শুধু হরমনপ্রীত নয়, আম্পায়ারের সাথে মাঠেই বিবাদে জড়ান আরো দুই ভারতীয়

সাধারণত বলা হয় আম্পায়াররাই শেষ কথা বলে। মাঠে তাঁরাই ভগবানতূল্য। যখন বলা হয়, “খেলার চেয়ে বড়ো কিছু নেই,” কতকটা অজান্তেই ক্রিকেটের সমার্থক হয়ে যান আম্পায়াররা। কিন্তু তাই বলে তাঁরা কি সবসময় ঠিক সিদ্ধান্ত নেন? বছরের পর বছর শিখে পড়ে আন্তর্জাতিক মহলে এসে বিশেষত নির্ধারক ম্যাচগুলিতে যখন একটুও এদিক ওদিক সিদ্ধান্ত কি সত্যিই আশা করা যায়? আম্পায়ারদের একটা ভুল সিদ্ধান্তে ঘুরে যেতে ম্যাচের ফলাফল। ঘরে মাইক হাতে মাথা নাড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে “ঠিক হয়নি, ব্যান করে দাও” বলা যতটা সহজ, হয়তো মাঠে দাঁড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কিছূ ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হয়েও মাথা ঠান্ডা রাখা হয়তো ততটা সহজ নয়।

Advertisements

সম্প্রতি মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে খুশি না হয়ে উইকেট ভেঙে দেওয়া নিয়ে এবং জনসমক্ষে আম্পায়ারিংকে “হতাশাজনক” বলায় তুলোধনা করা হচ্ছে হরমনপ্রীত কৌরকে। বাংলাদেশী সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি ভারতের প্রাক্তনীরা বেশ সোচ্চার হয়েছেন তাঁকে খেলা থেকে নিষিদ্ধ করে দেওয়ার জন্য। এ তো গেল মহিলা দল। এবার আশা যাক সেই দু’বার যখন ভারতের পুরুষ ক্রিকেট দলের দুই অধিনায়ক মাঠেই আম্পায়ারের সাথে জড়িয়ে পড়েন বিবাদে।

এম এস ধোনি বনাম বিলি বাউডেনইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (IPL 2023) শুরু হতে এক মাসেরও কম বাকি। ১৬ তম সিজনের জন্য ভক্তরা খুব উত্তেজিত দেখাচ্ছে। শুধু তাই নয়, অনেক ভারতীয় ভক্ত অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক এমএস ধোনির (Ms dhoni)

“ক্যাপ্টেন কুল” নামেই বহুল ভাবে জনপ্রিয় মহেন্দ্র সিংহ অধিনায়ক থাকাকালীন একবার মেজাজ হারান বিলি বাউডেনের ওপর। ২০১২ কমনওয়েলথ ব্যাঙ্ক সিরিজ চলছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে। সেদিন ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া- সুরেশ রায়না বল করলেন। মাইকের হাসি এগিয়ে গিয়ে ডিফেন্ড করতেই বল হাতে পেয়েই বেল ফেলে দেন ধোনি। থার্ড আম্পায়ার আউট ঘোষণা করলে ক্রিজ ছেড়ে এগোতেও থাকেন হাসি। কিছুদুর এগোতেই তাঁকে ডেকে নেন বাউডেন। এতেই ধোনি যান ক্ষেঁপে। বাউডেন যানান যে ভুল বোতাম টিপেছেন থার্ড আম্পায়ার। বাউডেন নিজেও ঠান্ডা মাথার মানুষ। ভালো ভাবে বোঝাবার চেষ্টা করলেও ধোনির রাগ নামে না কিছুতেই।

ব্যাপার হল, ম্যাচে ডিসপ্লে রিভিউ সিসটেম উপলব্ধ ছিল না। ফলে কি হচ্ছে, তা ধোনি বা হাসি, কেউই দেখতে পাননি। স্টাম্প আউট করার ঠিক আগে অল্প এগিয়ে গেলেও বেল ফেলার সময় ক্রিজে পা ছিল হাসির। ফলে আউট ছিলেন না হাসি। এদিকে ধোনি ভাবছেন আউট করেছেন। এই নিয়েই বাদানুবাদ চলতে থাকে, যা গড়ায় সাংবাদিক সম্মেলনেও। পরে অবশ্য হাসি ব্যাটও করেন।

Advertisements

২০১৮/১৯ বিরাট কোহলিVirat Kohli

বিরাট কোহলির সাথে “ঠান্ডা মাথা” কখনোই চলে না। চিরকালই আগ্রাসন দেখানোর জন্য নানা জায়গায় নানারকম বিপাকে পড়েছেন কোহলি। এমনি একদিন বৃষ্টির মধ্যে ম্যাচ কেন হবে, এই নিয়ে আম্পায়ারের ওপর মাঠেই চোটে গেলেন তিনি। তবে এ ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একেবারে অযৌক্তিক বলা চলে না। ২০১৮/১৯ অস্ট্রেলিয়া সফরে একটি টি-২০ ম্যাচ চলাকালীন হঠাৎই ঝমঝম করে বৃষ্টি নামে। মানুষজন এদিকে ছাতা খুলে দাঁড়িয়ে আছে, অথচ আম্পায়ার খেলা থামাচ্ছেন না।

আউটফিল্ড ভিজে, বল ভিজে, খলিল আহমেদকে কিপারের পিছনে একটি চারও মেরে দেন অ্যনড্রু টাই। বার বার বৃষ্টির কথা বলা সত্ত্বেও মাঠের আম্পায়াররা খেলা থামাতে নারাজ হন, তাতেই রেগে যান অধিনায়ক বিরাট কোহলি।

ভোল বোতাম হোক বা খেলা চালানোরতন অনুকূল পরিস্থিতির অভাবেও খেলা চালানো হোক, বা বিন্দু মাত্র বিবেচনা না করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়াই হোক, কটা ডিমেরিট পয়ন্ট লেখা হয় এই “ক্রিকেট ভগবান” -দের নামে? বিশেষজ্ঞরা সেই নিয়ে প্রশ্নপত্র বানায় না বোধহয়!