ভারতীয় ফুটবল দলের সাম্প্রতিক হতাশাজনক পারফরম্যান্স, বিশেষ করে এএফসি এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারে হংকংয়ের কাছে ০-১ গোলে পরাজয় এবং তার আগে থাইল্যান্ডের কাছে ৩-০ গোলে প্রীতি ম্যাচে হার, ভক্তদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। বেঙ্গালুরু এফসি-র সহ-মালিক এবং জেএসডব্লিউ স্পোর্টসের প্রধান পার্থ জিন্দাল (Parth Jindal) অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের (AIFF) প্রতি তীব্র সমালোচনা করে একটি নতুন প্রধান কোচ নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি ভারতীয় ফুটবলের নেতৃত্ব এবং কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। জিন্দালের এই প্রতিক্রিয়া ভারতীয় ফুটবল ভক্তদের মনোভাবের প্রতিফলন। দীর্ঘদিন ধরে দলের গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ব্যর্থতার সাক্ষী হয়ে আসছেন।
জিন্দাল তাঁর পোস্টে লিখেছেন, “এটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য
@IndianFootball
– কোনো পরিস্থিতিতেই এটা যথেষ্ট নয়। এআইএফএফ-এর গভীর আত্মসমীক্ষার প্রয়োজন। আমরা যারা ভারতীয় ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা এবং সমর্থন দিয়ে আমাদের কষ্টার্জিত অর্থ ও প্রচেষ্টা বিনিয়োগ করেছি, তারা এমন ফলাফল দেখতে চাই না। একজন কার্যকর কোচ এবং ব্যবস্থা নিয়ে আসুন – এখনই সময়। এমন ফলাফলের জন্য আমরা এত প্রচেষ্টা করিনি।”
হংকংয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচে ভারত ইনজুরি টাইমে রক্ষণভাগের একটি ভুলের কারণে পরাজিত হয়। গোলরক্ষক বিশাল কৈথ বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে হংকংয়ের ফরোয়ার্ড মাইকেল উদেবুলুজোরের উপর ফাউল করেন, যার ফলে রেফারি তৎক্ষণাৎ পেনাল্টি প্রদান করেন। ৯০+৪ মিনিটে স্টেফান পেরেইরা শান্তভাবে পেনাল্টি থেকে গোল করে হংকংয়ের জয় নিশ্চিত করেন।
ভারতের পক্ষে সুযোগের অভাব ছিল না। প্রথমার্ধে লিস্টন কোলাকোর পাস থেকে আশিক কুরুনিয়ান একটি সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন। কিন্তু সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোর মতোই, ভারত তাদের আধিপত্যকে গোলে রূপান্তর করতে ব্যর্থ হয়। প্রধান কোচ ইগর মার্কেজের সুনীল ছেত্রীকে প্রথম একাদশে না রাখার সিদ্ধান্তও ভক্তদের মধ্যে প্রশ্ন তুলেছে। অবসর থেকে ফিরে আসা ছেত্রী দলের আক্রমণভাগকে শক্তিশালী করতে পারতেন, কিন্তু তাঁর বদলি লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হন। মিডফিল্ডও ম্যাচের বেশিরভাগ সময় সংযোগহীন ও অনুপ্রেরণাহীন দেখায়।
এই পরাজয় ভারতীয় ফুটবল দলের জন্য শুধু ফলাফলের দিক থেকেই নয়, কৌশলগত স্পষ্টতা এবং দলের মনোবলের দিক থেকেও গভীর সংকট তৈরি করেছে। এশিয়ান কাপের কোয়ালিফিকেশনের আশা এখন সুতোর উপর ঝুলছে। কোচিং স্টাফ এবং এআইএফএফ-এর নীতি-নির্ধারণের প্রতি গুরুতর প্রশ্ন উঠছে।
