চোখ ধাঁধানো ফুটবলের মধ্যে দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করার পরিকল্পনা ছিল ওডিশা এফসির (Odisha FC)। সেইমতো নিজেদের দল সাজিয়েছিল এই ফুটবল ক্লাব। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। পরাজিত হতে হয়েছিল লিগের টানা দুইটি ম্যাচ। যা নিঃসন্দেহে হতাশ করেছিল সমর্থকদের। তবে ম্যাচ এগোনোর সাথে সাথেই ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল জগন্নাথ ধামের এই ফুটবল দল। গত বছরের শেষের দিকে দুর্বল মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে অমীমাংসিত ফলাফলে ম্যাচ শেষ করলেও নতুন বছর থেকেই একেবারে দুরন্ত ছন্দে ধরা দিয়েছিল সার্জিও লোবেরার ছেলেরা। সহজেই তাঁরা পরাজিত করেছিল মানোলো মার্কুয়েজের ছেলেদের।
পরবর্তী ম্যাচে চেন্নাইয়িন এফসির সঙ্গে পয়েন্ট নষ্ট করতে হলেও ঘুরে দাঁড়াতে খুব একটা সমস্যা হয়নি ওডিশার। অনায়াসেই তাঁরা আটকে দিয়েছিল কেরালা ব্লাস্টার্সকে। তারপর সেই ছন্দ বজায় রেখেই বেঙ্গালুরু এফসিকে টেক্কা দিয়েছিল মুর্তাজা ফলরা। যা নিঃসন্দেহে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে গোটা দলের। এই ছন্দ বজায় রেখেই হুয়ান পেদ্রো বেনালির নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিপক্ষে তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করার লক্ষ্য থাকলেও সেটা বাস্তবায়িত হয়নি। এক পয়েন্ট নিয়েই খুশি থাকতে হয়েছিল ওডিশা দলকে। স্বাভাবিকভাবেই কঠিন হয়ে উঠতে শুরু করেছিল সুপার সিক্সের লড়াই। কিন্তু তবুও লিগের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত নক আউট নিশ্চিত করতে মরিয়া ছিল হুগো বুমোসরা।
কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শেষ পর্যন্ত ছিটকে যেতে হয়েছিল টুর্নামেন্ট থেকে। তারপর কলিঙ্গ সুপার কাপে প্রভাব ফেলার লক্ষ্য থাকলেও সেটা সম্ভব হয়নি। ছিটকে যেতে হয়েছিল টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে। গত বছর এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেললেও এবার কিনা প্রথম ম্যাচেই বিদায় নেয় ওডিশা। এই ধাক্কা কাটিয়ে নয়া সিজনে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্য সকলের। তাই অনেক আগে থেকেই ঘর গোছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছিল ম্যানেজমেন্ট। এক্ষেত্রে নয়া ফুটবলার সই করানোর পাশাপাশি বেশ কিছু বদল আসতে চলেছে কোচিং স্টাফেদের মধ্যে। সেই মর্মে এবার দলের এক বিদেশি কোচের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করল আইএসএলের এই ফুটবল ক্লাব।
তিনি মানু প্যাট্রিসিয়াস। গত ২০২১ সাল থেকে ওডিশা এফসির গোলকিপার কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন এই আর্জেন্টাইন তারকা। এবার তাঁকে বিদায় জানাল ম্যানেজমেন্ট। ঘন্টা কয়েক আগেই নিজেদের সোশ্যাল সাইটে সেই সংক্রান্ত একটি পোস্ট করে সেখানে লেখা হয় ” মানু প্যাট্রিসিওর সাথে আমাদের যাত্রা সত্যিই অসাধারণ ছিল। গত ২০২২-২৩ সালে আমাদের প্রথম আইএসএল প্লে-অফ যোগ্যতা অর্জন থেকে শুরু করে, ২০২৩ সালে সুপার কাপ জেতা, ২০২৩-২৪ সিজনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছানো। ২০২৩-২৩ সুপার-২৪ রানার্স-২৪-এ প্রথমবারের মতো আইএসএল সেমিফাইনালিস্ট হওয়া, ফিনলিংগা-২ কাপ পর্যন্ত আমাদের টেকনিক্যাল টিমের অংশ হিসেবে আপনার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ, মানু। তোমার পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য শুভকামনা।”