মারাদোনা নামের এক ছোটখাটো গড়নের আর্জেন্টাইন পা দেওয়ার আগে নেপলস ছিলো ইতালির সবচেয়ে অবহেলিত শহর, শহরের ক্লাব নাপোলি কোনোদিন ইতালির শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারেনি। তাঁদেরকে গোটা ইতালির মানুষজন ছোটলোকের মতো ট্রিট করতো।
মারাদোনা স্বচক্ষে এই দৃশ্য দেখে পণ নিয়েছিল নাপোলিকে ইতালির সেরা করার। জুভেন্টাস, ইন্টার মিলান, এসি মিলান , পার্মার মতো ক্লাবগুলো তখন তারকায় সজ্জিত। মালদিনি, বারেসি, ম্যাথাউস, প্লাতিনিদের পরাজিত করেই নাপোলিকে আশির দশকে দুইবার ইতালিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ ট্রফি সেরি এ জিতিয়েছিলেন।
যদিও নাপোলির ক্ষুদে জাদুকর ইতালি ছাড়ার পরে নাপোলি পরবর্তী তিন দশকেও আর সেরি এ জিততে পারেনি। এই ত্রিশ বছরের খরাও ঘোচে নেপোলস শহরে নতুন মারাদোনা আবির্ভাব হওয়ার পর।
ফুটবলের ছোটখাটো দেশ জর্জিয়া, ফুটবলারদের নাম এতো বিদঘুটে যে দাঁতের চোয়ালের ব্যায়াম হয়ে যায় একটা নাম উচ্চারণ করতে গিয়ে। ঐ দেশটাই নেপলস শহরকে উপহার দিল কাভিচা কাভারাত্সখেলিয়াকে।
নেপলসের বুড়ো বুড়িরা তিন দশক আগে ফুটবল ঈশ্বরকে মাঠ মাতাতে দেখেছিল। তাঁরা সেই ফুটবল ঈশ্বরের সাথে মিল খুঁজে পায় রোগা পাতলা চেহারার কাভারার। এই কাভারাও বল পায়ে নিয়ে ছুটে চলে, ফ্যবিনহোর মতো ওয়ার্ল্ড ক্লাস ডিএমও তাঁর সাথে পেরে উঠেনা, আবার ভিক্টর ওসিমহেনের গোলের ক্ষুধা মেটানোর কাজটাও কাভারাই করতো।
কাভারাডোনার আগমনের পরেই নেপলস তৃতীয়বারের মতো ইতালির সেরা হয়, নেপলস শহরে আরেকবার রূপকথা রচনা হয়। নেপলসের মানুষ তাদের নতুন মারাদোনাকে আপন করে নিয়েছিল।
নাপোলি আবার হোঁচট খেলো পরের সিজনে, ভিক্টর ওসিমহেনও ক্লাব ছাড়ল এক পর্যায়ে। কাভারাডোনা নিজের ছন্দ হারিয়ে ফেলে, আবার ছন্দে ফেরেন ইউরোতে। কোচ পরিবর্তন হল , লিগ মাস্টার কন্তে আসলেন। নেপলস অর্ধ সিজন পরে লিগ টেবিলের শীর্ষে।
কাভারা নিজের সেরাটাই দিল কিন্তু এবার নেপলস শহরের বাইরে ক্লাবগুলোকে আকর্ষণ করার জন্য। যা হওয়ার ছিল তাই হলো। প্যারিস থেকে প্রস্তাব এসেছে, কাভারা হয়তো শীঘ্রই প্যারিসের প্লেনে উঠে পড়বে।
ইতালির অবহেলিত , বঞ্চিত শহরটা আরও একবার এক জাদুকরের প্রস্থান দেখবে। ফরাসি মুলুকে হয়তো অর্থের ছড়াছড়ি থাকবে কিন্তু নেপলস শহরের মত কাভারাকে তাঁরা আপন করে নিতে পারবে তো?