দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা পেসার কাগিসো রাবাদা (Kagiso Rabada)আইপিএল-এ এর আগে দিল্লি ক্যাপিটালস এবং পাঞ্জাব কিংসের হয়ে খেলেছেন। কিন্তু তাঁর নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি গুজরাট টাইটান্সে এসে তিনি একটি আলাদা আরাম এবং স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করছেন। মাত্র ১০.৭৫ কোটি টাকায় গুজরাট টাইটান্সে যোগ দেওয়া রাবাদা ইতিমধ্যেই দলের প্রধান কোচ আশিস নেহরার প্রতি ভালোবাসা জন্মাতে শুরু করেছেন। তিনি বলেন, এই দলে খেলোয়াড়দের অনেক স্বাধীনতা দেওয়া হয়, যা তাঁর কাছে বিশেষভাবে পছন্দের।
পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাবাদা বলেন, “এখানে পরিবেশ খুবই শান্ত এবং আরামদায়ক। খেলোয়াড়দের অনেক স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, তবে তার সঙ্গে একটা কাঠামোও রয়েছে। আমি এখানে সবকিছু যেভাবে চলছে, তাতে খুব খুশি।” গুজরাট টাইটান্সে এসে রাবাদা নতুন বলে মোহাম্মদ সিরাজের সঙ্গে দায়িত্ব ভাগ করে নেবেন। এই জুটি আইপিএল ২০২৫-এ গুজরাটের পেস আক্রমণের মূল শক্তি হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।
রাবাদার কথায় আশিস নেহরার কোচিং শৈলীর প্রতি তাঁর প্রশংসা স্পষ্ট। নেহরা, যিনি গুজরাট টাইটান্সকে ২০২২ সালে শিরোপা জিতিয়েছিলেন, তাঁর শান্ত এবং খেলোয়াড়-বান্ধব পদ্ধতির জন্য পরিচিত। রাবাদা এই পরিবেশে নিজেকে দ্রুত মানিয়ে নিয়েছেন। তিনি যে স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করেছেন, তা গুজরাটের টিম ম্যানেজমেন্টের একটি বৈশিষ্ট্য, যা খেলোয়াড়দের সেরাটা বের করে আনতে সাহায্য করে। এই কাঠামোবদ্ধ স্বাধীনতা রাবাদার মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের জন্য আদর্শ, যারা মাঠে নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পছন্দ করেন।
রাবাদা এর আগে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে ২০২০ সালে আইপিএল ফাইনালে পৌঁছেছিলেন এবং পাঞ্জাব কিংসের হয়ে তাঁর গতি ও নিয়ন্ত্রণ দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছিলেন। তবে গুজরাট টাইটান্সে এসে তিনি একটি নতুন শুরুর আভাস পাচ্ছেন। ১০.৭৫ কোটি টাকার এই চুক্তি তাঁর প্রতি দলের ভরসার প্রতিফলন। বিশ্বের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার হিসেবে পরিচিত রাবাদা গুজরাটের বোলিং আক্রমণকে আরও শক্তিশালী করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
গুজরাট টাইটান্সের নতুন বলের জুটি রাবাদা এবং মোহাম্মদ সিরাজ আইপিএল-এর ব্যাটিং লাইনআপগুলোর জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে। রাবাদার গতি এবং সিরাজের সুইংয়ের সমন্বয় প্রতিপক্ষদের পাওয়ারপ্লেতে চাপে ফেলতে পারে। এছাড়া দলের বাকি স্কোয়াডে অভিজ্ঞ এবং তরুণ প্রতিভার মিশ্রণ রয়েছে, যা গুজরাটকে আবারও শিরোপার দৌড়ে শক্তিশালী প্রতিযোগী করে তুলতে পারে।
গুজরাট টাইটান্সের সমর্থকরা রাবাদার এই মন্তব্যে উৎফুল্ল। তাঁরা আশা করছেন যে, রাবাদার অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা দলকে আইপিএল ২০২৫-এ সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছে দেবে। বাঙালি ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যেও এই খবর নিয়ে উৎসাহ রয়েছে, কারণ অনেকে রাবাদার গতি এবং আগ্রাসী বোলিংয়ের ভক্ত। আইপিএল-এ কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রতি তাদের ভালোবাসা থাকলেও, গুজরাটের এই নতুন গতিশীলতা তাদের মুগ্ধ করেছে।
রাবাদার এই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া গুজরাট টাইটান্সের প্রস্তুতির একটি ইঙ্গিত দেয়। আশিস নেহরার নেতৃত্বে দলটি ইতিমধ্যেই একটি শিরোপা জিতেছে এবং এখনও তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা অটুট। রাবাদার মতো একজন বিশ্বমানের খেলোয়াড়ের সংযোজন দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। তিনি যে স্বাধীনতা ও কাঠামোর কথা বলেছেন, তা গুজরাটের টিম কালচারের একটি বড় দিক। এটি খেলোয়াড়দের নিজেদের সেরাটা দিতে উৎসাহিত করে এবং মাঠে ফলাফল দেখায়।
রাবাদা নিজেও গুজরাটের হয়ে বড় কিছু করতে মুখিয়ে আছেন। তিনি বলেন, “আমি এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। দলের পরিবেশ আমাকে আমার খেলায় আরও মনোযোগী হতে সাহায্য করছে।” তাঁর লক্ষ্য হবে নিয়মিত উইকেট তুলে গুজরাটকে জয়ের পথে রাখা। আইপিএল ২০২৫-এ তাঁর পারফরম্যান্স শুধু দলের জন্যই নয়, তাঁর ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হবে।
কাগিসো রাবাদার এই মন্তব্য গুজরাট টাইটান্সের শক্তিশালী প্রস্তুতি এবং ইতিবাচক দলীয় পরিবেশের ছবি তুলে ধরে। আইপিএল ২০২৫-এ তাঁর এবং সিরাজের জুটি কীভাবে প্রতিপক্ষদের চ্যালেঞ্জ জানায়, তা দেখার জন্য সমর্থকরা মুখিয়ে আছেন। গুজরাটের এই নতুন অধ্যায় ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য একটি রোমাঞ্চকর অপেক্ষার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।