আইপিএল ২০২৫ (IPL 2025) লিগ পর্বে কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR) সাতটি ম্যাচ খেলে ফেলেছে। অর্ধেক পথ পেরিয়ে তাদের ঝুলিতে রয়েছে ৬ পয়েন্ট, যা প্লে-অফের দৌড়ে তাদের অবস্থানকে কিছুটা নড়বড়ে করে তুলেছে। গতকাল, ১৫ এপ্রিল পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে মাত্র ১১২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৬ রানে হেরে যায় কেকেআর। এই লজ্জাজনক হারের পিছনে রয়েছে ব্যাটিংয়ের ভয়াবহ ভরাডুবি। ফলে, কেকেআরের প্লে-অফে যাওয়ার সমীকরণ এখন কতটা জটিল, তা নিয়ে চর্চা তুঙ্গে।
চেন্নাই সুপার কিংসকে (সিএসকে) তাদের মাঠে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠার সুযোগ ছিল কেকেআরের। কিন্তু পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে এই হার তাদের পরিকল্পনায় ধাক্কা দিয়েছে। বর্তমানে কেকেআর টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। আগামী ম্যাচগুলোর দিকে তাকালে, কেকেআরের সামনে রয়েছে চারটি হোম ম্যাচ এবং তিনটি অ্যাওয়ে ম্যাচ। প্লে-অফে যেতে হলে তাদের অন্তত চারটি ম্যাচ জিততেই হবে, পাঁচটি জয় নিশ্চিন্ত পথ তৈরি করবে।
কেকেআরের আগামী ম্যাচগুলো হল: ২১ এপ্রিল ইডেন গার্ডেন্সে গুজরাত টাইটান্স, ২৬ এপ্রিল ইডেনে পাঞ্জাব কিংস, ২৯ এপ্রিল দিল্লিতে দিল্লি ক্যাপিটালস, ৪ মে ইডেনে রাজস্থান রয়্যালস, ৭ মে ইডেনে সিএসকে, ১০ মে হায়দরাবাদে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এবং ১৭ মে বেঙ্গালুরুতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। এই ম্যাচগুলোর মধ্যে হোম ম্যাচগুলো কেকেআরের জন্য সুবর্ণ সুযোগ।
কিন্তু একটি বিষয় ভক্তদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। কেকেআর যে চারটি ম্যাচে হেরেছে, সেগুলোতেই দলে ছিলেন না মঈন আলি। অথচ, তিনটি জয়ী ম্যাচে মঈন খেলেছেন। পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে গতকালের ম্যাচে মঈনের পরিবর্তে দলে আনা হয় আনরিখ নর্টজেকে। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মঈন এই মরসুমে রাজস্থানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ২৩ রানে ২ উইকেট নেন এবং ৫ রান করেন। সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে তিনি ব্যাট-বল হাতে সুযোগ পাননি। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে ২০ রানে ১ উইকেট নেন। তার এই ধারাবাহিক পারফরম্যান্স কেকেআরের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
Moments they will never forget 🤩
🎥 All the 𝙍𝙖𝙬 𝙀𝙢𝙤𝙩𝙞𝙤𝙣𝙨 from a thrilling ending and memorable victory as #PBKS created history in front of a buzzing home crowd ❤🥳#TATAIPL | #PBKSvKKR | @PunjabKingsIPL pic.twitter.com/mndhJxEt5X
— IndianPremierLeague (@IPL) April 16, 2025
ম্যাচ-পরবর্তী সাংবাদিক সম্মেলনে অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে বলেন, “মুল্লানপুরের উইকেট দেখে আমরা সঠিক কম্বিনেশন বেছে নিতে চেয়েছিলাম। মঈনকে বসানোর সিদ্ধান্ত কঠিন ছিল। তিনি যে ম্যাচগুলোতে খেলেছেন, দারুণ পারফর্ম করেছেন। আমার মনে হয়েছিল, এই উইকেটে তিন পেসার এবং দুই স্পিনার খেলানোই সঠিক হবে। বোলাররা তাদের কাজ করেছে, কিন্তু ব্যাটিং আমাদের জেতার মতো লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি।” রাহানের এই মন্তব্য থেকে মঈনকে বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে তার অস্বস্তি স্পষ্ট।
প্লে-অফের সমীকরণের দিকে তাকালে, কেকেআরের জন্য হোম ম্যাচগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গুজরাত, পাঞ্জাব, রাজস্থান এবং চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে জয় তাদের পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে রাখবে। তবে, অ্যাওয়ে ম্যাচে দিল্লি, হায়দরাবাদ এবং বেঙ্গালুরুর মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে নেওয়া চ্যালেঞ্জিং হবে। মঈন আলির মতো অলরাউন্ডারের উপস্থিতি দলের ভারসাম্য বজায় রাখে, এবং তাকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন হতে পারে।
কেকেআরের ব্যাটিং ইউনিটের উপর এখন চাপ বাড়ছে। অজিঙ্কিয়া রাহানে, কুইন্টন ডি কক, রিঙ্কু সিংয়ের মতো ব্যাটসম্যানদের ধারাবাহিকতা দেখাতে হবে। একই সঙ্গে, সুনীল নারিন, বরুণ চক্রবর্তী এবং হর্ষিত রানার বোলিং দলকে ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারে। প্লে-অফের পথে কেকেআরের জন্য প্রতিটি ম্যাচ এখন ফাইনালের মতো। রাহানের নেতৃত্বে কেকেআর কি এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারবে? ভক্তরা অপেক্ষায় রয়েছেন।