ভারতীয় ফুটবল ইতিহাসের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের নাম মোহনবাগান (Mohun Bagan)। যা শুধুমাত্র ক্লাব নয়, বরং এক সাংস্কৃতিক আইকন। প্রতি মুহূর্তেই ক্লাবের সমর্থকরা যে তাদের প্রিয় দলের প্রতি ভক্তির যে গভীরতা প্রকাশ করেন, তা এক কথায় অনন্য। এবার তারা নতুন এক নজির গড়তে চলেছে, যা ফুটবল বিশ্বে রেকর্ড সৃষ্টি করতে পারে।
২৭ জানুয়ারি কলকাতার যুবভারতী স্টেডিয়ামে আইএসএলের ম্যাচে মুখোমুখি হবে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট বনাম বেঙ্গালুরু এফসি। সেদিনের ম্যাচকে সামনে রেখে ক্লাবের সমর্থকরা এক বিশাল হ্যান্ড-পেইন্টেড টিফো তৈরি করেছন। জানা গিয়েছে এই টিফোর মাপ হবে ৩৪০ ফুট লম্বা এবং ৭৫ ফুট চওড়া, যার মাধ্যমে তারা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হ্যান্ড-পেইন্টেড টিফোর রেকর্ড ভাঙার লক্ষ্য নিয়েছেন।
এই টিফোটি তৈরি করার জন্য, মোহনবাগান সমর্থকরা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কলকাতার অদূরে একটি মাঠে তৈরি করছেন এই বিশাল টিফো। এখানে, তারা রাত্রি জেগে কাজ করে এবং বাম্পি বাঁশের কাঠামো তৈরি করছেন, যা টিফোটিকে আবহাওয়া থেকে রক্ষা করবে। এর মাধ্যমে তারা শুধু ক্লাবের প্রতি তাদের ভালোবাসা দেখাচ্ছেই না, বরং এক নতুন ইতিহাস রচনার চেষ্টা করছে।
এই টিফো তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে, “ম্যারিনার্স বেস ক্যাম্প” নামক মোহনবাগানের এক সমর্থক দলের সদস্য জানান, “আমরা ২০ দিন ধরে পাঁচটি অংশে টিফোটি পেইন্ট করেছি। প্রতিটি অংশে ২০ জন করে কর্মী কাজ করেছেন।”
যে বিশাল টিফোটি তৈরি হচ্ছে, তা সম্পূর্ণরূপে হাতে আঁকা হবে এবং প্রায় ২৫,০০০ বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট হবে। এটি প্রায় ১৬,০০০ বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট সুইডিশ ফুটবল ক্লাব IFK নরকোপিং-এর সমর্থকদের তৈরি করা বিশ্বের বৃহত্তম হ্যান্ড-পেইন্টেড টিফোকে ছাড়িয়ে যাবে বলে তারা দাবি করছেন। এই কাজটি শুধু শিল্পগত দিক থেকে নয়, সমর্থকদের একযোগিতার এক বড় উদাহরণ। এর মধ্য দিয়ে মোহনবাগানের হাজারো সমর্থক তাদের ভালোবাসা ও একত্রিত হওয়ার শক্তি প্রমাণ করতে চান।
𝐃𝐫𝐞𝐚𝐦 𝐁𝐢𝐠. 𝐏𝐚𝐢𝐧𝐭 𝐁𝐢𝐠𝐠𝐞𝐫. 🟢🔴
This tifo is not just about size anymore, but the legacy we’re leaving behind. 💥⚡
𝗝𝗼𝗶𝗻 𝘂𝘀 𝗶𝗻 𝘂𝗻𝗳𝘂𝗿𝗹𝗶𝗻𝗴 𝗪𝗢𝗥𝗟𝗗’𝗦 𝗟𝗔𝗥𝗚𝗘𝗦𝗧 𝗛𝗔𝗡𝗗-𝗣𝗔𝗜𝗡𝗧𝗘𝗗 𝗧𝗜𝗙𝗢 💪🏻
Let’s create History together! 💚❤️… pic.twitter.com/KByN5lTYVj— Mariners’ Base Camp – Ultras Mohun Bagan (@MbcOfficial) January 22, 2025
এই প্রকল্পে অংশ নেওয়ার জন্য দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে থেকে সমর্থকরা আসছেন। ভিন রাজ্য থেকে আগত এক সমর্থক জানিয়েছেন, “এখানে আসতে ১,০০০ কিলোমিটার ট্রেন যাত্রা করেছি, বেশিরভাগ সময় দাঁড়িয়ে যাত্রা করেছি। তবে এটি আমার জন্য অনেক বড় অভিজ্ঞতা।”
আরেক বাগান সমর্থক, তন্ময় চক্রবর্তী যিনি প্রতিদিন ৬০ কিলোমিটার দূর থেকে এসে রং মিশানোর কাজ করেছেন। তিনি বলেন, “এমন একটি বড় প্রকল্পের অংশ হতে পারাটা আমার জন্য এক অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা। এর মাধ্যমে আমরা শুধু ফুটবল প্রীতি নয়, আমাদের একতা এবং ভালোবাসাও প্রকাশ করতে পারি।”
মোহনবাগান সমর্থকদের এই উদ্যোগ শুধুমাত্র খেলাধুলার ঘটনা নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক চিত্রকে তুলে ধরা। এই বিশাল টিফোর মাধ্যমে তারা বিশ্ব ফুটবলকে দেখাতে চান যে, মোহনবাগান সমর্থকরা সত্যিই অনন্য এবং অপ্রতিরোধ্য।