Sports desk: ‘অনভিজ্ঞ’ দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে নিজেদের চিন্তা সিরিজ শুরুর আগেই মতামত প্রসঙ্গে রেখেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার তথা বিশ্ব ক্রিকেটের কিংবদন্তী পেস বোলার অ্যানাল ডোনাল্ড এবং স্বদেশীয় মাখায়া এনতিনি। হলও সত্যি। মহম্মদ সামি নিলেন ৫ উইকেট দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসে। সঙ্গে বুমরাহের ২,শার্দূল ঠাকুর ২ এবং মহম্মদ সিরাজের ১ টি উইকেট। ১৯৭ রানে অল আউট প্রোটিয়ারা সেঞ্চুরিয়নের প্রথম টেস্টে, নিজেদের প্রথম ইনিংসে।
ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬ রানে ১ উইকেট, রানের লিড দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১৪৬ রানের। মায়াঙ্ক অগ্রবাল ৪ রানে আউট, মার্কো জ্যানসনের বলে ক্যাচ উইকেট রক্ষক কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে।
পিচে ছিল ঘাস,বাড়তি বাউন্সারে সম্ভাবনা ছিল। দ্বিতীয় দিনের বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচ টেস্টে। তৃতীয় দিন আবহাওয়ার এই সুবিধা ভরপেট গোগ্রাসে চিবিয়ে খেলেন ভারতীয় পেস বোলার মহম্মদ সামি। নিলেন ৫ উইকেট প্রোটিয়াদের মার্করাম,পিটারসন,বাভুমা,মুল্ডার,রাবাদা।
প্রথম টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে টেম্বা বাভুমার ১০৩ বলে ৫২ রান এবং কাগিসো রাবাদার ৪৫ বলে ২৫ রান ভারতীয় বোলিং লাইন আপের বিরুদ্ধে প্রাপ্তি।
সেঞ্চুরিয়নে ‘বক্সিং ডে টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার তরুণ ডানহাতি পেস বোলার লুঙ্গি এনগিদির বিষাক্ত ডেলিভারির ছোবলে ভারত প্রথম ইনিংসে ১০ উইকেটে ৩২৭ রানে গুটিয়ে যায়। এনগিদি শিকার করে ৬ উইকেট, টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ভারতের কাছে চ্যালেঞ্জিং প্রোটিয়া বোলিং লাইন আপ। সুপারস্পোর্টস পার্কে টসে জিতে ভারত ব্যাটিং করতে নামে, যা এই পিচের ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত। উইকেটে ঘাস রয়েছে আবার ভেজা অর্থাৎ স্পঞ্জিও রয়েছে। পিচে ঘাস থাকায় বাড়তি বাউন্স পাওয়ার একটা প্রবল সম্ভাবনা থেকেই ভারতের ব্যাটিং’র সিদ্ধান্ত।
টেস্টের প্রথম দিন লুঙ্গি এনগিদির শিকার তিন উইকেট, দ্বিতীয় দিন খেলা বৃষ্টি বিঘ্নিত হওয়ার জন্য ভেস্তে যায় এবং তৃতীয় দিন রোদের ঝিলিকে লুঙ্গি এনগিদির চওড়া হাসি আরও তিন উইকেট প্রাপ্তিতে ফুটে ওঠে, মোট ৬ উইকেট ৭১ রানে ডানহাতি পেসার এনগিদির, ৫ মেডেন, ২৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে। মায়াঙ্ক অগ্রবাল, চেতেশ্বর পূজারা, বিরাট কোহলি, অজিঙ্কা রাহানে,ঋষভ পহ্ন,মহম্মদ সামি মোট ৬ উইকেট প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরিয়নে প্রথম টেস্টে লুঙ্গি এনগিদির।
লুঙ্গি এনগিদির ধসে, ভারত ৩২৭ রানে প্রথম ইনিংসে অল আউট হলেও পিচ এবং আবহাওয়া কন্ডিশনে বুমেরাং স্কোরবোর্ডে রানের গতিপ্রকৃতি। কেননা অনভিজ্ঞ প্রোটিয়া ব্যাটিং লাইন আপ এবার সামি,বুমরাহ এবং সিরাজ সঙ্গে শার্দূললের মুখোমুখি হয়ে নাজেহাল, বেসামাল।
অভিজ্ঞ প্রাক্তন প্রোটিয়া জোরে বোলারদের ভবিষ্যৎ বাণী এবং সুপারস্পোর্টস পার্কের ঘাসে ঢাকা পিচ ও আবহাওয়া ফ্যাক্টর থেকে ভারতীয় বোলারেরা কতটা বেনিফিট (উইকেট) তুলতে পারে সেটাই পরীক্ষার মুখে ছিল। কারণ সময় যত গড়াবে এই পিচ তত শক্ত হবে এবং বাড়তি বাউন্স ছলকে ছলকে উঠতে পারে যদি বোলাররা বোলিং ডেলিভারির শেষ মুহুর্তে টপ থেকে ঘাড়, কাঁধ এবং কোমড়কে একই পয়েন্টে এনে ফুল লেহ্ন ডেলিভারি বিপক্ষের বিরুদ্ধে শানাতে পারে, তাহলেই অনভিজ্ঞ দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিং লাইন আপে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠতে পারে। হলও তাইই।
‘বিরাট’ ভারত ১ উইকেটে হারিয়ে ১৬ রান, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১৪৬ রানে এগিয়ে, নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে। ক্রিজে প্রথম টেস্টে শতরানের মালিক ‘মিস্টার সেঞ্চুরিয়ন’ কেএল রাহুল ৫ এবং ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপে প্রথম ইনিংসে চেতেশ্বর পূজারার লুঙ্গি এনগিদির বলে রানের খাতা না খুলেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার শিক্ষা থেকে হেডকোচ রাহুল দ্রাবিড় ‘মন্ত্রে’ শার্দূল ঠাকুরকে ফাস্ট ডাউনে তুলে আনা ‘মাস্টারস্ট্রোর্ক’ হতে পারে যদি শার্দূল দ্বিতীয় ইনিংসে প্রোটিয়া বোলিং লাইনের বিরুদ্ধে কেরামতি দেখিয়ে ক্লিক করে গেলে।
শার্দূল ঠাকুরকে ওপড়ের ব্যাটিং ডাউনে তুলে আনার কারণ, লোহা গরম আছে, গরম লোহায় হাতুড়ি বাড়িতে ‘মন পসন্দ’ আকার দেওয়া যায়, এক্ষেত্রেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে কেরামতি দেখিয়ে লুঙ্গি এনিগিদি, রাবাদাদের বোলিং’এ ছন্দপতন ঘটিয়ে ক্লিক করে গেলে।।