে জোরকদমে। অবশ্য অশ্বিন নিজে মুরলিধরনের রেকর্ড ভাঙা প্রসঙ্গে কৌশলী অবস্থানে চাপ মুক্ত রাখতে চাইছে। এমন একটা আবহে ভারত এখন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তিন টেস্ট এবং সম সংখ্যক ওডিআই সিরিজ খেলতে, এই ক্ষণে দাঁড়িয়ে ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন বোমা ফাটিয়েছে নিজের আন্তজার্তিক ক্রিকেট কেরিয়ার প্রসঙ্গে।
ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা ক্রিকেট আঙিনায়। বিস্ফোরক স্বীকারোক্তিতে রবিচন্দ্রন অশ্বিন সাফ করে দিয়ে বলেন,” ২০১৮ সালে, তিনি অবসর নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে ভেবেছিলেন”। বর্তমানে দুরন্ত ফর্মে থাকা অশ্বিন বলেন, “একটা সময় ছিল যখন তিনি এক ওভারের ছয় বল করার পর ক্লান্ত বোধ করতেন”।
এই বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি প্রসঙ্গে অশ্বিন নিজের ক্রিকেট কেরিয়ার বিশ্লেষণ ব্যাখা করতে গিয়ে বলেন,” তিনি তার কৌশল পরিবর্তন করেছেন, তারপরে তিনি আবার সাফল্য পেতে শুরু করেছেন”।
নিজের বিস্ফোরক স্বীকারোক্তিতে অশ্বিন বলেন “২০১৮ এবং ২০২০’র মধ্যে আমি বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করে গেমটি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। আমি ভেবেছিলাম, ‘আমি অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু সক্ষম হইনি।”
এক সাক্ষাৎকারে রবিচন্দ্রন অশ্বিননের বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি চাঞ্চল্য ছড়ানো প্রসঙ্গে অশ্বিন মুখ খুলে বলেন, এই সময়ে আমি অনেক বিষয়ে কাজ শুরু করেছি। অশ্বিন জানান, “যখন হাঁটুতে ব্যথা হয়, তখন আমি নিচুতে লাফ দিতে শুরু করি এবং যদি আমি নিচে লাফ দেই, সমস্ত জোর আমার পিঠে এবং কাঁধে দিতে হয়”।
নিজের চোট প্রসঙ্গে স্বীকারোক্তিতে অকপট অশ্বিন খোলসা করে জবাব,”তৃতীয় ডেলিভারিতে বোলিং করার সময় কনুই’র ব্যবহার করার চেষ্টা করা অতিরিক্ত সাইড-অন হতে পারে। আমি ছয় বল খেলেই ক্লান্ত হয়ে পড়তাম, তখন আমার বিরতি দরকার ছিল”।
চোটের কারণে নিজের যন্ত্রণার কথা আক্ষেপের ঢঙে অশ্বিন বলেন, আমার চোট নিয়ে লোকজনকে খুব একটা চিন্তিত মনে হয়নি। আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে অনেক খেলোয়াড় এভাবে চোটের পরে সমর্থন পান কিন্তু কেন আমি তা পাইনি জানি না! কারো সাহায্য নেওয়ার অভ্যাস আমার নেই, একটা সময়ের জন্য অনুভব করলাম এখন সাপোর্ট ছাড়া এগোতে পারব না।
অশ্বিন এও বলেন, আমি বুঝতে পেরেছি যে এখন আমাকে অন্য কিছু চেষ্টা করতে হবে। এই প্রসঙ্গে অশ্বিন আরও বলেন, ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরের পরে অবসর নেওয়ার কথা ভেবেছিলেন, যখন তিনি আবার চোট পেয়েছিলেন।
বিস্ফোরক ওই স্বীকারোক্তিতে অশ্বিন পরিষ্কার করেছেন,অশ্বিন বলেছেন, “ইংল্যান্ড সফরে ২০১৮ সিরিজের সাউদাম্পটনের পরে, একই রকম একটি পর্যায় ছিল, ওই বছরের পরে অস্ট্রেলিয়ায় আমি সিডনির আগে এবং অ্যাডিলেড টেস্টের পরে ইনজুরিতে পড়েছিলাম। ওই সময়েও ক্রিকেট কেরিয়ার থেকে সন্ন্যাস নিয়ে চিন্তাভাবনা আসতে শুরু করে”।
নিজের আন্তজার্তিক ক্রিকেট কেরিয়ারের ব্যাডপ্যাচে’র মুহুর্তকে তলিয়ে দেখতে গিয়ে বিস্ফোরক ভঙ্গিতে মন ছুঁয়ে যাওয়া স্বীকারোক্তিতে অশ্বিন পরিবারের অবদানকে কুর্নিস জানিয়ে বলেন, “আমি কেবল আমার স্ত্রীর সাথে এই বিষয়ে কথা বলতাম তবে আমার বাবা বলেছিলেন যে তুমি অবশ্যই সাদা বলের ক্রিকেটে ফিরবে” এবং হৃদয়ের অতি স্পর্শকাতর মুহুর্তের স্মরণে অশ্বিন নিজের মুখেই বলেন,”আমি(বাবা) মারা যাওয়ার আগে আমি তোমাকে আবার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খেলতে দেখতে চাই”।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তিন টেস্ট ম্যাচের সিরিজে বোলিং’এ নিজের সেরাটা নিঙড়ে দিতে অশ্বিন এখন ব্যাকুল এই কারণেই যে গত সোমবার শ্রেয়স আইয়ার বিসিসিআই টুইটে আসন্ন প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্টস পার্কের পিচের চরিত্রের আভাস প্রসঙ্গে বলেন,”পিচ ভেজা রয়েছে,তাই বল ঘুরতে পারে প্রথম দিকে” এমন একট সম্ভাবনা সামনে আসতেই ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ‘বক্সিং ডে’ টেস্টে কতটা জোরে নিজের পাখনা মেলে প্রোটিয়ার্সদের শুরুতে আঘাত করতে পারে(উইকেট তুলে নিতে পারে), ওইদিকেই তাকিয়ে গোটা ক্রিকেট মহল।