কলকাতা ডার্বি (Kolkata Derby) মানেই উত্তেজনা, প্রতিযোগিতা এবং আকর্ষণ। বড়দের মাঠে হোক বা ছোটদের, মোহনবাগান (Mohun Bagan SG) ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) মহামেডান (Mohammedan SC) এই তিন ক্লাবের উপর নজর থাকে সকলের। তবে, এবারের গল্পটি একটু ভিন্ন। কলকাতার ফুটবল ইতিহাসে তরুণ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে আসা মোহনবাগান অনূর্ধ্ব-১৩ সাব-জুনিয়র লিগে বুধবার ইতিহাস রচনা করেছে। বাঁশবেড়িয়া কিশোর সঙ্ঘের মাঠে, সবুজ-মেরুনের তরুণ ফুটবলাররা মহামেডান স্পোর্টিংকে ১১-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে।
এই জয় মোহনবাগানের যুব দলের উত্থানের প্রতীক। সবুজ-মেরুন শিবিরের বয়সভিত্তিক দলগুলো সেভাবে খ্যাতি লাভ না করলেও, এই মরসুমে তাদের খেলা দেখিয়ে দেয় তারা কতটা শক্তিশালী। বিশেষ করে, একের পর এক জয় তাদের আত্মবিশ্বাসে নতুন মাত্রা যোগ করছে। প্রথম ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলকে হারানোর পর, এবার মহামেডান স্পোর্টিংকে ধ্বংস করে তাদের শক্তির জানান দিল বাগান ব্রিগেড।
ম্যাচের শুরু থেকেই দাপট দেখিয়ে খেলতে শুরু করে মোহনবাগান। প্রথম মিনিটেই গোল করে তারা আগ্রাসী মেজাজে মাঠে নামার সংকেত দেয়। নীরব রায় ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে প্রথম গোলটি করে দলকে এগিয়ে দেন। এরপর ৯ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে তিনি দলের লিড আরও বাড়িয়ে দেন। প্রথমার্ধেই মোহনবাগান মহমেডানকে ৬-০ গোলে পিছনে ফেলে দেয়। রাজ মুদি দুই গোল করার পাশাপাশি, কার্তিক হেমব্রম ও সিদু সোরেন একটি করে গোল করে নিশ্চিত করে দেন শ্বাসরুদ্ধকর জয়।
দ্বিতীয়ার্ধে, মোহনবাগান আরও পাঁচটি গোল করে তাদের জয় আরও বিশাল করে তোলে। ৩৫ থেকে ৪৪ মিনিটের মধ্যে তিনটি গোল আসে—সাগ্নিক কুন্ডু, সৈয়দ বাশির আনোয়ার এবং অনুব্রত বাউল দাস প্রতিটি গোল করেন। এরপর অর্চিষ্মান দাস ও জিয়ন হাঁসদা দ্বিতীয়ার্ধে গোল করে নিজেদের দলের পক্ষে ১১ গোলের বিশাল ব্যবধান নিশ্চিত করেন।
প্রথম দুটি ম্যাচে মোহনবাগান ৬ পয়েন্ট পেয়ে লিগের শীর্ষস্থানে রয়েছে। তাদের গোল পার্থক্য এখন ১২, যা এই বয়সভিত্তিক লিগে দারুণ গুরুত্ব পাবে। প্রতিপক্ষ দুই প্রধানের বিরুদ্ধে দাপট দেখানোর পর, তাদের এই জয় আরও আলোচিত হয়ে উঠেছে। প্রথম দুটি ম্যাচে মোহনবাগান নিজেদের শক্তির পরিচয় দিয়েছে, বিশেষ করে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে একমাত্র সাগ্নিক কুন্ডুর গোলে জয় নিশ্চিত করা পর, এখন মহামেডানকে উড়িয়ে দিয়ে দলটি আরও শীর্ষে অবস্থান করছে।
View this post on Instagram
এর আগে সিনিয়র দলের ডার্বিতেও মোহনবাগান দাপট দেখিয়েছে। আইএসএলে ইস্টবেঙ্গল ও মহমেডানকে একের পর এক হারিয়েছে তারা। এই লিগে এখন শুধুমাত্র যুব ফুটবলাররা নয়, সিনিয়র দলের ফুটবলাররাও মোহনবাগানের শক্তি বুঝে গেছে। মোহনবাগানের একাধিক ডার্বি জয় তাদের ফুটবলের শক্তি এবং গভীরতা প্রমাণ করে দিয়েছে।
এবার শুধু অপেক্ষা, কখন এই তরুণ ফুটবলাররা সিনিয়র পর্যায়ে নিজেদের প্রতিভা ও দক্ষতা প্রকাশ করবে। তবে, এখনই তারা পরিস্কারভাবে জানিয়েছে, কলকাতার ফুটবল দৃশ্য বদলে দিতে তারা প্রস্তুত।