সেমিফাইনালে লক্ষ্য খেতাব জয়! সমর্থকদের বার্তা দলের তরুণ ফুটবলারদের

সুপার কাপ ২০২৫ (Super Cup 2025) মোহনবাগান সুপার জায়ান্টসের (Mohun Bagan) দুরন্ত যাত্রা অব্যাহত। হাই ভোল্টেজ কোয়ার্টার ফাইনালে কেরালা ব্লাস্টার্সকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে সাহাল আবদুল…

Mohun Bagan in Super Cup 2025

সুপার কাপ ২০২৫ (Super Cup 2025) মোহনবাগান সুপার জায়ান্টসের (Mohun Bagan) দুরন্ত যাত্রা অব্যাহত। হাই ভোল্টেজ কোয়ার্টার ফাইনালে কেরালা ব্লাস্টার্সকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে সাহাল আবদুল সামাদ, আশিক কুরুনিয়ানদের তরুণ ব্রিগেড। সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ,প্রতিপক্ষ এফসি গোয়া। তবে এই প্রতিপক্ষকে নিয়ে মোটেই চিন্তিত নয় মোহনবাগান শিবির। দলের সকলের মুখেই আত্মবিশ্বাসের ঝলক। সবার লক্ষ্য একটাই — ট্রফি জয়।

শনিবারের গুরুত্বপূর্ণ জয়ের পরে রবিবার রিকভারি সেশনে মন দিলেন বাস্তব রায় ও তাঁর সহকারী কোচরা। ফুটবলারদের শারীরিক ও মানসিক চাপ কাটাতে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। হোটেলের সুইমিং পুলে সাঁতার কেটে শরীর ঠান্ডা করেন দীপেন্দু বিশ্বাস, ধীরাজ সিং, সালাউদ্দিনরা। পরে ছিল জিম সেশন। দলের প্রস্তুতি যে কতটা পরিকল্পনামাফিক চলছে, তা স্পষ্ট এই কর্মকাণ্ডেই।

   

দিল্লি ম্যাচের আগে নাইট শিবিরে আশার আলো! বড় ভবিষ্যদ্বাণী রিঙ্কুর

সন্ধ্যায় বাস্তব রায়, সহকারী কোচ ডেগি কার্ডোজো, গোলকিপার কোচ অভ্র মণ্ডল এবং বিদেশি তারকা নুনো রেইস গিয়েছিলেন ইন্টার কাশী বনাম মুম্বই সিটি এফসি ম্যাচ দেখতে। এই ম্যাচে উপস্থিত ছিলেন এফসি গোয়ার কোচ মানালো মার্কুয়েজও। সেমিফাইনালে তাঁর দলই মুখোমুখি হবে মোহনবাগানের সঙ্গে। আইএসএলের লিগ শিল্ডে মোহনবাগান ছিল প্রথম, আর এফসি গোয়া দ্বিতীয়। ফলে ম্যাচ যে টানটান উত্তেজনার হতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।

এবার সুপার কাপে গোয়ার অন্যতম ভরসা আর্মান্দো সাদিকু খেলছেন না। তবে দল হিসেবে তারা এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী। অন্যদিকে, মোহনবাগান দলে অভিজ্ঞতার সঙ্গে রয়েছে তরুণদের জ্বালা। সাহাল আবদুল সামাদ প্রথম ম্যাচেই গোল করে দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। কোয়ার্টার ফাইনালে সুহেল ভাট, সালাউদ্দিন, দীপেন্দু, ধীরাজ — প্রত্যেকেই নজর কেড়েছেন দারুণ পারফরম্যান্সে।

মোহনবাগান দলের মনোভাব স্পষ্ট ফুটে উঠল সাহালের কথায়। তিনি বলেন, “আমরা প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবি না। মাঠে নেমে জেতাই আমাদের লক্ষ্য। এই টুর্নামেন্টে আমরা ম্যাচ ধরে এগোচ্ছি।” একই সুর আশিক কুরুনিয়ানের গলাতেও। তিনি জানান, “সিজনের শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য সব ট্রফি জেতা। হয়ত কোনও ম্যাচে আমরা হেরে যাই, কিন্তু লক্ষ্য বদলায় না। সমর্থকদের বলব, আমাদের পাশে থাকুন। আমরা আরও ভালো খেলব।”

বাগান বনাম গোয়া ম্যাচে এই তিন দ্বৈরথ নির্ধারণ করবে সেমিফাইনালের ভাগ্য!

এছাড়া কোচ বাস্তব রায়ও যথেষ্ট মনোযোগী। তরুণ ফুটবলারদের দিয়ে বারবার বোঝাতে চাইছেন, প্রতিটি ম্যাচ যেন ফাইনাল। ছোটখাটো ভুলেও সুযোগ নিতে পারে প্রতিপক্ষ। তাই রিকভারি সেশন, ট্যাকটিকস, ভিডিও অ্যানালিসিস — সব দিকেই জোর দিচ্ছেন তিনি। বিদেশি ফুটবলারদের সঙ্গে ভারতীয়দের সংমিশ্রণও দলকে ভারসাম্য দিয়েছে।

সমর্থকদের আশাবাদী করে তুলেছে এই তরুণ ব্রিগেডের একাগ্রতা ও আগ্রাসন। মাঠে সাহসী খেলা, প্রতি মিনিটে লড়াইয়ের মানসিকতা এবং একে অপরকে সাহায্য করার মনোভাব — এই সব কিছুই মোহনবাগানকে এনে দিয়েছে নতুন শক্তি। এই ধারা ধরে রাখলে সুপার কাপ খেতাব জয় মোহনবাগানের পক্ষে অসম্ভব নয়।

সামনের ম্যাচে নজর থাকবে সাহাল, আশিক, দীপেন্দু, ধীরাজদের ওপর। গোয়ার বিরুদ্ধে লড়াই সহজ হবে না, তবে বর্তমান ফর্ম আর আত্মবিশ্বাসকে ভিত্তি করে মোহনবাগান যে নিজেদের শ্রেষ্ঠটা দিতে তৈরি, তা বোঝা যাচ্ছে প্রতিটি পদক্ষেপেই।

সমর্থকদের চোখ এখন সেই বহুচর্চিত সেমিফাইনালে। তারা চায়, মোহনবাগান ট্রফির আরও এক ধাপ কাছে যাক। মাঠে সাহস, ডাগআউটে পরিকল্পনা, গ্যালারিতে সমর্থন — এই ত্র্যহস্পর্শ যদি একসূত্রে বাঁধা যায়, তাহলে ‘মোহনবাগান মানেই চ্যাম্পিয়ন’ — এই কথা আবারও প্রমাণ হতে চলেছে।