Neeraj Chopra: ভাষাগত বিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী নীরজ চোপড়া

মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ। বিশ্বের নানা প্রান্তে নানা ভাষা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সকলের কাছেই নিজ নিজ মাতৃভাষার কোনও বিকল্প নেই। মাতৃভাষার মাধ্যমে অধিকার রক্ষা,অধিকার প্রতিষ্ঠা করা অন্যতম…

Neeraj Chopra

মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ। বিশ্বের নানা প্রান্তে নানা ভাষা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সকলের কাছেই নিজ নিজ মাতৃভাষার কোনও বিকল্প নেই। মাতৃভাষার মাধ্যমে অধিকার রক্ষা,অধিকার প্রতিষ্ঠা করা অন্যতম হাতিয়ার। তাই খান সেনারা (পশ্চিম পাকিস্তান) যখন বাংলা ভাষা ভাষিদের ওপর (পূর্ব পাকিস্তান অধুনা বাংলাদেশ) নির্মম অত্যাচার শুরু করে এমম অবস্থায় হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে মাতৃভাষা বাছানোর সংকল্পে একত্রিত হয়ে মুক্তি আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে।বাংলা ভাষাকে দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদা প্রদানের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে হাজার হাজার বাঙালি তরুণ তরুণী হাতে কালাশনিকভ তুলে নিয়েছিল।রক্ত আর জীবন বলিদানের বিনিময়ে ছিনিয়ে নিয়েছিল মাতৃভাষার অধিকার। আর ওই মুক্তি আন্দোলনকে কুর্নিশ জানিয়ে বিশ্ব মঞ্চ রাষ্ট্রসংঘ ২১ ফেব্রুয়ারি তারিখটিকে আন্তজার্তিক ‘মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে।

‘শহীদের বলিদান হবে না কো ব্যর্থ’ এটা শুধুমাত্র একটা লড়াই-আন্দোলন অধিকার প্রতিষ্ঠার মন্ত্রই নয়,এর সাথে আবেগ জড়িয়ে। তাই বিশ্ব ক্রীড়া মঞ্চে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার পরেও ভারতীয় জ্যাভেলিন থ্রোয়ার নীরজ চোপড়াকে মাতৃভাষার সম্মান রক্ষার তাগিদে প্রতিবাদী চরিত্র হয়ে উঠতে হয়।

ভারতীয় জ্যাভেলিন থ্রোয়ার নীরজ চোপড়ার কথায়,”আমি জানি আমার ইংরেজি নিখুঁত নয় কিন্তু আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। অ্যাথলেটিক্স একটি বিশ্বব্যাপী খেলা এবং আমি সবার কাছে পৌঁছাতে চাই। আমি জানি যে আমি সব জায়গায় অনুবাদক খুঁজে পাচ্ছি না তাই আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি।” এখানেই থেমে না থেকে ভারতীয় এই জ্যাভেলিন থ্রোয়ার সর্বোচ্চ লক্ষ্যভেদ করার টেম্পারমেন্ট বজায় রেখে বলেন,”যতক্ষণ নীরজ সবচেয়ে বড় স্টেজে ডেলিভারি করতে থাকবে, প্রয়োজন হলে বিশ্ব হিন্দি শিখবে!”

ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ী বিরোধী দলের আসনে বসার সময়ে ভারত সরকারের প্রতিনিধি হিসেনে রাষ্ট্রসংঘে দাঁড়িয়ে হিন্দি ভাষাতে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান রেখেছিলেন বিশ্ব মঞ্চে। তা নিয়ে কোনও বিতর্ক বাধে নি। শুধুমাত্র একজন অনুবাদক না থাকার কারণে সবথেকে বড় বিষয় হল মাতৃভাষার মাধ্যমে বিশ্ববাসীর ড্রইং রুমে পৌঁছানোর তুচ্ছ অভিযোগ তুলে যেভাবে গোটা বিতর্ক এবং এর প্রতিক্রিয়াতে ভারতীয় জ্যাভেলিন থ্রোয়ার নীরজ চোপড়াকে প্রতিবাদে মুখ খুলতে হল তা এককথায় মাথা হেট করে দেয়। সমাজ জীবনে এখনও বৈষম্য কায়েমের কালো হাত সদা তৎপর তা সাম্প্রতিক সময়ের এই বিতর্ক থেকে পরিষ্কার।