মিলন পণ্ডা, কাঁথি: আধুনিক যুগে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার যুব সমাজের জীবনে একটি বড় প্রভাব ফেলেছে। তবে এই প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার যুবক ও নাবালকদের মধ্যে আসক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এসেছেন কাঁথি পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্দীপ জানা। তিনি ওয়ার্ডের যুবক ও শিশুদের মোবাইল থেকে দূরে রেখে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী করতে একটি বিশেষ উদ্যোগ (Promotes Sports) গ্রহণ করেছেন। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি ওয়ার্ডের একাধিক ক্লাব এবং পড়ুয়াদের হাতে ক্রিকেট ব্যাট, বল এবং উইকেট তুলে দিয়েছেন। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ওয়ার্ডের বয়োজ্যেষ্ঠ থেকে গুণীজনরা।
কাঁথি পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডে এক সময় খেলাধুলার প্রতি যুবকদের আগ্রহ ছিল উল্লেখযোগ্য। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল ও ইন্টারনেটের প্রতি আসক্তির কারণে মাঠে তাদের উপস্থিতি কমে গেছে। এই পরিস্থিতি লক্ষ্য করে কাউন্সিলর সন্দীপ জানা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যুবকদের আবার মাঠমুখী করার। তিনি বলেন, “কাঁথি পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় এবং বিশেষ করে ২১ নম্বর ওয়ার্ডে খেলাধুলার একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা প্রায় বিলুপ্ত। আমি লক্ষ্য করেছি, আমার ওয়ার্ডের যুবক ও নাবালকরা মোবাইলের প্রতি অতিরিক্ত আসক্ত হয়ে পড়েছে। তাই তাদের খেলার মাঠে ফিরিয়ে আনতে আমি ফুটবল, ক্রিকেট ব্যাট, ব্যাডমিন্টনের মতো ক্রীড়া সামগ্রী প্রদান করছি। এর ফলে তারা পড়াশোনার পাশাপাশি শরীরচর্চা করবে এবং মোবাইলের প্রতি আসক্তি অনেকটাই কমবে।”
সন্দীপ জানার এই উদ্যোগ শুধুমাত্র এই বছরের নয়। প্রতি বছরই তিনি ওয়ার্ডের যুবকদের জন্য ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করে থাকেন। এছাড়াও, তিনি ওয়ার্ডের উন্নয়নে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ২০২২ সালে কাঁথি পুরভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে জয়ী হয়ে প্রথমবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন সন্দীপ। তারপর থেকে তিনি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জন্য নিরলস কাজ করে চলেছেন। খেলাধুলার পাশাপাশি, তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি ফি, বই ও খাতা কেনার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এমনকি, ওয়ার্ডে কোনো মেয়ের বিয়ের সময় তিনি নিজের পকেট থেকে ৫,০০০ টাকা করে সহায়তা দেন। হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের শেষকৃত্যের জন্যও তিনি আর্থিক সাহায্য করেন।
ওয়ার্ডের এক যুবক জানান, “কাউন্সিলর সন্দীপ জানা শুধু আজকেই নয়, প্রতি বছর আমাদের ব্যাট, বল ও ফুটবল দিয়ে থাকেন। তিনি কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকে ওয়ার্ডে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আমরা কোনো সমস্যায় পড়লে ফোন করলেই তিনি আমাদের পাশে এসে দাঁড়ান।” এই ধরনের উদ্যোগ ও সহযোগিতার কারণে ওয়ার্ডের বাসিন্দারা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।
সন্দীপ জানার এই উদ্যোগ শুধু যুবকদের খেলাধুলার প্রতি উৎসাহিত করছে না, বরং সমাজে একটি ইতিবাচক বার্তাও দিচ্ছে। মোবাইল ও ইন্টারনেটের অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে যুব সমাজকে দূরে রাখতে এবং তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য এই ধরনের পদক্ষেপ অনুকরণীয়। ওয়ার্ডের বাসিন্দারা আশা করছেন, সন্দীপ জানার এই প্রচেষ্টা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে এবং আরও বেশি সংখ্যক যুবক মাঠে ফিরে আসবে।