দক্ষিণ আফ্রিকার গতি তারকা কাগিসো রাবাদা (Kagiso Rabada) সোমবার বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে এক অনন্য কীর্তি গড়লেন। মাত্র ১১,৮১৭ ডেলিভারি বল করে ৩০০ টেস্ট উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করে রাবাদা ইতিহাসের দ্রুততম বোলার হিসেবে নিজের নাম লেখালেন। এই মাইলফলক স্পর্শ করতে তিনি ছাড়িয়ে গেলেন ওয়াকার ইউনিস (১২,৬০২), ডেল স্টেইন (১২,৬০৫), অ্যালান ডোনাল্ড (১৩,৬৭২), এবং মালকম মার্শাল (১৩,৭২৮) এর মতো কিংবদন্তি বোলারদের।
বাংলাদেশ টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের সামনে তারা একেবারে নতিস্বীকার করে। উইয়ান মুল্ডার শুরুর দিকে সুইং এবং অতিরিক্ত বাউন্স দিয়ে দ্রুত উইকেট নেন। এরপর রাবাদা বল হাতে নেন এবং উইকেট নেয়ার ধারাবাহিকতায় যোগ দেন। রাবাদা মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসকে আউট করে বাংলাদেশের দুরবস্থার আরও অবনতি ঘটান। রাবাদার এই অসাধারণ বোলিং স্পেলে তিনি দ্রুততম ৩০০ টেস্ট উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন।
৩০০ উইকেট শিকারে দ্রুততম বোলারদের তালিকা:
- ১১,৮১৭ বল – কাগিসো রাবাদা (দক্ষিণ আফ্রিকা)
- ১২,৬০২ বল – ওয়াকার ইউনিস (পাকিস্তান)
- ১২,৬০৫ বল – ডেল স্টেইন (দক্ষিণ আফ্রিকা)
- ১৩,৬৭২ বল – অ্যালান ডোনাল্ড (দক্ষিণ আফ্রিকা)
- ১৩,৭২৮ বল – মালকম মার্শাল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
রাবাদা ৭৮৫ বল কম খরচ করে ওয়াকার ইউনিসের রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েন। এর আগে এই কীর্তি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার আরেক কিংবদন্তি ডেল স্টেইনের, যিনি ১২,৬০৫ বল করে ৩০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন। কিন্তু রাবাদার অসাধারণ পারফরম্যান্সে তিনি এখন দ্বিতীয় স্থানে চলে গেছেন।
এই কীর্তি গড়ার দিন রাবাদা ১১ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন, যেখানে তার ইকোনমি রেট ছিল ২.৪০। রাবাদার অসাধারণ বোলিং পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৬ রানে গুটিয়ে যায়। রাবাদা, মুল্ডার এবং কেশভ মহারাজ প্রত্যেকে তিনটি করে উইকেট নেন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান তাইজুল ইসলাম মহারাজের ফাঁদে পড়ে আউট হন।
রাবাদার এই কীর্তি তাকে টেস্ট ক্রিকেটে ইতিহাসের পাতায় অন্যতম সেরা বোলার হিসেবে স্থান দিয়েছে। তার গতি, লাইন এবং লেন্থের ওপর নিখুঁত নিয়ন্ত্রণ তাকে বর্তমান যুগের অন্যতম সেরা পেসার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। মাত্র ২৯ বছর বয়সে এমন একটি রেকর্ড গড়া, যা কিংবদন্তি বোলারদের ছাড়িয়ে যায়, তা অবশ্যই তার বোলিং দক্ষতার প্রমাণ বহন করে।
দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বাংলাদেশের এই ম্যাচটি যদিও টসের পর বাংলাদেশ কিছুটা সুবিধা পেয়েছিল, কিন্তু রাবাদা এবং তার দলের বোলিং আক্রমণ তাদের সেই সুবিধা হারিয়ে যেতে বাধ্য করে। মুল্ডারের সুইং এবং রাবাদার গতি ও নিয়ন্ত্রণ মিলে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের দ্রুত ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। বিশেষ করে মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশের ইনিংস একেবারে ধসে পড়ে।
রাবাদার এই কীর্তি টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে আরও এক নতুন অধ্যায় যোগ করেছে এবং ভবিষ্যতের জন্য তাকে আরও শক্তিশালী বোলার হিসেবে তুলে ধরেছে।